দর্শনধারী দুনিয়ায় ছিমছাম চেহারার পূজারীরা সর্বক্ষণ ভাবছেন, কী করলে স্থূলত্ব এড়ানো যায় আর স্বাস্থ্য সচেতনেরা তার পাশাপাশি ভাবছেন কী ভাবে নিয়ন্ত্রণে রাখা যায় রক্তে শর্করার মাত্রা। তার কারণ রক্তে শর্করার হঠাৎ বৃদ্ধি মানেই অস্বাস্থ্যকর খাওয়ার ইচ্ছা বাড়বে। আর সেটা হলে বাড়বে ওজন। চুলোয় যাবে সুস্বাস্থ্য। সেই ভাবনা থেকেই অতি প্রক্রিয়াজাত শর্করা যেমন চিনি, ময়দা— ইত্যাদির বিরুদ্ধে একরকম ‘জেহাদ’ ঘোষণা করেছে স্বাস্থ্য সচেতনদের দুনিয়া। অথচ কেক থেকে শুরু করে পাউরুটি, স্যান্ডউইচ, পিৎজ়া, লুচি, পরোটা, শিঙাড়া, নুড্লস, পাস্তা— সব পছন্দের খাবারেই ময়দা বিনা চলবে না। সে ক্ষেত্রে ময়দার বদলে কোন কোনও স্বাস্থ্যকর বিকল্প বেছে নিতে পারেন। তেমন পাঁচ বিকল্পের সন্ধান দিলেন দিল্লির এক বেসরকারি হাসপাতালের ক্লিনিকাল নিউট্রিশনিস্ট এডউইনা রাজ।

১। লাল আটা
লাল আটা গোটা গম পিষে তৈরি করা হয়। এটি পরিশোধন বা ব্লিচ করা হয় না। ফলে এর ভিতরে গমের সমস্ত উপাদান অক্ষুণ্ন থাকে। থাকে ডায়েটারি ফাইবার। যা কোলেস্টেরল কমানোর পাশাপাশি, রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। এ ছাড়াও লাল আটায় থাকে একাধিক বি ভিটামিন, ফসফরাস, জিঙ্ক, কপার, ম্যাগনেসিয়ামের মতো খনিজ এবং ফলিক অ্যাসিড। যা হার্টের স্বাস্থ্যের জন্য ভাল এবং এর গ্লাইসেমিক ইনডেক্সও কম। রক্তে শর্করা এক ধাক্কায় অনেকখানি বাড়িয়ে দেয় না।
২। কাঠবাদামের আটা
কাঠবাদামের আটায় গ্লুটেন থাকে না। বদলে থাকে স্বাস্থ্যকর স্নেহ পদার্থ এবং প্রোটিন। যাঁরা খাদ্যতালিকায় শর্করা কমাতে চাইছেন, তাঁদের জন্য এই আটা আদর্শ। হার্টের স্বাস্থ্যের জন্য ভাল। খেতেও সুস্বাদু।

৩। ওটসের আটা
এই আটা বাড়িতেই বানিয়ে নেওয়া যায়। বাজার থেকে কেনা ওটস মিক্সার গ্রাইন্ডারে ঘুরিয়ে নিয়ে চেলে নিলেই তৈরি হয়ে যাবে ওটসের আটা। এতেও রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার। বিশেষ করে বিটা গ্লুকান, যা কোলেস্টেরল কমাতে এবং রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে। ওটসের আটা দিয়ে কাপ কেক, মাফিন, প্যানকেক বানানো যায়। এমনকি, দোসার মিশ্রণও তৈরি করা যায় এ দিয়ে।
৪। রাগির আটা
রাগির আটা বহু বছর ধরেই থাওয়া হয়ে আসছে ভারতে। বিশেষ করে পঞ্জাবে রাগীর আটায় তৈরি রুটি খাওয়ার চল আছে। গ্লুটেন মুক্ত এই আটায় রয়েছে ক্যালসিয়াম, আয়রন এবং অ্যামিনো অ্যাসিড যা প্রোটিন সংশ্লেষে সাহায্য করে। সহজ পাচ্য এই আটা দিয়ে রুটি, পরোটা, পুরি, কচুরি বানানো যেতে পারে।

৫। বেসন
ছোলার ডালের বেসনও ময়দার স্বাস্থ্যকর বিকল্প হতে পারে। প্রোটিন এবং ফাইবারে ভরপুর বেসন প্রায় সব ভারতীয় রান্নাঘরেই থাকে। বেসন দিয়ে চিলা, পকোড়া, বড়া বানানো যেতে পারে। যা সম্পূর্ণ ভাবে গ্লুটেন মুক্ত খাবার হিসাবে খাওয়া যেতে পারে।