ফ্রেম-বন্দি: বন্ধ হচ্ছে ধানবাদ-চন্দ্রপুরা রেললাইন। মোবাইলে সেই লাইনের ছবি তুলে রাখছেন এক যাত্রী। ছবি: চন্দন পাল
ধানবাদ-চন্দ্রপুরা লাইনে ট্রেন চলাচল বন্ধ করতে গিয়ে ১৩টি মেল ও এক্সপ্রেস ট্রেনকে পুরোপুরি বাতিলই করে দিল রেল বোর্ড! এর ফলে কয়েক লক্ষ যাত্রী বিপুল সমস্যায় পড়বেন।
ওই লাইনের নীচে খনির ভিতরে আগুন জ্বলায় ধস নামার আশঙ্কায় আগামী ১৫ জুন থেকে ওই রুটে ২০টি মেল-এক্সপ্রেস ও ৬টি প্যাসেঞ্জার ট্রেনের যাতায়াত বন্ধের সিদ্ধান্ত আগেই নিয়েছিল রেল মন্ত্রক। সোমবার তারা জানিয়ে দিল, ওই ২০টি মধ্যে ১৩টি মেল-এক্সপ্রেস ট্রেন এবং ৬টি প্যাসেঞ্জার ট্রেনকে একেবারেই বাতিল করা হচ্ছে। বাকি সাতটি মেল-এক্সপ্রসকে ঘুরপথে চালানোর ব্যবস্থা করা হবে।
রেল সূত্রের খবর, ২০০৭ সালে ধানবাদ-ঝরিয়া লাইনও একই কারণে বন্ধ করে দিতে হয়। যা এখনও চালু হয়নি। কয়েক লক্ষ যাত্রীকে বিপাকে ফেলে বন্ধ হয়ে যাওয়া এই লাইনও কবে চালু হবে, তা স্পষ্ট জানাতে পারেনি মন্ত্রক। বাতিল ট্রেনগুলির মধ্যে তিনটি মেল-এক্সপ্রেস হাওড়া ও কলকাতা স্টেশন থেকে ছাড়ে। সপ্তাহে তিন দিন চলা ওই তিনটি ট্রেন হল ভোপাল-হাওড়া, কলকাতা-অজমের এবং কলকাতা-আমদাবাদ এক্সপ্রেস। প্যাসেঞ্জার ট্রেনের মধ্যে রয়েছে রাঁচি-হাওড়া ইন্টারসিটি।
এর ফলে গ্র্যান্ড কর্ড লাইনে গোমো স্টেশনের গুরুত্ব বাড়তে চলেছে। রেল বোর্ডের সদস্য (ট্র্যাফিক) মহম্মদ জামশেদ বলেন, ‘‘ধানবাদ থেকে চন্দ্রপুরা যাওয়ার বদলে ট্রেনগুলি এখন গোমো স্টেশনে আসবে। সেখানে ইঞ্জিন বদল হয়ে ট্রেনগুলি ফের চন্দ্রপুরার রাস্তা ধরবে।’’ যে ট্রেনগুলি গোমো হয়ে ঘুরিয়ে দেওয়া হচ্ছে সেগুলি হল, হাওড়া-রাঁচী শতাব্দী, হাওড়া-জবলপুর শক্তিপুঞ্জ এবং পটনা-হাটিয়া পাটলিপুত্র এক্সপ্রেস-সহ আরও চারটি ট্রেন।
রেল সূত্রের খবর, বাতিল হওয়া ট্রেনগুলির মধ্যে রয়েছে, নিউ জলপাইগুড়ি-রাঁচী বনাঞ্চল এক্সপ্রেস (দৈনিক), রাঁচী-হাওড়া ইন্টারসিটি এক্সপ্রেস (সপ্তাহে তিন দিন), রাঁচী-কামাক্ষা (সপ্তাহে দু’ দিন)। সাপ্তাহিক ট্রেনগুলির মধ্যে রাঁচী-নিউ জলপাইগুড়ি, ভোপাল-হাওড়া, কলকাতা-আমদাবাদ, কলকাতা অজমের, সুরাত-মালদহ এক্সপ্রেস। বাতিল ট্রেনগুলির ভবিষ্যৎ নিয়ে ধানবাদ ডিভিশনের ডিআরএম মনোজকৃষ্ণ আখোরি বলেন, ‘‘হাওড়া-দিল্লি লাইনে বর্তমান ক্ষমতার চেয়ে ৫০ শতাংশ বেশি গাড়ি চলছে। তার মধ্যে সাতটি এক্সপ্রেস ট্রেনকে নতুন করে জায়গা দিতে হচ্ছে। ভবিষ্যতে লাইনে ট্রেন চলাচলের ক্ষমতা বাড়লে একে একে বাতিল ট্রেন ফিরিয়ে আনা হবে।’’
এই সিদ্ধান্তে ভাল আর্থিক ক্ষতি হবে রেলেরও। বর্তমানে ওই লাইনে ফি-বছর প্রায় ১.২৪ কোটি যাত্রী যাতায়াত করেন। যা থেকে রেলের ঘরে আসে প্রায় ২৫০ কোটি টাকা। এই সিদ্ধান্তের জেরে যার একটি বড় অংশ হারাতে হবে রেলকে।
রেল কর্তারা জানাচ্ছেন, ধানবাদ-চন্দ্রপুরা লাইনের দু’পাশের এলাকা কয়লা খনি অঞ্চল হওয়ায় বছরে প্রায় ২৫ মেট্রিক টন কয়লা বহন করে ২৫০০ কোটি টাকা আয় করে রেল। এ বার ওই টাকাও আর আসবে না।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy