Advertisement
০২ নভেম্বর ২০২৪

অসমীয়ার সংজ্ঞা নিয়ে সংশয় অব্যাহতই

অসমীয়া কারা?—এই প্রশ্নের মীমাংসা না হওয়ায় থমকে রয়েছে অসম চুক্তির ৬ নম্বর ধারার রূপায়ণ। আজ বিধানসভায় এই তথ্য দেন রাজ্যের অসম-চুক্তি রূপায়ণ বিভাগের ভারপ্রাপ্ত মন্ত্রী ভূমিধর বর্মন। বিধানসভায় অসম গণ পরিষদের বিধায়ক ফণীভূষণ চৌধুরি প্রশ্ন তোলেন, অসম চুক্তির তিন দশক পার হওয়ার পরেও চুক্তির বিভিন্ন দফা কেন রূপায়ণ করা গেল না? প্রশ্নের উত্তরে মন্ত্রী জানান, “অসম চুক্তির ৮.১, ৮.২, ১৩, ১৪ ও ১৫ নম্বর ধারা ইতিমধ্যে রূপায়িত হয়েছে।”

নিজস্ব সংবাদদাতা
গুয়াহাটি শেষ আপডেট: ০৪ মার্চ ২০১৫ ০৩:৪২
Share: Save:

অসমীয়া কারা?—এই প্রশ্নের মীমাংসা না হওয়ায় থমকে রয়েছে অসম চুক্তির ৬ নম্বর ধারার রূপায়ণ। আজ বিধানসভায় এই তথ্য দেন রাজ্যের অসম-চুক্তি রূপায়ণ বিভাগের ভারপ্রাপ্ত মন্ত্রী ভূমিধর বর্মন। বিধানসভায় অসম গণ পরিষদের বিধায়ক ফণীভূষণ চৌধুরি প্রশ্ন তোলেন, অসম চুক্তির তিন দশক পার হওয়ার পরেও চুক্তির বিভিন্ন দফা কেন রূপায়ণ করা গেল না?

প্রশ্নের উত্তরে মন্ত্রী জানান, “অসম চুক্তির ৮.১, ৮.২, ১৩, ১৪ ও ১৫ নম্বর ধারা ইতিমধ্যে রূপায়িত হয়েছে। ৫.১ থেকে ৫.৮ নম্বর, ৭, ৯.১, ৯.২, ১১ ও ১২ নম্বর দফা রূপায়ণের কাজ বিভিন্ন বিভাগের মাধ্যমে করা হচ্ছে। কিন্তু গোল বেধেছে ৬ নম্বর ধারা নিয়ে। যে বিষয়কে কেন্দ্র করে অসম আন্দোলনের সূত্রপাত, সেই অসমীয়াদের ভাষাগত, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক স্বার্থ ও ঐতিহ্যের সাংবিধানিক, আইনি ও প্রশাসনিক সুরক্ষা প্রদানের বিষয়টি রয়েছে ৬ নম্বর ধারায়।” কিন্তু তিনি জানান, কারা অসমীয়া---সেই নিয়েই আজ অবধি কোনও সর্বসম্মত সিদ্ধান্তে পৌঁছনো সম্ভব হয়নি। অগপ আমলে এ নিয়ে প্রথম আলোচনা হয়। ‘অসমীয়া’র খসড়া সংজ্ঞা তৈরি হয়। বলা হয়: অসমে বসবাসকারী ও অসমের ভাষা ও সংস্কৃতি গ্রহণ করেছেন যাঁরা—তাঁরাই অসমীয়া। কিন্তু এই সংজ্ঞা সর্বসম্মত ভাবে মান্যতা পায়নি। পরে কংগ্রেস আমলে এ নিয়ে মন্ত্রিসভার একটি সাব-কমিটি গড়া হয়। সেখানেও সমাধান না বের হওয়ায়, অসম সাহিত্য সভাকে ‘অসমীয়া’র সংজ্ঞা নির্ধারণের দায়িত্ব দেওয়া হয়। কিন্তু পণ্ডিত ও চিন্তাবিদরা মিলেও সেই সংজ্ঞা বের করতে পারেননি। পরে বড়ো ও কার্বি সাহিত্য সভারও সাহায্য চাওয়া হয়। কিন্তু অসম চুক্তির তিন দশক পরেও ‘অসমীয়া’ কারা—তা চূড়ান্ত করা যায়নি। কারা অসমীয়া সেটাই ঠিক না হওয়ায়, কাদের ভাষাগত, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক স্বার্থ ও ঐতিহ্য রক্ষা করা হবে তা নিয়েও সরকার সিদ্ধান্ত নিতে পারেনি।

বিজেপি বিধায়ক প্রশান্ত ফুকন বলেন, “প্রফুল্ল মহন্তর আমল থেকেই সমস্যাটি চলে আসছে। মনে রাখতে হবে, কোনও মানুষ অসমীয়া ভাষায় কথা বললেই তিনি অসমীয়া নন। এ নিয়ে সর্বদলীয় বৈঠক হোক। সেখানে সব প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা আসুন। এই সরকারের আমলেই সমস্যার সমাধান হওয়া বাঞ্ছনীয়।” মুখ্যমন্ত্রী তরুণ গগৈ বলেন, “সমস্যার মূল গভীরে। আমাদের উপজাতি ভাই-বোনেরা নিজেদের অসমীয়া বলে স্বীকার করেন না। কিন্তু নেহাত ভাষার ভিত্তিতে তাঁদের এই সংজ্ঞা থেকে বাদ দিতে পারি না। এ নিয়ে অনেক বৈঠক হলেও সিদ্ধান্ত হয়নি। ‘অসমীয়া’ কথাটিকে বিস্তৃত পরিসরে ভাবতে হবে। অন্য উপজাতির অসমবাসী মানুষকেও এই সংজ্ঞার মধ্যে স্থান দিতে হবে। সবার মধ্যে মিল না হলে সর্বসম্মত সিদ্ধান্ত কী ভাবে সম্ভব?”

অন্য বিষয়গুলি:

assam assembly assamese
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE