Advertisement
২৩ ডিসেম্বর ২০২৪

যে লক-আপের উদ্বোধনে ছিলেন, সেখানেই রাত কাটল চিদম্বরমের, হেফাজতে চার দিন

আইএনএক্স মিডিয়া আর্থিক কেলেঙ্কারি মামলায় গ্রেফতারের পর চিদম্বরমকে আজ বিশেষ সিবিআই আদালতে পেশ করে পাঁচ দিনের জন্য হেফাজতে চেয়েছিলেন তদন্তকারীরা। চার দিন হেফাজত মঞ্জুর করেছেন বিচারক অজয়কুমার কুহার। 

দিল্লির আদালতে পি চিদম্বরম। বৃহস্পতিবার। এএফপি

দিল্লির আদালতে পি চিদম্বরম। বৃহস্পতিবার। এএফপি

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৩ অগস্ট ২০১৯ ০৪:০৩
Share: Save:

‘‘স্যর, একেবারে আন্তর্জাতিক মানের লক-আপ তৈরি করা হয়েছে’’— আট বছর আগে পি চিদম্বরমকে নতুন সদর দফতর ঘুরিয়ে দেখানোর সময় বলেছিলেন সিবিআই কর্তারা। দিনটা ছিল ২০১১-এর ৩০ জুন। লোদী রোডে নয়া দফতরের উদ্বোধনে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহের সঙ্গে স্বারাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে হাজির ছিলেন চিদম্বরমও।

বুধবার সেই লক-আপেই রাত কাটাতে হল চিদম্বরমকে। সিবিআই ‘আন্তর্জাতিক মানের’ বলে দাবি করলে কী হবে, সেখানে ঢোকার আগে প্রশ্ন করলেন, ‘ইঁদুর নেই তো?’ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ঠিক হয়ে গেল, আরও অন্তত চার দিন ওই লক-আপেই থাকতে হবে তাঁকে।

আইএনএক্স মিডিয়া আর্থিক কেলেঙ্কারি মামলায় গ্রেফতারের পর চিদম্বরমকে আজ বিশেষ সিবিআই আদালতে পেশ করে পাঁচ দিনের জন্য হেফাজতে চেয়েছিলেন তদন্তকারীরা। চার দিন হেফাজত মঞ্জুর করেছেন বিচারক অজয়কুমার কুহার।

লক-আপে অবশ্য খাট, সোফা, শীতাতপ নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা মিলিয়ে স্বাচ্ছন্দ্যের অভাব হবে না চিদম্বরমের। আদালতের নির্দেশে দিনে আধ ঘণ্টা করে পরিবার ও আইনজীবীদের সঙ্গে দেখাও করতে পারবেন। তবে জেরার বাইরে সব সময় সিসিক্যামেরার নজরদারি থাকবে। ইন্দ্রাণী বা পিটার মুখোপাধ্যায়ের মুখোমুখি বসিয়ে জেরা করা হতে পারে চিদম্বরমকে। সিবিআইয়ের পরে ইডি তাঁকে জেরা করার জন্য হেফাজতে চাইবে।

এক রাত লক-আপে কাটালেও আজ ৭৩ বছর বয়সী চিদম্বরমকে দেখে মনে হয়েছে, তাঁর মনের জোর এখনও টোল খায়নি। দেড় ঘণ্টা শুনানির সময় ঠোঁটের কোণে স্মিত হাসি ঝুলিয়ে ঠায় দাঁড়িয়ে থেকেছেন কাঠগড়ায়। বিচারক তাঁকে চেয়ার দিতে বললেও বলেছেন, দাঁড়িয়েই বেশ রয়েছেন। শুধু তা-ই নয়। কংগ্রেসের দুই পোড়খাওয়া আইনজীবী কপিল সিব্বল, অভিষেক মনু সিঙ্ঘভির সওয়ালের পরে, নিজেই মুখ খুলেছেন।

সিবিআইয়ের প্রধান যুক্তি ছিল, ২০১৮-র ৬ জুন চিদম্বরমকে ডেকে প্রশ্ন করা হয়। তিনি উত্তর দেননি। সিব্বল, মনু সিঙ্ঘভিরা বলেন, ‘উত্তর না দেওয়ার’ বা ‘নীরব থাকার’ সাংবিধানিক অধিকার তাঁর আছে। সিবিআইয়ের তরফে সলিসিটির জেনারেল তুষার মেহতা বলেন, ‘‘অভিযুক্তের দুর্ধর্ষ ক্ষমতা রয়েছে উত্তর না দেওয়ার, সহযোগিতা না করার।’’ তাঁর দাবি, যত ক্ষণ মাথার উপরে গ্রেফতারি থেকে ‘সুরক্ষার ছাতা’ থাকবে, তত দিন চিদম্বরমের কাছ থেকে উত্তর মিলবে না। সেই কারণেই তাঁকে আর জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তলব না করে হেফাজতে নিয়ে জেরা করার সিদ্ধান্ত হয়। অনেক নথির ভিত্তিতে তাঁকে জেরা করা দরকার।

চিদম্বরম পাল্টা বিচারককে বলেন, ‘‘২০১৮-র ১৮ জুনের জিজ্ঞাসাবাদের রেকর্ড চেয়ে পাঠান। এমন কোনও প্রশ্ন নেই, যার উত্তর আমি দিইনি।’’

বুধবার রাতে গ্রেফতারের পর আধ ঘণ্টা জেরা করা হয়েছিল চিদম্বরমকে। রাতে সিবিআই ক্যান্টিনের খাবার দেওয়া হলেও, তিনি খেতে চাননি। তাঁর স্বাস্থ্য পরীক্ষা হয়। আজ সকালে আর্থিক অপরাধ দমন শাখার অফিসারেরা আধ ঘণ্টা প্রাথমিক জেরা করার পরে বিকেল সওয়া তিনটে নাগাদ আদালতে আনা হয় তাঁকে।

এ দিকে, তাঁর আগাম জামিনের আর্জি খারিজ করে দিল্লি হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে চিদম্বরম সুপ্রিম কোর্টে যে আর্জি জানিয়েছেন, শুক্রবার তার শুনানি হবে বিচারপতি আর ভানুমতী ও বিচারপতি এ এস বোপান্নার ডিভিশন বেঞ্চে।

অন্য বিষয়গুলি:

P. Chidambaram Congress INX Media INX Media Scam
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy