Advertisement
০২ নভেম্বর ২০২৪

সামনে বিপদ, আঁচই পায়নি শ্যুটিং ইউনিট

দিন দুয়েক আগেই শ্যুটিংয়ের চলতি শিডিউল চুকিয়ে মুম্বই পাড়ি দিয়েছিলেন তিনি। তখনও তাঁর হাবভাবে ছিটেফোঁটা অশনিসঙ্কেত পাননি কেউ। বুধবার দুপুরে জম্মু-কাশ্মীরে পহেলগাঁওয়ে শ্যুটিংয়ের লাঞ্চব্রেকে সংবাদমাধ্যমের ফোন থেকে মুম্বইয়ের আদালতের রায়ের খবর জানতে পারে গোটা ইউনিট। আর তার পর ফোন এসেই চলেছে কবীর খানের ছবি ‘বজরঙ্গি ভাইজান’-এর লোকেশনে। ছবি মুক্তি পাওয়ার কথা, আগামী ১৭ জুলাই। এর মধ্যে নায়কের শাস্তির খবরে কার্যত মাথা হাত পরিচালক-অভিনেতা-কলাকুশলীদের।

ঋজু বসু
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৭ মে ২০১৫ ০৪:৪৭
Share: Save:

দিন দুয়েক আগেই শ্যুটিংয়ের চলতি শিডিউল চুকিয়ে মুম্বই পাড়ি দিয়েছিলেন তিনি। তখনও তাঁর হাবভাবে ছিটেফোঁটা অশনিসঙ্কেত পাননি কেউ।

বুধবার দুপুরে জম্মু-কাশ্মীরে পহেলগাঁওয়ে শ্যুটিংয়ের লাঞ্চব্রেকে সংবাদমাধ্যমের ফোন থেকে মুম্বইয়ের আদালতের রায়ের খবর জানতে পারে গোটা ইউনিট। আর তার পর ফোন এসেই চলেছে কবীর খানের ছবি ‘বজরঙ্গি ভাইজান’-এর লোকেশনে। ছবি মুক্তি পাওয়ার কথা, আগামী ১৭ জুলাই। এর মধ্যে নায়কের শাস্তির খবরে কার্যত মাথা হাত পরিচালক-অভিনেতা-কলাকুশলীদের।

কয়েক মাস আগেই রাজস্থানের শ্যুটিংপর্ব মিটিয়ে সলমন খানের সঙ্গে হাসিখুশি ছবি টুইটারে ‘পোস্ট’ করেছিলেন পরিচালক কবীর খান। গত মাসে কাশ্মীরে শেষ পর্বের শ্যুটিং শুরুর কথাও টুইট করেই ঘোষণা করেন তিনি। মঙ্গলবারই ছবিতে সলমনের নায়িকা করিনা কপূরও ট্রেলর রিলিজের সুসংবাদ টুইট করেন। তখন কে জানত, হঠাৎ এ ভাবে শ্যুটিং অনিশ্চিত হয়ে পড়বে!

ছবিতে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে অভিনয় করছেন কলকাতার ছেলে রাজেশ শর্মা। এ দিন বিকেলে ফোনে পহেলগাঁও থেকে বলছিলেন, ‘‘ইস্‌, এখনও ছবির ক্লাইম্যাক্সটা শ্যুট করা বাকি। আমরা কেউ জানি না, কী হতে চলেছে।’’ এক জন আইএসআই এজেন্টের ভূমিকায় থাকছেন রাজেশ। কিন্তু ঠিক ছক-বাঁধা খলনায়ক নয়। সলমনের সঙ্গে ছবির শেষ দৃশ্য নিয়ে মনে-মনে প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন রাজেশ। এমন সময়ে মুম্বই থেকে খবরটা এল।

ঠিক দু’দিন আগে শ্যুটিংয়ের কাজ অনেক দূর মিটিয়ে সলমন যখন মুম্বই চলে গেলেন, তখনও কিছুই বোঝেননি রাজেশ। বলছিলেন, ‘‘সলমন ভাই গোটা শ্যুটিংপর্ব দিব্যি খোশমেজাজেই ছিলেন।’’ সল্লুভাই যে শুধু ইউনিটের সঙ্গেই পুরো মিলেমিশে গিয়েছিলেন তাই নয়, স্থানীয় মানুষজনেরও মন জয় করে নিয়েছিলেন। রাজেশ জানাচ্ছেন, কাছেই একটি গ্রামে শ্যুট করার ফাঁকে এক বৃদ্ধার সঙ্গে দারুণ ভাব হয়ে গিয়েছিল সলমনের। তাঁর সঙ্গে প্রচুর গল্প করে তাঁর বাড়ির অবস্থা সব জেনেটেনে ভাঙাচোরা ঘর মেরামতের জন্য টাকাও দেন সলমন। গ্রামের ক’জন বেকার ছেলের সঙ্গে আলাপ জমতেই তাঁদের কথা বলেছেন, যে হোটেলে তাঁর থাকার ব্যবস্থা হয়েছিল তার কর্তৃপক্ষের সঙ্গে। নায়কের তদ্বিরে কয়েক জনের চাকরির বন্দোবস্তও হয়েছে। আরও ক’টি ছেলেকে যাতে সাময়িক ভাবে শ্যুটিং ইউনিটের কাজ লাগানো যায়— তার জন্যও সওয়াল করেছেন সলমন। সেই মানুষ আর মুম্বইয়ের রাজপথে গাড়ির স্টিয়ারিংয়ে বসা উদ্দাম যুবা যে এক লোক, বিশ্বাস করতে কষ্ট হচ্ছে রাজেশের।

নিঃশব্দ এই পরোপকারের পাশাপাশি ছেলেমানুষের মতো নানা দুষ্টুমিতে গোটা ইউনিটকেও মাতিয়ে রেখেছিলেন। রাজেশ বলছিলেন, ‘‘অদ্ভূত মাই ডিয়ার লোক! হিরোসুলভ ট্যানট্রাম তো নেই-ই! উল্টে সল্লুভাই থাকা মানে, সারা ক্ষণ সবাই হাসবে।’’ কখনও লাঞ্চ বা ডিনারে সকলের সঙ্গে অন্য রকম কিছু খাওয়ার জন্য বায়না ধরছেন। কখনও জুনিয়র আর্টিস্টের সঙ্গে বন্ধুর মতো আড্ডা দিচ্ছেন।

নায়কের সাজার খবর পেয়ে একটা কথাই রাজেশের মনে ঘুরপাক খাচ্ছে, ‘‘কই সল্লুভাইয়ের ভেতরে যে এত টেনশন ছিল, এক বারও তো আঁচ পাইনি!’’

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE