অসমের খনিতে ঢুকে পড়ল জল, ভিতরে আটকে অন্তত ১৮ জন শ্রমিক! — প্রতিনিধিত্বমূলক চিত্র।
বৈধ ছাড়পত্র মেলেনি। তাও নিষিদ্ধ পদ্ধতিতেই রমরমিয়ে কয়লা উত্তোলনের কাজ চলছিল অসমের খনিতে। সোমবার সেই অবৈধ ‘ইঁদুর-গর্ত’ (র্যাট হোল মাইন) খনিতেই হু হু করে ঢুকে পড়ল জল। ভিতরে আটকে পড়লেন প্রায় ১৮ জন শ্রমিক!
খবর প্রকাশ্যে আসতেই চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে এলাকায়। উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন সে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মাও। স্থানীয় সংবাদমাধ্যমসূত্রে জানা গিয়েছে, ৩০০ ফুট গভীর ওই কয়লাখনিটি দিমা হাসাও জেলার প্রত্যন্ত শিল্পশহর উমরাংসোতে অবস্থিত। সূত্রের খবর, সোমবার সন্ধ্যায় অবৈধ ওই খনির প্রায় ১০০ ফুট পর্যন্ত জল পৌঁছে গিয়েছে। আর সেই খনিতেই আটকা পড়েছেন অন্তত ১৮ জন শ্রমিক। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছেছে পুলিশ ও জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী। পুরোদমে শুরু হয়ে গিয়েছে উদ্ধারকাজ। প্রাথমিক ভাবে দু’টি মোটর পাম্প ব্যবহার করে জল উত্তোলনের চেষ্টা চলছে। তার পর খনি থেকে শ্রমিকদের বার করার প্রক্রিয়া শুরু হবে।
সোমবার সন্ধ্যায় মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বলেন, ‘‘রাজ্য ও জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী (এসডিআরএফ এবং এনডিআরএফ)-র দলগুলি উদ্ধারকাজ শুরু করেছে। সেনাবাহিনীকেও উদ্ধারকাজে সাহায্য করার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে।’’ তবে মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, খনির ভিতরে ঠিক কত জন আটকে রয়েছেন তা এখনও স্পষ্ট নয়। তাঁরা কী অবস্থায় রয়েছেন, তা-ও বোঝা যাচ্ছে না।
কী এই ‘র্যাট-হোল মাইনিং’? কেনই বা তা নিষিদ্ধ? নাম শুনে আন্দাজ করা যায়, ইঁদুরের কায়দায় গর্ত খোঁড়ার সঙ্গে ‘র্যাট-হোল মাইনিং’-এর সম্পর্ক রয়েছে। এককালে খনি থেকে আকরিক উত্তোলনের কাজে এই পদ্ধতি ব্যবহৃত হত। শাবল-গাঁইতি দিয়ে খুব সঙ্কীর্ণ গর্ত খুঁড়ে খুঁড়ে এগোতে হত শ্রমিকদের। তবে এই প্রক্রিয়া বেশ ঝুঁকিপূর্ণ। কারণ, এই ভাবে খোঁড়া সুড়ঙ্গ অত্যন্ত সঙ্কীর্ণ হয়। ফলে যে কোনও মুহূর্তে ধস নেমে শ্রমিকের মৃত্যু হতে পারে। ২০১৮ সালে মেঘালয়ের এমনই এক অবাধ কয়লাখনিতে জল ঢুকে পড়ায় মৃত্যু হয়েছিল ১৫ জন শ্রমিকের। অনেক খোঁজাখুজির পর মাত্র দু’টি মৃতদেহ উদ্ধার করা গিয়েছিল। বাকিদের দেহও মেলেনি। একের পর এক দুর্ঘটনার কারণে ‘র্যাট-হোল মাইনিং’কে নিষিদ্ধ ঘোষণা করে ন্যাশনাল গ্রিন ট্রাইব্যুনাল। তবে ২০২৩ সালের নভেম্বরে উত্তরকাশীর সিল্কিয়ারার সুড়ঙ্গে আটকে পড়া ৪১ জন শ্রমিককে উদ্ধারের জন্য এই নিষিদ্ধ পদ্ধতিরই শরণাপন্ন হতে হয়েছিল প্রশাসনকে। সম্প্রতি রাজস্থানে কুয়োয় পড়ে যাওয়া তিন বছরের শিশুকে উদ্ধারেও শেষ পর্যন্ত সেই ইঁদুর-গর্ত খননকারীদেরই শরণ নিতে হয়! যদিও ওই শিশুকে বাঁচানো যায়নি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy