E-Paper

পার্শ্বশিক্ষকদের ধর্মঘট আজ থেকে, চিন্তা স্কুলে 

সংগঠন ধর্মঘট ডেকেছে, সেই পার্শ্বশিক্ষক ঐক্য মঞ্চের দাবি, দীর্ঘদিন ধরে পার্শ্বশিক্ষকেরা বঞ্চনার শিকার।

চাকরিহারা শিক্ষকেরা।

চাকরিহারা শিক্ষকেরা। —ফাইল চিত্র।

দয়াল সেনগুপ্ত 

শেষ আপডেট: ২১ এপ্রিল ২০২৫ ০৯:১১
Share
Save

মূলত বেতন বৃদ্ধির দাবিতে আজ, সোমবার থেকে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত ক্লাস বয়কট করার ডাক দিয়েছে পার্শ্বশিক্ষকদের সংগঠন। এই নিয়ে চিন্তায় পড়েছে জেলার বহু স্কুল।

চাকরিহারাদের মধ্যে ‘অযোগ্য’ এবং ‘দাগি’ (টেন্টেড) বলে চিহ্নিত নন, এমন শিক্ষক-শিক্ষিকাদের আপাতত স্কুলে যাওয়ার নির্দেশ সুপ্রিম কোর্ট দিয়েছে। কিন্তু, যোগ্য-অযোগ্যের তালিকা প্রকাশ-সহ একাধিক দাবি না মেটা পর্যন্ত স্কুলে যাচ্ছেন না ‘যোগ্য’দের অনেকেই।

শনিবার জেলায় জেলায় সেই ছবি দেখা গিয়েছে। এই আবহে, পার্শ্বশিক্ষকেরাও যদি সোমবার থেকে স্কুলে না আসেন, তাহলে পঠনপাঠন ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা করছেন জেলার বিভিন্ন স্কুলের প্রধান শিক্ষক ও শিক্ষিকারা।

যে সংগঠন ধর্মঘট ডেকেছে, সেই পার্শ্বশিক্ষক ঐক্য মঞ্চের দাবি, দীর্ঘদিন ধরে পার্শ্বশিক্ষকেরা বঞ্চনার শিকার। বর্তমানে শিক্ষক-শিক্ষিকা এবং শিক্ষাকর্মীর সংখ্যা কমে যাওয়ায় অতিরিক্ত সব কাজ তাঁদেরই করতে হচ্ছে। সরকার যাতে বেতন বাড়ানোর পাশাপাশি তাঁদের আরও দাবিদাওয়ার দিকে নজর দেয়, সে জন্যই চার দিনের ধর্মধট ডাকা হয়েছে। প্রসঙ্গত, চলতি মাসের ৭, ৮ ও ৯ তারিখেও ক্লাস বয়কট করেছিলেন পার্শ্বশিক্ষকেরা। তখন জেলায় মিশ্র সাড়া পড়েছিল।

তবে, এ বার ভাল সাড়া পড়বে বলে দাবি করেছেন পার্শ্বশিক্ষক ঐক্য মঞ্চের বীরভূম জেলা আহ্বয়কের পদে থাকা সুব্রত চট্টোপাধ্যায়। তিনি বলেন, ‘‘আমরা ২০০৪ সালে থেকে নিযুক্ত হওয়ার পর থেকে সে ভাবে আমাদের ভাতা বাড়ানো হয়নি। ২০০৯ সালে বিরোধী দলনেত্রী থাকাকালীন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কথা দিয়েছিলেন, পার্শ্ব শিক্ষকদের স্থায়ী নিয়োগ করবেন। কিন্তু, কথা রাখেননি।’’

সুব্রতের দাবি, স্কুলের রুটিন মেনে ক্লাস নেওয়া, ক্লাস টিচারের দায়িত্ব পালন, প্রশ্নপত্র তৈরি করা, খাতা দেখা ছাড়াও অন্যান্য নানা কাজ তাঁদের করতে হয়। নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণির ক্লাসও নিতে হয় পার্শ্বশিক্ষকদের অনেককে। সুব্রতের কথায়, ‘‘এত কিছুর জন্য যেটুকু সাম্মানিক পাই, সেই টাকায় বর্তমানে সংসার চালানো সম্ভব হচ্ছে না।’’

জানা গিয়েছে, প্রাথমিক ও উচ্চ প্রাথমিক মিলিয়ে জেলায় পার্শ্বশিক্ষক-শিক্ষকার সংখ্যা ১৪০০ থেকে ১৫০০। ২০১৮ সালে শেষ বার ভাতা বৃদ্ধি হয়েছিল। পার্শ্ব শিক্ষকেরা প্রাথমিকে ১০ হাজার টাকা এবং উচ্চ প্রাথমিকে ১৩ হাজার টাকা করে বেতন পান। দুববরাজপুরের করমকাল সুরেন্দ্রনারায়ণ বিদ্যাভবনের পার্শ্বশিক্ষিকা রিঙ্কু মণ্ডল বলেন, ‘‘বয়কটে শামিল হয়েছি।জানি পড়ুয়াদের সমস্যা হবে। কিন্তু, আমরা নিরুপায়। ২০ বছর ধরে কাজ করছি। এত বছরেও আমাদের উন্নতির কথা সরকার ভাবেনি।’’ তিনি জানান, সিউড়ি থেকে ১৪ কিলোমিটার দূরের স্কুলে যাতায়াত করতেই বেতনের বড় অংশ ব্যয় হয়ে যায়। এই টাকায় কী করে সংসার চলবে? বোলপুরের একটি স্কুলের পার্শ্বশিক্ষিকা চৈতালি ঘোষ বলেন, ‘‘দীর্ঘদিন ধরে বেতন বঞ্চনা আছেই। সঙ্গে কাজের বহর দিন দিন বাড়়ছে। ধর্মঘটকে সমর্থন করে সোমবার থেকে স্কুল যাব না।’’

তবে ইলামবাজারের পার্শ্বশিক্ষিকা ঝুমা দে বলছেন, ‘‘ধর্মঘটের বিষয় শুনেছি। তবে আমি স্কুলে যাব।’’ পার্শ্বশিক্ষক ঐক্য মঞ্চ সূত্রে জানা গিয়েছে, আগের বার ধর্মঘটে শামিল হননি অনেক পার্শ্বশিক্ষক ও শিক্ষিকা। এ বারে কী হবে, তা নিয়ে চিন্তায় স্কুল। দুবরাজপুর গার্লস হাই স্কুলে চার জন পার্শ্বশিক্ষিকা আছেন। প্রধান শিক্ষিকা চাঁপা দে বলছেন, ‘‘আগের বার এক দিন ওঁরা আসেননি। এখন যা পরিস্থিতি তাতে ওঁরা টানা চার দিন না এলে, পঠনপাঠনে সত্যিই প্রভাব পড়বে।’’

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

SSC Suri

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

এটি একটি প্রিন্ট আর্টিক্‌ল…

  • এমন অনেক খবরই এখন আপনার হাতের মুঠোয়

  • সঙ্গে রোজ পান আনন্দবাজার পত্রিকার নতুন ই-পেপার পড়ার সুযোগ

  • ই-পেপারের খবর এখন শুধুই ছবিতে নয়, টেক্সটেও

প্ল্যান সিলেক্ট করুন

মেয়াদ শেষে নতুন দামে আপনাকে নতুন করে গ্রাহক হতে হবে

Best Value
এক বছরে

৫১৪৮

১৯৯৯

এক বছর পূর্ণ হওয়ার পর আপনাকে আবার সাবস্ক্রিপশন কিনতে হবে। শর্তাবলী প্রযোজ্য।
*মান্থলি প্ল্যান সাপেক্ষে
এক মাসে

৪২৯

১৬৯

এক মাস পূর্ণ হওয়ার পর আপনাকে আবার সাবস্ক্রিপশন কিনতে হবে। শর্তাবলী প্রযোজ্য।