কংগ্রেস সাংসদ রাহুল গান্ধী। —ফাইল চিত্র ।
রাহুল গান্ধীর বিরুদ্ধে মানহানির মামলায় প্রথম শ্রেণির বিচার বিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেট (জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ফার্স্ট ক্লাস বা জেএমএফসি)-এর কাছে রিপোর্ট তলব করল পুণের জেলা দায়রা আদালত। বিনায়ক দামোদর সাভারকরের নাতি সাত্যকি রাহুলের বিরুদ্ধে এই মানহানির মামলা করেছিলেন। সেই মামলার শুনানি চলছে জেএমএফসি-র কাছে। তা নিয়েই সাত্যকি গত ৫ অগস্ট পুণের জেলা দায়রা আদালতের দ্বারস্থ হন। সাত্যকির আবেদন ছিল, রাহুলের বিরুদ্ধে করা তাঁর মামলা যেন ‘যোগ্য আদালতে’ স্থানান্তরিত করা হয়। তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করেন, এই মামলায় জেএমএফসির কাছে ‘ন্যায্য ন্যায়বিচার পাওয়া না-ও যেতে পারে’। এর পরই শুক্রবার জেএমএফসির কাছে এই মামলা সংক্রান্ত রিপোর্ট তলব করলেন পুণের জেলা দায়রা আদালতের বিচারক এস সি চন্দক।
প্রসঙ্গত, মাস কয়েক আগে লন্ডনে একটি অনুষ্ঠানে যোগ দিতে গিয়েছিলেন রাহুল। সেখানে বক্তৃতা করার সময় সাভারকারের প্রসঙ্গ উঠে আসে। সাত্যকির দাবি ছিল, সাভারকরের সম্পর্কে রাহুল যে মন্তব্য করেছেন তা অবমাননাকর। এর পরই রাহুলের বিরুদ্ধে মানহানির মামলাটি করেন সাত্যকি।
অন্য দিকে, কেরলের ওয়েনাড় নয়, আসন্ন সাধারণ নির্বাচনে উত্তরপ্রদেশের অমেঠী থেকে নির্বাচন লড়তে পারেন সাংসদ রাহুল গান্ধী। জল্পনা উস্কে দিয়ে শুক্রবার তেমনটাই জানিয়েছেন, উত্তরপ্রদেশ কংগ্রেসের নবনিযুক্ত সভাপতি অজয় রাই। শুক্রবার এক সাংবাদিক সম্মেলনে উপস্থিত হয়ে অজয় বলেন, ‘‘রাহুল গান্ধী অবশ্যই অমেঠী থেকে লোকসভা নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন। অমেঠীর মানুষ তাঁর সঙ্গে রয়েছেন।’’ যদিও এ বিষয়ে রাহুল এখনও কোনও মন্তব্য করেননি।
এক সময় কংগ্রেস দুর্গ বলে পরিচিত ছিল অমেঠী। ২০০৪ সাল শুরু করে পর পর তিন বারের লোকসভা নির্বাচনে অমেঠী থেকে জিতে সাংসদ হন রাহুল। তার আগে সনিয়া গান্ধী এবং রাজীব গান্ধীও ওই কেন্দ্র থেকে জিতে সাংসদ হয়েছিলেন। কিন্তু অমেঠীতে কংগ্রেসের সেই দুর্গের পতন হয় ২০১৯ সালে। অমেঠীতে গান্ধী পরিবারের জমি শক্ত হওয়া সত্ত্বেও, প্রায় ৫৫ হাজার ভোটে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী স্মৃতি ইরানির কাছে হেরে যান রাহুল। পরে ওয়েনাড় থেকে জিতে লোকসভার সাংসদ হন।
কিন্তু অমেঠীর জনগণ ২০১৯ সালের ভুল ২০২৪ সালে শুধরে নিতে চান বলেই দাবি করেছেন অজয়। তাঁর কথায়, ‘‘বিজেপিকে নিয়ে অমেঠীর মানুষ বিরক্ত। বিজেপি তাঁদের যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল, তা পালন করতে ব্যর্থ হয়েছে। কংগ্রেস কর্মীরা এবং অমেঠীর জনগণের দাবি, তাঁরা ভুল শুধরে নিতে চান। রাহুল গান্ধীর জয় নিশ্চিত করার জন্য অমেঠীর সাধারণ মানুষ তৈরি রয়েছে।’’
তবে রাহুল কি নিজে অমেঠী থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার কথা জানিয়েছেন? জবাবে উত্তরপ্রদেশের কংগ্রেস সভাপতি বলেন, ‘‘রাহুল অমেঠী থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করুন এটা অমেঠীর জনগণ এবং কংগ্রেস কর্মীরা চান।’’
রাহুলের পাশাপাশি প্রিয়ঙ্কা গান্ধী বঢড়ার কোন লোকসভা কেন্দ্র থেকে কংগ্রেস প্রার্থী হওয়া উচিত তারও ইঙ্গিত দিয়েছেন অজয়। তিনি বলেন, ‘‘প্রিয়ঙ্কা যদি বারাণসী আসন থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার সিদ্ধান্ত নেন, তা হলে কংগ্রেস কর্মীরা তাঁর জয় নিশ্চিত করার জন্য দিন-রাত কাজ করবে।’’
প্রসঙ্গত, ২০১৪ এবং ২০১৯ সালে লোকসভা নির্বাচনে বারাণসী থেকে বিজেপির প্রার্থী হন খোদ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। দু’বারই তিনি ব্যাপক ব্যবধানে জয়লাভ করেন। ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনের সময়ও জল্পনা তৈরি হয়েছিল, বারাণসীতে থেকে মোদীর বিরুদ্ধে দাঁড়াতে পারেন প্রিয়াঙ্কা। কিন্তু কংগ্রেস শেষ মুহূর্তে এই আসন থেকে অজয়কে প্রার্থী করেছিল। ২০১৪ সালের লোকসভা নির্বাচনেও অজয় বারাণসী থেকে কংগ্রেসের প্রার্থী হয়েছিলেন এবং মোদীর কাছে হেরে যান।
তবে অজয়ের দাবি যদি সত্যি হয়, তা হলে কংগ্রেস পরিবারের পুত্র এবং কন্যার নির্বাচনী লড়াই সহজ হবে না বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের একাংশ। এক দিকে রাহুলকে টেক্কা দিতে হতে পারে বিজেপির দাপুটে নেত্রী স্মৃতি ইরানিকে, অন্য দিকে, প্রিয়ঙ্কার নির্বাচনী লড়াই হতে পারে খোদ প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে। তবে রাহুল বা প্রিয়ঙ্কা, কেউই এ বিষয়ে কোনও মন্তব্য করেননি। আর সেই কারণেই অজয়ের দাবিকে নিছক জল্পনা বলেও উড়িয়ে দিচ্ছেন ভোটপণ্ডিতদের কেউ কেউ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy