সারা দিনের কাজের পরে রাতে বিছানায় এসে বসার পরে রাজ্যের ক্লান্তি ভর করে শরীরে। জড়িয়ে আসে চোখ, মাথা এলিয়ে পড়ে বালিশে। অথচ সারা দিনের কাজের শেষে ওই সময়টুকুই পুরোপুরি নিজের। বা সংসারী মানুষের জন্য ওই সময়টা স্বামী বা স্ত্রীর সঙ্গে দিনের শেষের কথা আদানপ্রদানের। সেখানেও যদি ক্লান্তি বোধ ভাগ বসায় তা হলে সারা দিনে আর নিজের জন্য রইল কী? যাপন প্রশিক্ষকেরা বলছেন, দিনের শেষের এই যে শরীরের সমস্ত শক্তি ফুরিয়ে যাওয়া, তা কাটিয়ে উঠতে পারেন রোজ রাতে শুধুমাত্র ১০ মিনিটের একটি রুটিন বজায় রেখে। তাঁরা বলছেন, ওই ১০ মিনিট সময় দিন পায়ের যত্ন নেওয়ার জন্য।
কী ভাবে যত্ন নেবেন?
সারা দিন অফিস বা বাড়ির কাজ করে দিনের শেষে নিজের জন্য আলাদা করে কিছু করার শক্তি বা ইচ্ছে থাকে না। তবে ওই ১০ মিনিটের পায়ের যত্ন নেওয়ার জন্য একেবারেই বেশি কিছু করতে হবে না। দরকার শুধু সামান্য গরম জল, যা রান্নাঘরে না গিয়েও পাওয়া সম্ভব। স্নানঘরের গিজ়ার বা ইলেকট্রিক কেটলি থেকে। আর দরকার রোজমেরি অয়েল, যা দোকান অথবা অনলাইন প্ল্যাটফর্ম থেকে আনিয়ে নেওয়া যায়। চাইলে বাড়িতেও বানিয়ে রেখে দিলে তা দীর্ঘ দিন ধরে ব্যবহার করা সম্ভব। এ ছাড়া দরকার হবে একটি জলে পা ডুবিয়ে রাখার পাত্র এবং একটি নরম তোয়ালে, ব্যস!

ছবি: সংগৃহীত।
আপনাকে যা করতে হবে
১। প্রথমে গরম জলে কয়েক ফোঁটা রোজ়মেরির তেল ফেলে তা মিশিয়ে নিতে হবে। তার পরে দিতে হবে সামান্য সামুদ্রিক লবণ।
২। জল পা ডোবানোর মতো কুসুম কুসুম গরম হলে আরামদায়ক কোনও জায়গায় বসে তাতে পা ডুবিয়ে রাখতে হবে মিনিট দশেক। এই সময়টায় আপনি ঘর অন্ধকার করে গান চালিয়ে দিতে পারেন। কিংবা বই পড়তে পারেন। অথবা কিছু না করেই কেবলমাত্র ঈষদুষ্ণ জলের আরাম অনুভব করতে পারেন।
৩। দশ মিনিট পরে জল থেকে পা তুলে নিয়ে নরম তোয়ালে দিয়ে পা মুছে নিন। অবশ্য চাইলে আরও বেশি সময়ও জলে পা ডুবিয়ে রাখতে পারেন। তার পরে লাগিয়ে নিন ময়েশ্চারাইজ়ার।
কী কী উপকার হতে পারে?
যাপন প্রশিক্ষকেরা বলছেন অতিরিক্ত শ্রান্তিবোধ মনের উপর যেমন প্রভাব ফেলে, তেমনই প্রভাব ফেলে শরীরেও। পেশির ব্যথা, স্নায়ুর ব্যথা ছাড়াও নিদ্রাহীনতার সমস্যা হয় অনেকের। কেউ কেউ দিনের শেষে ক্লান্তির জন্য বিরক্ত হন। কারও পায়ের পাতা ফুলে যায়, কোমর থেকে পায়ের গোড়ালি পর্যন্ত পায়ের অংশ দেখা দেয় আড়ষ্টতা। অথবা অসাড় ভাব। ১০ মিনিটের পায়ের যত্ন নিয়মিত করলে সেই সব সমস্যা থেকে মুক্তি মিলতে পারে। যে যে বিষয়ে উপকার মেলে তা হল—
১। রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি করে
২। পেশির টান ধরা ভাব কমায়
৩। প্রদাহনাশক উপকারিতা
৪। ছত্রাক এবং ব্যাক্টেরিয়ারোধক
৫। মানসিক চাপমুক্তি এবং বিশ্রাম
৬। পায়ের ত্বকের মৃতকোষ দূর করে মোলায়েম করে।