অনুমান ছিল, সব নোট জমা পড়বে না। এখন আবার মনে করা হচ্ছে— হিসেবের থেকেও বেশি নোট জমা পড়ে যেতে পারে ব্যাঙ্কে।
নরেন্দ্র মোদীর এক ঘোষণায় অচল হয়ে গিয়েছিল ১৫.৪ লক্ষ কোটি টাকারও বেশি মূল্যের ৫০০-১০০০ টাকার নোট। অর্থ মন্ত্রকের কর্তাদের অনুমান ছিল, সব নোট ব্যাঙ্কে জমা পড়বে না। জমা করতে গেলে আয়কর দফতর বা ইডি-র নজরে পড়তে হবে বলে কালো টাকার কারবারিরা নোট নষ্ট করে ফেলবেন। দিতে হবে কর-জরিমানাও। সেই অনুমান ভুল প্রমাণ করে এর মধ্যেই সাড়ে ১১.৫ লক্ষ কোটি টাকা ব্যাঙ্কে জমা পড়ে গিয়েছে। অথচ ৩০ ডিসেম্বর পর্যন্ত পুরনো নোট জমা করার সময়সীমা এখনও রয়েছে। অর্থ মন্ত্রকের কর্তারা তাই আশঙ্কা করছেন, হিসেবের থেকেও বেশি নোট জমা পড়ে যেতে পারে।
অর্থ মন্ত্রকের রাজস্বসচিব হাসমুখ আঢ়িয়া নিজেই বড় মুখ করে বলেছিলেন, সব নোট ব্যাঙ্কে ফেরত আসবে না। অর্থ মন্ত্রকের অনুমান ছিল, পুরনো ৫০০-১০০০ টাকার নোটে ১৫.৪ লক্ষ কোটি টাকার মধ্যে মধ্যে তিন ভাগের এক ভাগ কালো টাকা। তাই অন্তত ৩ থেকে ৫ লক্ষ কোটি টাকা আর ফেরত আসবে না। এখন সেই হাসমুখই বলেছেন, সব নোটই ব্যাঙ্কে ফেরত চলে আসতে পারে।
প্রশ্ন উঠেছে, তা হলে কালো টাকা ধরা পড়ল কোথায়? কংগ্রেসের মুখপাত্র রণদীপ সূর্যেওয়ালা বলেন, ‘‘মোদী সরকার বলেছিল, অধিকাংশ কালো টাকা না কি জমাই পড়বে না। এখন দেখা যাচ্ছে, সব নোটই জমা পড়ছে। তা হলে যাবতীয় কালো টাকাই সাদা হয়ে গেল। কিছুই ধরা পড়ল না!’’
এই যুক্তি অবশ্য মানছেন না রাজস্বসচিব। তাঁর দাবি, কালো টাকা ব্যাঙ্কে জমা পড়ছে মানেই তা সাদা হয়ে যাচ্ছে না। যাঁরা পুরনো নোট জমা দিয়েছেন, তাদের সুযোগ দেওয়া হয়েছে— স্বতঃপ্রবৃত্ত হয়ে তাঁরা কালো টাকা ঘোষণা করুন। সে ক্ষেত্রে ৫০ শতাংশ কর-জরিমানা দিলেই ছাড় মিলবে। এর পরে ধরা পড়লে ৮২.৫ শতাংশ পর্যন্ত কর-জরিমানা মেটাতে হবে।’’
অর্থ মন্ত্রকের আশঙ্কা, যে নোট জমা পড়ছে, তার মধ্যে কালো টাকার পাশাপাশি জাল নোটও রয়েছে। কারণ অনেক পুরনো নোট আধপোড়া, ছেঁড়া অবস্থায় উদ্ধার হয়েছে।
যে সব নোট জমা পড়বে না, তা আইনত বাতিল করে দেওয়ার জন্য অর্ডিন্যান্স আনার কথা ভাবছে অর্থ মন্ত্রক। তা সত্ত্বেও যে পরিমাণে নোট জমা পড়ছে, তা থেকে স্পষ্ট, জাল নোটও ঢুকেছে ব্যাঙ্কে। সেই জাল নোট ধরার পরিকাঠামো যে সব ব্যাঙ্কে নেই, তা-ও স্পষ্ট।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy