Advertisement
০২ নভেম্বর ২০২৪

তথ্য ফাঁস নিয়ে ‘বিগ বস’ বনাম ‘ছোটা ভীম’

‘নমো অ্যাপ’-এর মাধ্যমে দেশবাসীর উপরে প্রধানমন্ত্রী গোয়েন্দাগিরি করছেন বলে গত কালই অভিযোগ করেছিলেন রাহুল। আজ একটি জনপ্রিয় টিভি অনুষ্ঠানের প্রসঙ্গ টেনে রাহুলের অভিযোগ, ‘‘দেশবাসীর উপরে ‘বিগ বস’-এর মতো গোয়েন্দাগিরি করছেন প্রধানমন্ত্রী!’’

রাহুল গাঁধী।

রাহুল গাঁধী।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৭ মার্চ ২০১৮ ০৩:৪৩
Share: Save:

তথ্য ফাঁসের অভিযোগ করেছিলেন কাল। আজ একধাপ এগিয়ে আমজনতার উপর গোয়েন্দাগিরির অভিযোগ আনলেন রাহুল গাঁধী। নরেন্দ্র মোদীকে ‘বিগ বস’ বলে আক্রমণ করলেন।

পাল্টা দিল বিজেপিও। কংগ্রেস সভাপতির প্রযুক্তি-জ্ঞান নিয়ে প্রশ্ন তুলে তাঁকে ‘ছোটা ভীম’ বলে কটাক্ষ করল।

‘নমো অ্যাপ’-এর মাধ্যমে দেশবাসীর উপরে প্রধানমন্ত্রী গোয়েন্দাগিরি করছেন বলে গত কালই অভিযোগ করেছিলেন রাহুল। আজ একটি জনপ্রিয় টিভি অনুষ্ঠানের প্রসঙ্গ টেনে রাহুলের অভিযোগ, ‘‘দেশবাসীর উপরে ‘বিগ বস’-এর মতো গোয়েন্দাগিরি করছেন প্রধানমন্ত্রী!’’ তাঁর অভিযোগ, ‘নমো অ্যাপ’-এ গোপনে অডিও, ভিডিও, বন্ধু-পরিবারের সদস্যদের নাম-ধাম নিয়ে, জিপিএস-এর মাধ্যমে নজর রাখছেন কে, কোথায় আছেন। এ সব অভিযোগ করার পাশাপাশি ‘নমো অ্যাপ’ মুছে দেওয়ার অভিযানে নামতেও ডাক দিয়েছেন তিনি। বিষয়টি নিয়ে তিনি টুইটও করেন।

রাহুলকে সামলাতে আসরে নেমে তাঁকে ‘ছোটা ভীম’ বললেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী স্মৃতি ইরানি। যা শুনে কংগ্রেসের পাল্টা কটাক্ষ, কৌরবরা কি জানেন ভীম আসলে পাণ্ডবেরই প্রতিনিধি? একই সঙ্গে তাদের বিদ্রুপ, ‘‘ইয়েল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে যে ভাবে পাশ করেছেন স্মৃতি, তাতে এগুলো তাঁর জানার কথা নয়!’’

আরও পড়ুন: লিঙ্গায়েত প্রেম নেই কংগ্রেসের: অমিত

ভোট যত এগোচ্ছে, নানা বিষয় নিয়ে কংগ্রেস-বিজেপি তরজা তত বাড়ছে। এলিয়ট অ্যাল্ডারসন নামে যে ফরাসি হ্যাকার ক’দিন আগে দেখিয়েছিলেন, ‘নমো অ্যাপ’-এর তথ্য ঘুরপথে মার্কিন সংস্থার কাছে যাচ্ছে, তাঁরই নতুন দাবি, কংগ্রেসের অ্যাপের তথ্য যাচ্ছে সিঙ্গাপুরে। রক্তের স্বাদ পেয়ে বিজেপি আজ সকাল থেকে রাহুল-বধে নামে। তড়িঘড়ি নিজেদের অ্যাপটি মুছে দেয় কংগ্রেস। যুক্তি দেখায়, ওই অ্যাপের মাধ্যমে সদস্যপদ গ্রহণের আগ্রহ নেই দলের। মাত্র ১৫ হাজার সদস্য ছিলেন। আর ‘নমো অ্যাপ’-এ ৫০ লক্ষ। একই সঙ্গে কংগ্রেসের অভিযোগ, বিতর্ক শুরু হতেই নিঃশব্দে দিন তিনেক আগে নিজের অ্যাপের ‘গোপনীয়তা নীতি’ বদলে ফেলেছেন মোদী।

রাহুল গাঁধীর বক্তব্য, প্রধানমন্ত্রী প্রযুক্তির মাধ্যমে দেশবাসীর সঙ্গে যোগাযোগ করতে চান, করুন। সেটি ‘পিএমও অ্যাপ’-এ করুন। নিজের পদ খাটিয়ে ‘নমো অ্যাপ’ দিয়ে ব্যক্তিগত তথ্য জোগাড় করছেন কেন? এখন তো ১৩ লক্ষ এনসিসি সদস্যকেও জোর করে ওই অ্যাপ ব্যবহার করতে বলা হচ্ছে। কংগ্রেসের বক্তব্য, যত অ্যাপ আছে, তার মধ্যে ‘নমো অ্যাপ’ই সবথেকে বেশি তথ্য নেয়। যাতে সব দেশবাসীর প্রতিটি মুহূর্তের উপরে নজরদারি করা যায়।

চাপের মুখে বিজেপি আজ স্বীকার করেছে, ‘নমো অ্যাপ’টি প্রধানমন্ত্রী চালান না, ওটি চালায় বিজেপি। ফলে স্বাভাবিক ভাবেই আরও সুর চড়েছে কংগ্রেসের।

বিজেপি আজ বলেছে, রাহুল গাঁধী প্রযুক্তি জানেন না। তাই আবোল-তাবোল বকছেন। কাল বলবেন, ‘নমো অ্যাপ’-এ সরাসরি যোগ আছে ভোটযন্ত্রে! আর প্রধানমন্ত্রী দফতরে বসে ‘হ্যাক’ করে একের পর এক ভোট জিতছেন!’’ দলের এক নেতার কথায়, ‘‘রাহুল খোঁজ নিয়ে দেখুন, তাঁর দলের নেতাদের কিংবা যে কোনও সংবাদমাধ্যমের অ্যাপেও এতটাই তথ্য নেওয়া হয়, যাতে কোনও ব্যক্তির পছন্দসই তথ্য পেশ করা যায়।’’ এই প্রসঙ্গ টেনেই স্মৃতি টুইটে বলেন, ‘‘রাহুল গাঁধীজি, এমনকী ‘ছোটা ভীম’ও জানে, কারও তথ্যের অনুমতি চাওয়া মানে গোয়েন্দাগিরি নয়।’’

লড়াইটা যতটা না প্রযুক্তির, তার থেকে বেশি রাজনীতির।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE