দীর্ঘ দিনের ট্র্যাডিশন ভেঙে এ বারে বিএসএফের দেওয়া ইদের মিষ্টি নিল না পাকিস্তান। সীমান্তে সংঘর্ষবিরতি লঙ্ঘন এবং ড্রোন ইস্যুকে কেন্দ্র করে দু’দেশের সম্পর্কের উত্তেজনা বৃদ্ধির যে লক্ষণ সম্প্রতি দেখা যাচ্ছিল, মিষ্টি প্রত্যাখ্যানের ঘটনা তাতে নতুন মাত্রা যোগ করল।
ইদে ওয়াঘা সীমান্তে দুই দেশের মধ্যে মিষ্টি বিনিময়ের প্রথা বহু দিনের। কিন্তু এ বারে সেই ট্র্যাডিশন ভেঙে গেল। সূত্রের খবর, ইদ উপলক্ষে শনিবার বিএসএফের তরফে পাক রেঞ্জার্সকে মিষ্টি দেওয়া হয়। কিন্তু তা নিতে অস্বীকার করে পাক সেনা। বিএসএফের এক আধিকারিকের দাবি, “চলতি বছর ইদ উপলক্ষে মিষ্টি বিনিময় হয়নি। বিষয়টি নিয়ে দু’পক্ষের কথা হয়েছিল, কিন্তু পাকিস্তানের তরফে উত্সাহ দেখানো হয়নি।”
এবং, ইদের দিনেও সীমান্তে অব্যাহত রইল অশান্তি। সংঘর্ষবিরতি চুক্তি লঙ্ঘন করে রাজৌরিতে গুলি চলল সীমান্তের ওপার থেকে, শ্রীনগরে উড়ল পাকিস্তান এবং আইএসআইএসের পতাকা। তবে সব কিছুকেই ছাপিয়ে গেল বিএসএফের তরফে ইদের মিষ্টি না নেওয়াকে ঘিরে পাক সেনাবাহিনীর অসৌজন্য।
ব্রিক্স সম্মেলনের ফাঁকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে পাক প্রধানমন্ত্রীর বৈঠকের পর দু’দেশের বরফ গলার যে ইঙ্গিত মিলেছিল, তার পর পাকিস্তানের তরফে কিছু বক্তব্য এবং কিছু আচরণ পরিবেশকে ক্রমশ জটিল করে তোলে। কাশ্মীর প্রসঙ্গ না রাখলে আলোচনার সম্ভাবনা কার্যত খারিজ করে দেন পাকিস্তানের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা সরতাজ আজিজ। আজিজের হুমকিকে ‘ঘরের চাপ সামলানোর চেষ্টা’ বলে নয়াদিল্লি উড়িয়ে দিতে চাইলেও পরিবেশ স্বাভাবিক হওয়ার কোনও লক্ষ্মণই দেখা যায়নি। উল্টে আন্তর্জাতিক সীমান্ত বরাবর বারবার সংঘর্ষবিরতি চুক্তি লঙ্ঘন করেছে পাকিস্তান। পাক হামলায় দিন দু’য়েক আগে এক গ্রামবাসী এবং এক বিএসএফ জওয়ানের মৃত্যু হয়। হামলা হলে তার যোগ্য জবাব দেওয়া হবে বলে জানান বিদেশসচিব এস জয়শঙ্কর।
শ্রীনগরে জনতা-পুলিশ সংঘর্ষ। ছবি: এপি।
শুক্রবার রাত থেকে ফের অশান্ত হয়ে ওঠে সীমান্ত। রাত সাড়ে ন’টা থেকে রাজৌরির নৌসেরা সেক্টরে বিনা প্ররোচনায় হামলা চালায় পাক সেনা। পাল্টা জবাব দেয় ভারতীয় সেনাবাহিনী। ঘণ্টা দু’য়েক চলে দু’পক্ষের সংঘর্ষ। তবে এ দিনের হামলায় কেউ হতাহত হননি বলে জানানো হয়েছে সেনার তরফে।
এ দিন ইদের প্রার্থনার পরই অশান্ত হয়ে ওঠে অনন্তনাগ-সহ বেশ কয়েকটি জেলা। নিরাপত্তাবাহিনীর ওপর পাথর ছোড়ার পাশাপাশি ওড়ানো হয় পাকিস্তান এবং আইএসআইএসের পতাকাও। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনতে কাঁদানে গ্যাসের শেল ফাটায় পুলিশ। তবে এই ঘটনায় কেউ হতাহত হয়নি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy