Advertisement
০৬ নভেম্বর ২০২৪

বিশেষ পরিচর্যায় সহজ হয় ক্যানসারের লড়াই

মুখের বাঁ দিকে ঘা হয়েছিল। কয়েক মাসের মধ্যেই সেই ঘা গোটা মুখে ছড়িয়ে প়ড়ল। বছর চারেকের মেয়ে বাবাকে দেখেই শিউরে উঠত। 

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ১৬ ডিসেম্বর ২০১৮ ০০:৩১
Share: Save:

মুখের বাঁ দিকে ঘা হয়েছিল। কয়েক মাসের মধ্যেই সেই ঘা গোটা মুখে ছড়িয়ে প়ড়ল। বছর চারেকের মেয়ে বাবাকে দেখেই শিউরে উঠত।

মুখের গড়ন বদলে যেতেই চাকরি চলে গেল। অস্ত্রোপচার ও রেডিয়োথেরাপির দীর্ঘ প্রক্রিয়ার জেরে জীবনের স্বাভাবিক ছন্দটাই যেন নষ্ট হয়ে গিয়েছিল। বার দু’য়েক আত্মহত্যারও চেষ্টা করেছিলেন বছর বত্রিশের যুবক। তবে, শেষ পর্যন্ত এক সহায়ক দলকে পাশে পেয়ে ক্যানসার এবং অবসাদ— দুই যুদ্ধেই জিতেছেন তিনি।

বিয়ের সাত মাসের মধ্যেই স্তন ক্যানসারে আক্রান্ত হয়েছিলেন ২৬ বছরের এক তরুণী। অস্ত্রোপচার ও কেমোথেরাপির পরে একদল মহিলার সঙ্গে যোগাযোগ হয়। তাঁদের অধিকাংশই ক্যানসার-জয়ী। কেমোথেরাপির পরে যন্ত্রণা কমানোর কৌশল থেকে মন খারাপের গল্প— ওই দলের সঙ্গে তরুণী সবই ভাগ করে নিয়েছিলেন। ক্যানসার চিকিৎসার দীর্ঘ পথ অনেকটাই সহজ হয়েছিল।

শনিবার ক্যানসারের চিকিৎসায় উপশমমূলক পরিচর্যার (প্যালিয়েটিভ কেয়ার) সুযোগ এবং প্রয়োজনীয়তা নিয়ে একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা আয়োজিত অনুষ্ঠানে উঠে আসে ক্যানসার-জয়ীদের লড়াইয়ের গল্প। চিকিৎসকেরা জানান, ক্যানসারের চিকিৎসায় দামি ওষুধ, অস্ত্রোপচার, উন্নত রেডিয়োথেরাপির পাশাপাশি প্রয়োজন শুশ্রূষার। শহরের একাধিক হাসপাতাল উন্নত প্রযুক্তির চিকিৎসা পরিকাঠামো তৈরির দিকে গুরুত্ব দিলেও রোগীর যত্ন নেওয়ার বিষয়টি উপেক্ষিতই থাকছে।

বিশেষজ্ঞদের একাংশ জানান, মারণ রোগের চিকিৎসায় অধিকাংশ ক্ষেত্রেই রোগীর শারীরিক যন্ত্রণার পাশাপাশি মানসিক অবসাদও তৈরি হয়। যা চিকিৎসার পথে বাধা হয়ে দাঁড়ায়। কিন্তু এ রাজ্যে উপশমমূলক পরিচর্যা দেওয়ার ক্ষেত্রে নানা জটিলতা রয়েছে। সেই পরিচর্যা বা শুশ্রূষা করার মতো পর্যাপ্ত

প্রশিক্ষিত সংস্থা নেই। যেগুলি আছে, সেগুলিকে অধিকাংশ হাসপাতালই নিজেদের ক্যানসার চিকিৎসার সঙ্গে যুক্ত করে না। তা ছাড়া, উপশমমূলক পরিচর্যা দেওয়ার জন্য বৈধ সংস্থা তৈরির ক্ষেত্রেও আইনি জটিলতা রয়েছে।

এ দিনের আলোচনায় জানা যায়, অধিকাংশ রোগীই চিকিৎসার পর্ব সম্পর্কে জানেন না। ক্যানসারের দীর্ঘমেয়াদি এবং ব্যয়বহুল চিকিৎসায় কোথায়, কী সুবিধা পাওয়া যাবে, তা নিয়ে ধোঁয়াশা থাকে। চিকিৎসকেরা জানান, ক্যানসারের জন্য প্রতিটি হাসপাতালেই শল্য চিকিৎসক এবং রেডিয়োথেরাপি-কেমোথেরাপি বিশেষজ্ঞদের নিয়ে একটি বোর্ড তৈরি হয়। কিন্তু অধিকাংশ ক্ষেত্রে সেই বোর্ডে সিদ্ধান্ত গ্রহণের সময়ে রোগী ও তাঁর পরিজনেরা অংশ নেন না। সরকারি হাসপাতালে রোগীর চাপ বেশি থাকায় সব ক্ষেত্রে রোগীদের অংশগ্রহণের সুযোগও থাকে না। তাই ওই সমস্ত বোর্ডে উপশমমূলক পরিচর্যায় প্রশিক্ষিত ব্যক্তিদের রাখা হলে শুশ্রূষার মান উন্নত হবে।

এ প্রসঙ্গে ক্যানসার শল্য চিকিৎসক অর্ণব গুপ্ত বলেন, ‘‘রোগীর যন্ত্রণা কমিয়ে মানসিক জোর বাড়াতে প্যালিয়েটিভ কেয়ার জরুরি। ক্যানসারের চিকিৎসা দীর্ঘমেয়াদি।

অন্য বিষয়গুলি:

Cancer Fight Special Care Treatment
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE