দু’জন একই রাজনৈতিক দলে থাকলেও মত ছিল ভিন্ন। কোন এক সময় একজন অন্যের ছায়াও মাড়াতেন না। আজ সময়ের পরিবর্তনে একজন অন্যজনের অনেকটাই কাছাকাছি। শুধু তাই নয়, নতুন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি রিপুন বরার কাছে ধুবুরি লোকসভা আসনে প্রাক্তন মন্ত্রী সিদ্দেক আহমেদকে প্রার্থী করার প্রস্তাব দিলেন গৌতম রায়। তিনি বলেন, সারা অসমে যখন কংগ্রেস নেতারা পরাজিত হয়েছেন তখনও সিদ্দেক বিপুল পরিমাণ সংখ্যালঘু ভোট পেয়েছেন। সিদ্দেক আহমেদ পরাজিত হলেও তিনি সংখ্যালঘুদের নেতা। তাই আগামী লোকসভা নির্বাচনে ধুবুরির সাংসদ বদরুদ্দিন আজমলের বিরুদ্ধে সিদ্দেককে প্রার্থী করা হোক। কংগ্রেসের সভায় গৌতমবাবু বলেন, ‘‘আজমল সাহেব নাকি একমাত্র সিদ্দেক আহমেদকেই ভয় করেন। ফলে তার বিরুদ্ধে সিদ্দেক আহমদই সঠিক প্রার্থী হবেন।’’
এদিনের সভায় সিদ্দেক বলেন, ‘‘অসমের মায়াঙে সংখ্যালঘুদের বাংলাদেশি সাজিয়ে বিতাড়ন করা হচ্ছে। কংগ্রেস কোনও ভাবেই তা বরদাস্ত করবে না। মায়াঙে থাকা মানুষরা অসমেরই বাসিন্দা।’’ তিনি অভিযোগ করেন, বদরুদ্দিন আজমলের সঙ্গে বিজেপির আঁতাত রয়েছে। ফলে সংখ্যালঘু ভোট বিভাজন করে বিজেপির প্রার্থীদের জয়লাভের পথ সুগম করেছে এআইইউডিএফ। তা না হলে বিধানসভার ১৩টি আসনে জয়লাভ করা এআইইউডিএফ ৭০টি আসনে প্রার্থী দিল কেন?’’ তাঁর কথায়, দক্ষিণ করিমগঞ্জ আসনে অধিকাংশ হিন্দু এআইইউডিএফকে ভোট দিয়েছেন। তার ফলে তিনি হেরে যান। অসমে এআইইউডিএফ যতদিনই বেঁচে থাকবে ততদিন সংখ্যালঘু ভোট বিভাজিত হবে। যার ফায়দা তুলবে অন্য রাজনৈতিক দল। তিনি অসম থেকে এআইইউডিএফকে স্বমূলে বিনাশ করার ডাক দেন।
সভায় কাছাড়ের সাংসদ সুস্মিতা দেব প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর কঠোর সমালোচনা করেন। বলেন, ‘‘বরাকে এসে নিজের ৫৬ ইঞ্চি বুকের কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন, ডিটেনশন ক্যাম্প তুলে দেওয়া হবে। হিন্দুদের শরণার্থী হিসেবে ঘোষণা করা হবে। কিন্তু এসবের বাস্তব প্রতিফলন ঘটেনি।’’ তাঁর কথায়, ‘‘বিজেপির নিয়ে আসা নাগরিকত্ব বিল সংসদে পাশ হলে একজন হিন্দুও উপকৃত হবেন না। বিলটি মোটেও শরণার্থীদের কাজে আসবে না বলে সাফ জানিয়ে দেন এ সংক্রান্ত সংসদীয় যৌথ সিলেক্ট কমিটির সদস্য সুস্মিতা। সভায় প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি রিপুন বরা, বিধায়ক দেবব্রত শইকিয়া বক্তব্য রাখেন। তাঁরা বলেন, অসমের কংগ্রেস সব সময়েই বরাকের বাঙালিদের পাশে ছিল এবং থাকবে।
অন্য দিকে, বদরুদ্দিন আজমলকে সংখ্যালঘু-বিরোধী বলে সিদ্দেক যে মন্তব্য করেছেন তার কঠোর সমালোচনা করেছে এআইইউডিএফ। করিমগঞ্জ জেলা এআইইউডিএফ সভাপতি আজিজ তালুকদার বলেন, ‘‘আমাদের কাছে পরাজিত হয়েছেন সিদ্দেক আহমদ। তাই এত উগ্র মন্তব্য করছেন।’’ তাঁর অভিযোগ, ‘‘সিদ্দেক আহমেদ ‘সাম্প্রদায়িক রাজনীতি’ ছাড়া কোনও দিনই দক্ষিণ করিমগঞ্জে জয়লাভ করেননি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy