Advertisement
০২ নভেম্বর ২০২৪

নাগরিকপঞ্জি তদন্তকারীর নামই নেই তালিকায়!

অসমকে এক অনিশ্চিত ও অশান্ত ভবিষ্যতের দিকে ঠেলে দিচ্ছে কেন্দ্র। কৃষক নেতা অখিল গগৈ আবেদন জানানো ও প্রমাণপত্র জোগাড়ের জন্য পর্যাপ্ত সময় দেওয়ার আবেদন জানিয়েছেন।

এনআরসি তালিকা নিয়ে আধিকারিকরা। নিজের নাম এনআরসি-তে আছে কিনা, জানতে জানালায় ভিড় অসমবাসীর। ছবি: রয়টার্স

এনআরসি তালিকা নিয়ে আধিকারিকরা। নিজের নাম এনআরসি-তে আছে কিনা, জানতে জানালায় ভিড় অসমবাসীর। ছবি: রয়টার্স

নিজস্ব সংবাদদাতা
গুয়াহাটি শেষ আপডেট: ০১ অগস্ট ২০১৮ ০৩:৩৯
Share: Save:

মহম্মদ নুরুল ইসলাম পেশায় শিক্ষক। এনআরসি-তে আবেদনকারীদের বংশবৃক্ষ যাচাই করার গুরুদায়িত্ব ছিল তাঁর উপরে। সেই তিনি ও তাঁর সন্তানরা তালিকার বাইরে! বরপেটার কলগাছিয়ার বাসিন্দা নুরুল ইসলাম যে ‘ডি-ভোটার’ তালিকায়!

বাদ পড়া ৪০ লক্ষ আবেদনকারীর মধ্যে সওয়া লক্ষ ডি-ভোটার ও তাঁদের বংশধরদের নাম আছে। ৩০ অগস্ট থেকে ২৮ সেপ্টেম্বরের মধ্যে নাম না থাকা ব্যক্তিরা আবেদন করতে পারবেন। কিন্তু নুরুলবাবু এনআরসির ৪৩০০ জন ‘ইনভেস্টিগেটর’দের এক জন হয়েও বাদ। প্রশ্ন উঠছে, এক জন ডি-ভোটার কি করে অন্যদের নাগরিকত্বের দাবি যাচাই করেন? এ দিকে ডি-ভোটারের তালিকা থেকে মুক্তি না পেলে তাঁর নাম এনআরসি-তে ঢুকবেও না। অন্য দিকে, ভারতের প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি ফকরুদ্দিন আলি আহমেদের ছেলে পারভেজ আহমেদ বা তাঁর পরিবারের নাম উঠলেও, রাষ্ট্রপতির ভাই, প্রয়াত এক্রামুদ্দিন আলি আহমেদের নাম লিগ্যাসি ডেটায় না থাকায় তাঁর পুত্র জিয়াউদ্দিনের নামও তালিকা থেকে বাদ পড়েছে। কামরূপের রঙিয়ায় থাকা আহমেদ পরিবার উদ্বেগে। প্রশ্ন উঠছে, রাষ্ট্রপতির ভাই-ভাতিজার ভারতীয়ত্ব নিয়ে সন্দেহের অবকাশ কোথায়?

ফের আবেদনের জন্য সময় এক মাসেরও কম। চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ হবে চলতি বছর ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে। কার্যত দু’মাসের মধ্যে ওই চল্লিশ লক্ষ মানুষের সব নথি যাচাই শেষ করতে হবে এনআরসি দফতরকে। বিভিন্ন মহলের দাবি, সময় মোটেই যথেষ্ট নয়। বিরোধীদের অভিযোগ, চিহ্নিত বিদেশিদের ভবিষ্যতের প্রশ্ন ধামাচাপা দিয়ে নতুন বছরের প্রথম দিন থেকে অসমকে এক অনিশ্চিত ও অশান্ত ভবিষ্যতের দিকে ঠেলে দিচ্ছে কেন্দ্র। কৃষক নেতা অখিল গগৈ আবেদন জানানো ও প্রমাণপত্র জোগাড়ের জন্য পর্যাপ্ত সময় দেওয়ার আবেদন জানিয়েছেন।

আরও পড়ুন: আগে তো প্রথম ধাপ হোক, বলছেন অমিত

যে প্রশ্নটি পাশ কাটাচ্ছে কেন্দ্র ও রাজ্য, তার সম্ভাব্য পথ দেখিয়েছেন রাজ্যের প্রাক্তন ডিজিপি হরেকৃষ্ণ ডেকা। তাঁর মতে, ‘‘কয়েক লক্ষ ‘বিদেশিকে’ বন্দি রাখা সম্ভব নয়। তিব্বতি শরণার্থীদের মতো ‘বিদেশি আইন’ সংশোধন করে তাঁদের ‘আবাসিক বিদেশি’-র মর্যাদা দিয়ে রাজনৈতিক অধিকারহীন শরণার্থী করে রেখে দেওয়ার সুযোগ রয়েছে।

অন্য বিষয়গুলি:

Assam Assam NRC Final Draft NRC
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE