শোকার্ত পরিজনেরা। ছবি: পিটিআই।
হিন্দু শাস্ত্রে আত্মহত্যা মহাপাপ। চলতি বিশ্বাস, আত্মহত্যা করলে মানুষ নরকে যায়। কিন্তু অনেকের মতে, তন্ত্র সাধনায় কোনও কোনও অতি-হঠকারী সাধক মনে করেন শরীর জগতের অংশ। তাকে সম্পূর্ণ আত্মসমর্পণ করে আত্মাকে মুক্ত করলে, সে আত্মা জন্ম-মৃত্যুর চক্রে অংশ নেয়। আবার জন্ম হয় সেই ব্যক্তির। সঠিক তন্ত্র সাধনায় এটি সম্ভব। তাই হিন্দু ধর্মে আত্মহত্যার অনুমতি না থাকলেও বিশেষ বিশেষ তন্ত্র সাধনায় এর চল রয়েছে। মনোরোগ চিকিৎসকের মতে, বুরারির ভাটিয়া পরিবারের উপরে কোনও তান্ত্রিক প্রভাব খাটিয়ে থাকতে পারেন।
বুরারিতে একই পরিবারের ১১ জনের মৃতদেহ উদ্ধারের পরে ইঙ্গিত মিলেছে, তাঁরা গুপ্ত সাধনা করতেন। ওয়াকিবহাল ব্যক্তিদের মতে, উত্তর ভারতীয় কিছু তান্ত্রিক শরীর ত্যাগ করার জন্য গোপনে অনেকে মিলে আত্মহত্যা করে পুনর্জন্মের কথায় বিশ্বাস করেন। কামাখ্যা, ইনদওরে মহাকালেশ্বর, বারাণসীর কালভৈরবের মন্দিরেও বহু তান্ত্রিক অতীতে শব সাধনা করতেন। তন্ত্রসাধকেরা অবশ্য নিজেরা মানুষকে হত্যা করেন না। তারা শবকে সামনে রেখে সাধনা করেন। জ্যোতিষ ডি পি শাস্ত্রীর যুক্তি, ‘‘এ ভাবে নশ্বর শরীর থেকে আত্মার মুক্তি হয় না। মুক্তির কোন শর্ট কার্ট মেথড নেই।’’
ইতিহাস অবশ্য বলছে, সাধক বাসুদেব ভট্টাচার্য কামাখ্যায় গিয়ে তন্ত্র সাধনা করেছিলেন। সাধনা করে তিনি না কি তাঁর নাতি সর্বানন্দ হয়ে জন্মাবেন এমন বার্তা পান। প্রচলিত ধারণা, সাধক রামপ্রসাদও এই সাধনা করেছিলেন। কিন্তু ২০১৮ সালে গোটা পরিবার কী ভাবে এ সব বিশ্বাস করে ফেলল?
গঙ্গারাম হাসপাতালের মনোরোগ বিভাগের চিকিৎসক সৌম্যা টন্ডনের মতে, ‘‘বুরারির ঘটনায় মনে হচ্ছে, গোটা পরিবার মুক্তির খোঁজে অতিপ্রাকৃত চর্চায় জড়িত ছিল। সম্ভবত এর পিছনে ছিলেন কোনও তান্ত্রিক। পরিবারের প্রবীণ সদস্য হয়তো প্রভাবিত হয়ে পড়েছিলেন। তাঁকে বাকি সকলে অনুসরণ করেন।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy