ছবিটি ইন্দ্রাণী মুখোপাধ্যায়ের ফেসবুক থেকে নেওয়া।
শিনা বেঁচে আছে! এবং সে আমেরিকাতেই রয়েছে!
পুলিশের কাছে এমনটাই দাবি করলেন শিনা বরার মা ইন্দ্রাণী মুখোপাধ্যায়। তা হলে গত চার বছরে এক বারও দেশে ফেরেনি কেন মেয়ে? পুলিশি জেরায় ইন্দ্রাণী বলেন, ‘‘আমি ওকে ঘেন্না করি!’’
দীর্ঘ জেরার মুখে এই বক্তব্য থেকে একচুলও সরেননি ইন্দ্রাণী। তদন্তকারী এক অফিসার জানিয়েছেন, ভাঙা তো দূরের কথা গোটা ঘটনায় একটুও মচকাননি অভিযুক্ত। যদিও সোমবার বান্দ্রা আদালতের ভেতর অন্য মেয়ে বিধিকে দেখে ভেঙে পড়তে দেখা গিয়েছিল তাঁকে। একটা সময় সংজ্ঞাও হারিয়ে ফেলেছিলেন। মাকে কাঠগড়ায় দেখে কান্নায় ভেঙে পড়েন বিধিও। কিন্তু, তার পর যে কে সেই! খার থানায় মুম্বইয়ের পুলিশ কমিশনার রাকেশ মারিয়ার উপস্থিতিতে দীর্ঘ জেরায় ইন্দ্রাণী নিজের এই বক্তব্য থেকে সরেননি।
পুলিশের কাছে জেরায় ইন্দ্রাণী জানিয়েছেন, মেয়েকে তিনি ভীষণ ভাবে ঘেন্না করেন। তাই বিদেশে পাঠিয়ে দিয়েছিলেন। এবং সেই কারণেই দেশে আসার কথা ভাবেন না শিনা। বাইরের দুনিয়া যাঁকে তাঁর বোন হিসেবে জানত, সেই শিনা আদতে তাঁর মেয়ে হলেও তিনি যে তাঁকে খুন করেননি সে কথা পুলিশের কাছে বার বার দাবি করেছেন ইন্দ্রাণী।
ইতিমধ্যে পুলিশ একটি ল্যাপটপ উদ্ধার করেছে। তাদের দাবি, ওই ল্যাপটপ থেকেই শিনার অফিসে ই-মেল করে তাঁর ইস্তফার চিঠি পাঠানো হয়। এবং পুলিশের সন্দেহ, সে কাজ করতেন ইন্দ্রাণী। এমনকী, তাঁর বর্তমান স্বামী পিটার মুখোপাধ্যায়ের আগের পক্ষের ছেলে রাহুল, যাঁর সঙ্গে শিনার প্রণয়ের সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল তাঁর মোবাইলেও শিনার মোবাইল থেকে বেশ কয়েকটি মেসেজ আসে। শিনা নিখোঁজ হওয়ার পর পরই ওই মেসেজগুলি এসেছিল বলে রাহুলের দাবি। শিনার নাম করে ওই মেসেজগুলো ইন্দ্রাণী-ই পাঠিয়েছিলেন কি না তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ।
কী লেখা হয়েছিল ওই মেসেজে?
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, শিনা কোনও এসএমএস-এ রাহুলকে লিখেছেন, ‘আমি আমেরিকা যাচ্ছি, দয়া করে আমার পিছু নিও না।’ কোথাও আবার লিখেছেন, ‘তোমার সঙ্গে আর কোনও সম্পর্ক রাখতে চাই না। আমাকে ফোন করবে না। মেসেজও না। আমি এখানে খুশিতেই আছি।’ এর পাশাপাশি একটি মেসেজে শিনা জানিয়েছেন, ‘আমি নতুন এক জনকে খুঁজে পেয়েছি। তার সঙ্গেই সুখে আছি। তোমার সঙ্গে সম্পর্ক রাখার কোনও ইচ্ছেই নেই আর। আমেরিকাতেই ওর সঙ্গে থেকে যাব।’ শিনা নিঁখোজ হওয়ার পর এই মেসেজগুলি কে রাহুলকে তাঁর মোবাইে পাঠিয়েছিল, তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ।
প্রাথমিক ভাবে তাদের ধারণা, শিনাকে খুন করার পর সবাইকে ইন্দ্রাণী জানিয়েছিলেন বোন আমেরিকাতে আছে। এ কথা আরও পোক্ত করতেই রাহুলকে ওই মেসেজ তিনিই পাঠিয়েছিলেন। সোমবার আদালত চত্বরে দাঁড়িয়ে যেমন বিধি বলেছিলেন, ইন্দ্রাণীই তাঁকে জানান, লস অ্যাঞ্জেলেসে পড়তে গিয়েছেন মাসি (শিনা)।
তবে, এত দিন শিনা এবং তাঁর ভাই মিখাইলের প্রকৃত বাবা হিসেবে যাঁর নাম উঠে আসছিল সেই সিদ্ধার্থ দাসকে কলকাতায় খুঁজে পাওয়ার পর জল্পনা আরও বেড়েছে। সংবাদ মাধ্যমে সিদ্ধার্থ দাবি করেছেন, ইন্দ্রাণীর সঙ্গে তাঁর কখনও বিয়ে হয়নি। তবে, গুয়াহাটিতে লিভ ইন থাকতেন তাঁরা। তিনি আরও দাবি করেন, শিনা এবং মিখাইল তাঁরই সন্তান।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy