মাতৃভূমি লোকালের নির্দিষ্ট কিছু কামরায় পুরুষ যাত্রীদের সফরের অনুমতি আগেই দিয়েছিল পূর্ব রেলের শিয়ালদহ ডিভিশন। সেই অনুযায়ী শিয়ালদহ থেকে চলে, এমন ৬ জোড়া মাতৃভূমি লোকালের তিনটি করে কামরা আজ, সোমবার থেকেই সাধারণ কামরা হিসাবে চিহ্নিত করা হচ্ছে।
ওই সব ট্রেনের শিয়ালদহমুখী চতুর্থ, পঞ্চম ও ষষ্ঠ কামরা মহিলা যাত্রীদের জন্য বরাদ্দ করা হয়েছে।
রেলের দাবি, ১২ কামরার মাতৃভূমি লোকালের যাত্রী সংখ্যা খতিয়ে দেখে রেল কর্তাদের ধারণা, ওই ট্রেনে গড়ে ২৫ শতাংশ আসন ফাঁকা থাকে। তাই তার ৩টি কামরা সাধারণ কামরা হিসাবে বরাদ্দ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
শিয়ালদহ ডিভিশনের উত্তর ও মেন শাখায় চার জোড়া মাতৃভূমি লোকাল (রানাঘাট, কৃষ্ণনগর সিটি জংশন, বারাসত ও বনগাঁ) চলে। শিয়ালদহ দক্ষিণ শাখায় ক্যানিং ও বারুইপুর থেকে শিয়ালদহের পথে চলে দু’জোড়া মাতৃভূমি লোকাল। দক্ষিণ শাখায় লোকাল ট্রেনে
মহিলা কামরার সংখ্যা বাড়িয়ে তিনটি করার প্রতিবাদে যাত্রীদের একাংশ গত বুধ ও বৃহস্পতিবার লক্ষ্মীকান্তপুর ও ডায়মন্ড হারবার শাখার বিভিন্ন স্টেশনে অবরোধ করে। তাতে দীর্ঘক্ষণ ট্রেন চলাচল ব্যাহত হয়। যদিও মহিলা কামরার সংখ্যা
কমানো হবে না বলে স্পষ্ট জানিয়ে দেয় রেল। তবে ওই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে শুক্রবার শিয়ালদহের ডিভিশনাল রেলওয়ে ম্যানেজার দীপক নিগম জানান, সাধারণ যাত্রীদের কথা মাথায় রেখে মহিলাদের জন্য নির্দিষ্ট মাতৃভূমি লোকালের কিছু কামরায় পুরুষদের প্রবেশাধিকারের দিকটি বিবেচনা করা হচ্ছে। এর পরেই শনিবার একাধিক বৈঠকে এ নিয়ে প্রস্তুতি চূড়ান্ত করা হয়।
তবে রেল যে ভাবে শিয়ালদহ অভিমুখে চতুর্থ, পঞ্চম ও ষষ্ঠ কামরাকে সাধারণ কামরা হিসাবে চিহ্নিত করছে, তা বুঝতে গিয়ে যাত্রীদের মধ্যে বিভ্রান্তির আশঙ্কা করছেন অনেকেই।
রেল কর্তাদের দাবি, ট্রেন যখন শিয়ালদহ থেকে ছাড়বে, তখন পিছনের দিক থেকে চার, পাঁচ ও ছ’নম্বর কামরায় পুরুষ যাত্রীরা উঠতে পারবেন।
আবার ওই ট্রেনটি যখন শিয়ালদহের অভিমুখে আসবে, তখন সামনের দিকের চার, পাঁচ ও ছ’নম্বর কামরায় উঠবেন পুরুষ যাত্রীরা। তবে ব্যস্ততার সময়ে এই কামরা বুঝতে ভুল হওয়ার আশঙ্কা থাকছে।
যাত্রীদের অনেকে হাওড়া ডিভিশনের মাতৃভূমি লোকালের ধাঁচে মাঝখানের চারটি কামরা সাধারণের জন্য বরাদ্দের পক্ষে সওয়াল করেছেন। সে ক্ষেত্রে ১২ কামরার ট্রেনে দু’দিক থেকে চারটি করে কামরা বাদ দিলে সাধারণ কামরার নাগাল পাওয়া সম্ভব।
যদিও রেল কর্তাদের দাবি, ওই ট্রেনের বৈশিষ্টের কথা মাথায় রেখে মাত্র তিনটি সাধারণ কামরা করা হচ্ছে। বাকি ৯টি কামরা রাখা হচ্ছে মহিলাদের জন্য। এই সিদ্ধান্তে ১২টি মাতৃভূমি লোকালের প্রতিটিতে সর্বোচ্চ প্রায় এক হাজার পুরুষ যাত্রী উঠতে পারবেন।
নতুন ব্যবস্থায় কী ভাবে যাত্রীরা সফর করছেন, সে দিকে রেলের নজর থাকবে। সমস্যা সামলাতে রক্ষী মোতায়েনের কথাও ভাবা হয়েছে।
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)