আপনি কি অফিসে কাজের মাঝে খেতে যাওয়ার সময় পান না? সকালে বাড়ি থেকে খেয়ে বেরিয়ে আবার হয়তো বিকেল ৪টের সময় খেলেন। অথবা ঘুম থেকে উঠতে দেরি হয়ে গেল বলে মুখে কিছু না দিয়েই অফিস চলে গেলেন। তারপর অফিসে গিয়েও এটা-ওটা কাজের মাঝে খাওয়ার সময় পেলেন সেই দুপুর ১২টায়। খিদেয় তখন পেট চুঁই চুঁই। গবেষকরা জানাচ্ছেন, খেতে দেরি করা আমাদের শরীরকে নির্দিষ্ট ঘড়ি মেনে কাজ করতে বাধা দেয়। যার ফলে ডায়াবেটিস, ট্রাইগ্লিসারাইড বেড়ে যাওয়ার মতো সমস্যা জেঁকে বসে।
আমাদের শরীর ২৪ ঘণ্টার ঘ়ড়ি মেনে কাজ করে। যেই ঘড়িকে নিয়ন্ত্রণ করে মাস্টার ক্লক বা আমাদের মস্তিষ্ক। আমাদের শরীরের বিভিন্ন অঙ্গে রয়েছে পেরিফেরাল ক্লক। যা সম্মিলিত ভাবে কাজ করে। আমাদের খাওয়া-দাওয়া, ঘুম, স্নান করা, কাজ করার সঙ্গে তাল রেখেই চলে শরীরের ঘড়িগুলো। যে কারণ অফিসে শিফটে কাজ করলে বা জেট ল্যাগ হলে দিন-রাতের হিসেবের গন্ডগোলের কারণে শরীরের কার্যকারিতা ব্যাহত হয়।
গবেষকরা জানাচ্ছেন, যদি আমরা ৫ ঘণ্টা দেরি করি খেতে তা হলে আমাদের শরীরের ব্লাড সুগার রিদম নষ্ট হয়ে যায়। তাই রক্তে শর্করার সঠিক মাত্রা বজায় রাখতে শরীরের ঘড়ির সঙ্গে খাওয়ার সময় মেলা প্রয়োজন। এই গবেষণার মুখ্য গবেষক জোনাথন জনস্টন বলেন, দেখা গিয়েছে যাদের জেট ল্যাগ হয় বা শিফটে কাজ করেন তাদের শরীরের পরিপাক ক্রিয়ায় ব্যাঘাত ঘটে। ফলে বিভিন্ন রকম শারীরিক সমস্যা দেখা দেয়। ওষুধ না খেয়ে শুধু মাত্র ব্রেকফাস্ট, লাঞ্চ বা ডিনারের সময় বদলে ফেলে এই কার্ডিওভাসকুলার বা ওবেসিটির মতো অনেক সমস্যাই কমিয়ে ফেলা যায়।
আরও পড়ুন: খাবার কী ভাবে নিয়ন্ত্রণ করে আমাদের মুড?
এই গবেষণার জন্য অংশগ্রহণকারীদের নিয়ে ১৩ দিন ধরে একটি পরীক্ষা করা হয়। তাদের দিনে তিন বার খেতে দেওয়া হয়। প্রতিটা মিলের মধ্যে সময়ের ব্যবধান ছিল ৫ ঘণ্টা। ঘুম থেকে ওঠার ৩০ মিনিট পর ব্রেকফাস্ট, আর তারপর ৫ ঘণ্টা পর দ্বিতীয় বার খেতে দেওয়া হয়। দেখা যায় এতে শরীরে ইনসুলিন ও ট্রাইগ্লিসারাইডের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ থাকে। ৬ দিন পর তাদের দু’বার খাওয়ার সময়ের ব্যবধান ৫ ঘণ্টার থেকে বেশি বাড়িয়ে দেওয়া হয়। দেখা যায়, ৫ ঘণ্টার বেশি দেরি হলেই শরীরের নিজস্ব ঘড়ির সঙ্গে তাল রাখতে যায় না। আর এর ফলেই হতে থাকে শরীর খারাপ।
কারেন্ট বায়োলজি জার্নালে এই গবেষণার ফল প্রকাশিত হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy