প্রতিবাদী: রামলীলা ময়দানে কৃষকদের শিবির। মঙ্গলবার নয়াদিল্লিতে। —নিজস্ব চিত্র।
সে যাত্রায় হেঁটেছিলেন ১৮০ কিলোমিটার। নাসিক থেকে মুম্বই। ছ’দিন ধরে কৃষকদের ‘লং মার্চ’। তার জেরে নড়ে বসতে হয়েছিল মহারাষ্ট্রের দেবেন্দ্র ফডণবীস সরকারকে।
বছর পঁয়ষট্টির দত্ত ফুলে ট্রেন ধরে মঙ্গলবার ভোররাতে পৌঁছেছেন দিল্লি। আগামিকাল সকালে রামলীলা ময়দান থেকে সংসদ মার্গের দিকে হাঁটা শুরু করবেন। পারবেন তো? ‘‘এ তো মাত্র ১৪-১৫ কিলোমিটার! কিন্তু নরেন্দ্র মোদী দাবিগুলো মানবেন তো?’’ বলেই হো হো করে হাসেন বৃদ্ধ।
একা দত্ত ফুলে নন। বুধবার দিল্লিতে সিপিএমের কৃষক সভা, সিটু ও ক্ষেতমজুর সংগঠনের ‘মজদুর কিষান সংঘর্ষ র্যালি’-র জন্য মহারাষ্ট্রের নাসিকের আশেপাশের এলাকা থেকে দিল্লিতে এসে পৌঁছেছেন পাঁচ হাজার কৃষক। সংগঠনের নেতাদের দাবি, লক্ষাধিক মানুষ এই মিছিলে হাঁটবেন। কিন্তু মহারাষ্ট্রের ‘লং মার্চ’-এ অংশ নেওয়া সেই চাষিরাই বুধবারের র্যালির তারকা। তাঁদের জন্য ৩৪ লক্ষ টাকা খরচ করে বিশেষ ট্রেন ভাড়া করা হয়েছে।
কৃষক সভার সম্পাদক হান্নান মোল্লা জানান, চাষের খরচের দেড়গুণ ফসলের দাম, মাসে ন্যূনতম ১৮ হাজার টাকা মজুরি, ঋণ মকুব, ক্ষেতমজুরদের জন্য আইন, শ্রমিক বিরোধী শ্রম আইন তুলে দেওয়ার মতো ১৫ দফা দাবিকে সামনে রেখে এই প্রথম সিপিএমের কৃষক ও শ্রমিক সংগঠন একসঙ্গে ময়দানে নামছে। প্রভাত পট্টনায়েকের মতো বামপন্থী বুদ্ধিজীবীরাও সমর্থন জানিয়েছেন মিছিলে।
আরও পড়ুন: রাহুলের ডাকে জোট ১৩ দলের যুবদের, নেই তৃণমূল
কিন্তু মহারাষ্ট্রের প্রবীণ কৃষক নেতা জে পি গাভিটই বুদ্ধিটা দেন বাকিদের। তিনি বাকি নেতাদের বোঝান, ‘লং মার্চ’-এর চাষিরা সাত দিন হেঁটে দাবি আদায় করেছিলেন। তাঁদের দিল্লিতে চোখের সামনে দেখলে বাকি রাজ্যের কৃষক-শ্রমিকরাও উৎসাহিত হবেন। আজ সিপিএমের গণতান্ত্রিক মহিলা সংগঠনও মহিলাদের উপরে হিংসা, বেকারি-সহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে যন্তরমন্তরে বিক্ষোভ দেখায়।
মহারাষ্ট্র ও অন্যান্য রাজ্য থেকে আসা কৃষক, শ্রমিকদের জন্য রামলীলা ময়দানে তাঁবু পড়েছে। সিটু-র সম্পাদক তপন সেন বলেন, ‘‘বৃষ্টির চোটে তিন বার তাঁবু ভেঙে পড়েছে। আবার খাড়া করা হয়েছে।’’ তাঁবুর ভিতরে বৃষ্টির জল ঢুকেছে। রাতে ঘুমোবেন কোথায়? গুজরাতের দাহোত থেকে আসা সাভড়া নাথাভাই বলেন, ‘‘পেটের অন্ন, জমির পাট্টার জন্য তো কষ্ট করছি। একটা রাত না হয় কষ্ট করলামই।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy