প্রতীকী চিত্র।
তৃণমূল কংগ্রেস সূত্র জানাচ্ছে, গোয়ায় বিধানসভা ভোটে মহারাষ্ট্রবাদী গোমন্তক পার্টিকে ন’টি আসন ছাড়ার পরেও আরও একটি দলকে জোটে নেওয়ার জায়গা রয়েছে তাদের। আবার সেই তৃণমূলই দলীয় মুখপত্রের সম্পাদকীয়তে কংগ্রেসকে উল্লেখ করছে বিজেপির ‘দোসর’ হিসেবে!
কংগ্রেসের বক্তব্য, তৃণমূলের সঙ্গে জোটের প্রশ্নই উঠছে না। তারা কংগ্রেসের দল ভাঙিয়ে নেওয়া নেতাদের জেতার আসন দেওয়ার জন্যই আজ কংগ্রেসকে জোটে চাইছে।
এনসিপি নেতা শরদ পওয়ার বলছেন, তৃণমূল, এনসিপি, কংগ্রেস আলোচনায় বসেছে। তাঁরা চান সমমনোভাবাপন্ন দলগুলি একজোট হয়ে বিজেপির বিরুদ্ধে লড়ুক।
আবার কংগ্রেসের হয়ে টিকিট পাওয়ার সম্ভাবনা কম, এ রকম নেতাদের দাবি, তৃণমূল এবং গোমন্তক পার্টির সঙ্গে কংগ্রেস আসন সমঝোতা করে বৃহত্তর বিরোধী জোট গড়লে, গোয়া-জয় প্রায় নিশ্চিত।
সব মিলিয়ে, ভোটমুখী গোয়ার বিরোধী রাজনীতি এক মস্ত ধাঁধার সামনে, এমনটাই মনে করছে স্থানীয় রাজনৈতিক শিবির। গত সপ্তাহে গোয়ায় তৃণমূলের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেত্রী মহুয়া মৈত্রের টুইট সামনে আসার পর থেকেই নতুন করে রাজনৈতিক চাঞ্চল্য শুরু হয়। মহুয়া লিখেছিলেন, গোয়ায় বিজেপিকে হারাতে বদ্ধপরিকর তৃণমূল। তাঁর টুইটে তিনি যুক্ত করেছিলেন কংগ্রেসকেও।
রাজনৈতিক শিবিরের মতে, সাধারণ ভাবে বিরোধী দলগুলি কোনও বিশেষ রাজ্যে নিজেদের সুবিধা মাফিক আসন সমঝোতা করবে— এর মধ্যে নতুনত্ব কিছু নেই। কিন্তু গোয়ায় নিজের প্রচারের প্রথম দিন থেকে নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বিজেপির পাশাপাশি একই সুরে কংগ্রেসকেও আক্রমণ করে গিয়েছেন। গোয়া কংগ্রেসের একের পর এক নেতা দল ছেড়ে যোগ দিয়েছেন তৃণমূলে। স্বাভাবিক ভাবেই কংগ্রেস-তৃণমূল তিক্ততা বেড়েছে। আজ প্রশ্ন উঠছে, ভোটের ঠিক এক মাস আগে পরিস্থিতির এমন কী পরিবর্তন ঘটল, যাতে কংগ্রেস ও তৃণমূলের মধ্যে আসন সমঝোতা নিয়ে রাজনৈতিক গুঞ্জন শুরু হতে পারে?
তৃণমূল সূত্রে জানা যাচ্ছে, ৪০টি আসনের মধ্যে ইতিমধ্যেই ৯টি আসন গোমন্তক পার্টিকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে সঙ্গত ভাবেই। ফলে হাতে যে ৩১টি আসন রয়েছে, তার সবক’টিতে তৃণমূলের প্রার্থী দিয়ে জেতানো রাজনৈতিক ভাবে অবাস্তব। প্রাথমিক ভাবে ভাবা হয়েছিল, অরবিন্দ কেজরীওয়ালের আপ-এর সঙ্গে সহজেই আসন সমঝোতা হয়ে যাবে তৃণমূলের। কিন্তু কার্যক্ষেত্রে তা এখনও ঘটেনি। সে ক্ষেত্রে গোয়ায় বিজেপিকে হারিয়ে সরকার গড়তে চাইলে কংগ্রেস ছাড়া এখন তৃণমূলের কাছে বিকল্প নেই বললেই চলে।
কংগ্রেসের ভিতরেও প্রতিটি আসনে একাধিক প্রার্থীর ভিড় রয়েছে। অনেক নেতাই বুঝে যাচ্ছেন যে, তাঁরা কংগ্রেসে থেকে টিকিট পাবেন না। সোমবারই বিজেপির সঙ্গে দীর্ঘদিনের সম্পর্ক ত্যাগ করেছেন হেভিওয়েট নেতা মাইকেল লোবো। তিনি তাঁর দলবল নিয়ে কংগ্রেস যোগ দিলে, সেই ভিড় আরও বাড়বে। ফলে কংগ্রেসের মধ্যম এবং নিচের স্তর থেকেও চাপ আসছে বিরোধী দলগুলির একত্রে জোট গড়ার। তৃণমূলের বক্তব্য, কংগ্রেস যদি আসন সমঝোতা করতে চায়, তা হলে আপত্তি নেই। কিন্তু শর্ত হল, তৃণমূল এবং গোমন্তক পার্টির লড়াইয়ের মিলিত আসনের থেকে কংগ্রেসের আসন কম হতে হবে।
এই ধাঁধার মধ্যে তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে পওয়ার বলেছেন, “তৃণমূল, কংগ্রেস, এনসিপি আলোচনা করছে। আমরা আমাদের আসনের চাহিদার কথা জানিয়ে দিয়েছি। শীঘ্রই একটা সিদ্ধান্ত হবে।” তাঁর কথায়, “গোয়ায় পরিবর্তন প্রয়োজন। বিজেপিকে ক্ষমতাচ্যুত করা জরুরি।” তবে এই সব জল্পনার মধ্যে জল ঢালতে চেয়ে গোয়ার কংগ্রেস নেতা দীনেশ গুন্ডু রাও জানিয়েছেন, “তৃণমূলের সঙ্গে জোটের আলোচনা হচ্ছে না। তৃণমূলের চেষ্টা সত্ত্বেও কংগ্রেস এ কথা সাফ জানিয়ে দিয়েছে। প্রথম দিন থেকেই তৃণমূল বিজেপির পরিবর্তে কংগ্রেসকে আক্রমণ করে গিয়েছে। তারা আমাদের বিধায়কদের কেড়ে নিয়ে এখন তাঁদেরই জেতানোর জন্য আসন দিতে চাইছে!” .
এই টানাপড়েনের মধ্যে গোয়াবাসীর জন্য আজ একটি আবাসন যোজনার প্রতিশ্রতি দিয়েছে তৃণমূল। আজ সাংবাদিক সম্মেলন করে তৃণমূল-গোমন্তক পার্টির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, সরকার গড়লে, আড়াইশো দিনের মধ্যে ১৯৭৬ সালের আগে থাকে গোয়ায় বসবাসকারী সমস্ত পরিবারকে তাদের জমির পাট্টা দেওয়া হবে। গৃহহীন পরিবারদের জন্য ৫০ হাজার ভর্তুকিপ্রাপ্ত বাড়ির ব্যবস্থাও করা হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy