সান্ধ্য অনুষ্ঠান শুরুর আগেই শিলচর জেলা গ্রন্থাগার প্রেক্ষাগৃহের সমস্ত আসন ভর্তি হয়ে গিয়েছিল। অতিরিক্ত চেয়ার লাগানো হয় ডানে-বামে। মাঝখানে হাঁটাচলার জায়গাটিও চেয়ারে ভরে দেওয়া হয়। তার পরও অনেক লোক দাঁড়িয়ে দরজায় উঁকি দিচ্ছিলেন। শেষে উঠোনে বড় পর্দা লাগিয়ে কোনওক্রমে স্থান সঙ্কুলান করা হয়।
কালিকাপ্রসাদ ভট্টাচার্য স্মরণে সম্মিলিত সাংস্কৃতিক মঞ্চের অনুষ্ঠানে রবিবার সন্ধেয় এমন দৃশ্যই দেখা গেল। শিল্পীরা নাচে-গানে প্রসাদকে স্মরণ করলেন। দর্শকরা নিজেদের উপস্থিতিকেই তুলে ধরলেন শ্রদ্ধার্ঘ হিসেবে।
সৌমিত্রশঙ্কর চৌধুরী, ঋষিকেশ চক্রবর্তী, চন্দন মজুমদারের সঞ্চালনার একটাই থিম— কালিকাপ্রসাদের জীবনপঞ্জি নানা দিক থেকে তুলে ধরা। নাচ-গান-কবিতার অনবদ্য উপস্থাপনা। কালিকার কাকা মধুসূদন ভট্টাচার্যের সাক্ষাৎকারকে সামনে রেখে তাঁর শৈশব, স্কুল-কলেজ, শিল্পী-সংগঠক হয়ে ওঠার মুহূর্তগুলি ক্যামেরায় ফুটিয়ে তুলেছেন পার্থ শীল।
‘গানে গানে তোমারে সেলাম’ পর্বে কালিকার গানেই তাঁকে শ্রদ্ধা জানান এই অঞ্চলের যুব প্রজন্মের শিল্পীরা। ৮০ জন একসঙ্গে গেয়ে ওঠেন ‘এই শপথ নিলাম’, ‘একটি গ্রামের গল্প’, ‘যা খুশি তা’। এই গানগুলি অনেকেই আগে শোনেননি। তেমনই ‘এ পার বাংলা ও পার বাংলা’, ‘আমি তোমারি নাম গাই’-র মতো জনপ্রিয় গানগুলিও শুনিয়েছেন তাঁরা।
কালিকাপ্রসাদের পিসি, শিলচর সঙ্গীত বিদ্যালয়ের অধ্যক্ষা আনন্দময়ী ভট্টাচার্য অসুস্থতা সত্ত্বেও দীর্ঘ সময় উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠান শেষ হয় কালিকাপ্রসাদের ছবি হাতে সমবেত সঙ্গীতে।
সম্মিলিত সাংস্কৃতিক মঞ্চের কালিকা স্মরণ শুরু হয়েছিল রবিবার সকাল ১১টায়। রং-তুলিতে দুর্ঘটনায় মৃত সঙ্গীত শিল্পীকে শ্রদ্ধা জানাচ্ছিলেন চিত্রশিল্পীরা। তাঁদের আঁকা ছবিগুলি অনুষ্ঠানের সময় সেখানে প্রদর্শিত হয়। প্রদর্শনী ছিল প্রসাদ-কেন্দ্রীক আলোকচিত্রেরও। কালিকাপ্রসাদ ভট্টাচার্যের জীবনের নানা মুহূর্তের দেড় শতাধিক ছবি দেখানো হয় সেখানে। বিকেলে অনুষ্ঠিত হয় বরাকের লোকজীবন ও লোকগানের অনুষ্ঠান ‘সুয়া উড়িল রে’। বরাক উপত্যকার বিভিন্ন প্রান্তের লোকশিল্পীরা তাতে অংশ নেন। শ্রদ্ধা জানানল প্রয়াত শিল্পীকে। সঞ্চালনায় ছিলেন অমলেন্দু ভট্টাচার্য ও শেখর দেবরায়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy