— প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
কাজের চাপ বাড়লেই মাইগ্রেনের যন্ত্রণা শুরু হয় অস্মির। সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ে মাথা ঘোরা, বমি বমি ভাব। রাকার আবার চোখে একটু জোরালো আলো লাগলেই শুরু হয় মাথা যন্ত্রণা। একটানা কম্পিউটার বা মোবাইলের স্ক্রিনের দিকে তাকিয়ে থাকলেই শুরু হয় মাইগ্রেনের ব্যথা।
নিয়মিত ওষুধ, চিকিৎসকের পরামর্শ নিলেও মাইগ্রেনের সমস্যায় অস্মি, রাকার মতো ভুক্তভোগী আমাদের চারপাশের অনেকেই। ডা. সুবীর মণ্ডল বলছেন, “এখনকার দিনে পরিশ্রম, কাজের চাপ, স্ট্রেস সব সমান হলেও, পুরুষদের তুলনায় মহিলাদের মধ্যে এখনও এই সমস্যা বেশি দেখা যায়। মস্তিষ্কের কিছু কোষে পর্যাপ্ত পরিমাণ রক্ত সঞ্চালন না হওয়ার কারণেই এই মাইগ্রেনের সমস্যা হয়। সমস্যা কিছুটা বংশগতও। সাধারণত বয়ঃসন্ধির শুরু থেকেই এই সমস্যার সূত্রপাত, চলে প্রায় মেনোপজ় পর্যন্ত। অধিকাংশ সময়েই এর পর কিন্তু এই সমস্যা বিদায় নেয়।” প্রাথমিক ভাবে সামান্য কিছু ওষুধ, দৈনন্দিন জীবনযাপন ও খাদ্যাভ্যাসে সামান্য বদল মাইগ্রেনের সমস্যাকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারে। তবে এর সঙ্গে প্রায়ই উঠে আসে আরও একটা গুরুতর প্রশ্ন। মাইগ্রেনের সমস্যায় ভুক্তভোগী ব্যক্তিরা কি শারীরচর্চা করতে পারেন?
ফিটনেস প্রশিক্ষক সৌমেন দাসের কথায়, “মাইগ্রেনের সমস্যায় নিয়মিত ‘স্ট্রেস রিলিফ’ ব্যায়াম করা ভাল। এতে এন্ডরফিনস, অ্যাঙ্কলিফিনসের মতো কিছু ‘ফিল গুড হরমোন’ নিঃসরণ হয়। মস্তিষ্কেও রক্ত সঞ্চালন ভাল হয়। রোজ দিনের শুরুতে কিংবা কাজের শেষে আধ ঘণ্টার এই শারীরচর্চা শারীরিক ও মানসিক ক্লান্তি দূর করে এনার্জি বাড়াবে, সুস্থ রাখবে।”
খুঁটিনাটি
অ্যারোবিক্স, সাঁতার, নাচ, দৌড়, সাইক্লিং, জ়ুম্বা ইত্যাদি কার্ডিয়ো ব্যায়াম করা যেতে পারে। করতে পারেন ক্যালাসথেনিক্সও। স্কোয়াট, ওয়াল পুশ আপ, বাইসেপ, ট্রাইসেপ, স্ক্যাপুলা, গ্লুটেন-সহ বিভিন্ন পেশি ও অঙ্গপ্রত্যঙ্গের জোর বাড়ানোর উপযোগী ব্যায়াম করতে পারেন। তবে প্রথমেই ব্যায়াম নয়, আগে ওয়ার্ম আপ করে নেওয়া দরকার। সঙ্গে করতে পারেন -
ওয়ার্ম আপ দিয়ে শুরু করে বিভিন্ন কুল ডাউন এক্সারসাইজ যেমন ভুজঙ্গাসন, শবাসন দিয়ে শেষ করতে হবে ব্যায়াম।
এড়িয়ে চলুন
মাইগ্রেনের সমস্যায় শারীরচর্চা করা ভাল। তবে অতিরিক্ত শারীরচর্চা আবার এই সমস্যাকে ট্রিগার করতে পারে। তাই একটানা দীর্ঘ সময় ধরে ব্যায়াম, অতিরিক্ত ঘাম ঝরানো এ সব করবেন না। তা ছাড়া, ক্রমাগত ঘাড় ঘোরানো কিংবা মাথা সামনে বা পিছনের দিকে ঝুঁকিয়ে করার মতো ব্যায়াম করবেন না। পাশাপাশি হাই-ইন্টেনসিটি এক্সারসাইজ, ওয়েট লিফটিং চলবে না।
সতর্ক থাকুন
শারীরচর্চা শুরুর পর এক দিনেই কিন্তু মাইগ্রেনের সমস্যা কমে যাবে না। ধৈর্য ধরে নিয়মিত অভ্যাসে নিয়ন্ত্রণে আসবে মাইগ্রেন। তবে ডা. মণ্ডল বলছেন, “ব্যথা থাকাকালীন অবস্থায় শারীরচর্চা নয়। সে ক্ষেত্রে উপকারের বদলে ক্ষতির আশঙ্কাই বেশি।” পাশাপাশি প্রথম দিন থেকেই খুব কসরত করতে যাবেন না। দু’টি ব্যায়ামের মাঝে পর্যাপ্ত বিশ্রাম নেবেন। যতটুকু শরীর নিতে পারবে, ততটুকুই অভ্যাস করবেন। ধীরে সুস্থে অল্প অল্প করে শারীরচর্চার সময় বাড়াবেন।
নিয়মিত যথেষ্ট পরিমাণ ঘুম ও স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভাসের দিকেও নজর দেওয়া প্রয়োজন। শরীর হাইড্রেটেড থাকলে অনেক সময়েই মাইগ্রেনে অ্যাটাক কম হয়। ধূমপান, মদ্যপান, চকলেট খাওয়ার মতো অভ্যাস ত্যাগ করাও জরুরি। কিছু ওষুধ আছে, যা মাথা ব্যথার উদ্রেক করে। তাই, এ বিষয়ে আগে বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেওয়া জরুরি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy