সূচনা: ৯ কিলোমিটার লম্বা দিল্লি-মেরঠ এক্সপ্রেসওয়ে উদ্বোধনের পরে নরেন্দ্র মোদীর রোড-শো। রবিবার পূর্ব দিল্লিতে। ছবি: পিটিআই
চিনিকলগুলির কাছ থেকে পাওনা আদায়ে ও বিদ্যুতের মাসুল বৃদ্ধির প্রতিবাদে পশ্চিম উত্তরপ্রদেশের বাগপত জেলায় ধর্নায় বসেছেন আখচাষিরা। ধর্নারত এক আখচাষির মৃত্যুও হয়েছে গত কাল। আর আজ সেই বাগপতের মাটিতে দাঁড়িয়েই ‘অচ্ছে দিন’-এর বার্তা শোনালেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। কংগ্রেসকে তীব্র আক্রমণের পাশাপাশি, উঁচু গলায় শোনালেন চার বছর পার করা সরকারের কৃষক-দরদি ভূমিকার কথা। সব মিলিয়ে ‘ইস্টার্ন পেরিফেরাল হাইওয়ে’র উদ্বোধনের অনুষ্ঠান হয়ে উঠল রাজনীতির মঞ্চ।
মোদী আজ যেখানে জনসভাটি করেছেন, তার পাশেই কৈরানা জেলা। আগামিকাল উপনির্বাচন হবে সেখানে। এ রাজ্যে আগের উপনির্বাচনগুলির মতো এখানেও বিরোধীরা এককাট্টা। একজোটে বিজেপির টক্কর নেবে আরএলডি, এসপি, বিএসপি ও কংগ্রেস। বিরোধী ভোট ভাগ না হলে এমনিতেই বিপদ বিজেপির। তার উপরে গত কাল বাগপতে ৬০ বছর বয়সি কৃষক উদয়বীর সিংহের মৃত্যু যোগী সরকারের বিরুদ্ধে যাচ্ছে বলেই মনে করছেন স্থানীয় রাজনৈতিক নেতারা।
প্রশাসন উদয়বীরের পরিবারকে ১২ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার কথা ঘোষণা করলেও, জীবদ্দশায় কেন কৃষকরা তাঁদের পাওনা টাকা পাচ্ছেন না, সেই প্রশ্ন তুলছেন বিরোধীরা। কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গাঁধী এ নিয়ে আক্রমণ করেছেন প্রধানমন্ত্রীকে। টুইটারে তিনি লিখেছেন, ‘‘উত্তরপ্রদেশের আখচাষিরা ভাবছেন, প্রধানমন্ত্রী তাঁদের জমির পাশ দিয়ে গিয়ে বিগত ইউপিএ সরকারের কৃতিত্বের ভাগ নিচ্ছেন। অথচ তাঁর নজর এক বারও কৃষকদের উপরে পড়ছে না! এটা খুবই দুর্ভাগ্যজনক যে উদয়বীর সিংহের মতো কৃষককে তাঁর হক আদায়ের জন্য প্রাণ দিতে হল।’’
গত কাল সরকারের চার বছরের পূর্তির দিনে মোদী এবং অমিত শাহ একযোগে আক্রমণ করেছিলেন কংগ্রেস-সহ গোটা বিরোধী শিবিরকে। আজও তার অন্যথা হয়নি। এটা বেশ স্পষ্ট যে, ২০১৯-এর নির্বাচনের আগে আক্রমণকেই আত্মরক্ষার প্রধান হাতিয়ার করতে চলেছেন মোদী। সরকারের চার বছর পূর্তি উপলক্ষে
আজ এক নৈশভোজে অমিত নিশানা করেন কংগ্রেস তথা বিরোধীদের। তার আগে দুপুরে বাগপতে মোদী বলেন, ‘‘যারা একটি পরিবারের পূজো করে, তারা কখনও গণতন্ত্রের পূজারী হতে পারে না। মোদীর বিরোধ করতে গিয়ে যে ওরা গোটা দেশেরই বিরোধিতা করে বসবে, এটা ভাবিনি।’’
মোদী মুখর হন সরকারের সাফল্য প্রচারেও। হাইওয়ে নির্মাণ থেকে শুরু করে গ্রামগুলিকে ইন্টারনেটের আওতায় আনা— বিষয় ধরে ধরে তিনি প্রমাণ করার চেষ্টা করেন, বিগত ইউপিএ সরকারের তুলনায় উন্নয়নের কাজে বহু এগিয়ে তাঁর সরকার। প্রধানমন্ত্রীর কথায়, ‘‘কংগ্রেসের সংস্কৃতিটাই ছিল পরিকল্পনা করে বসে থাকা। ৭০ বছর তারা দেশের গরিব মধ্যবিত্ত এবং যুবা শ্রেণিকে ঠকিয়েছে। এখন এনডিএ-র উপরে দেশবাসীর ভরসা দেখে ওরা ভয় পাচ্ছে।’’
আখচাষির মৃত্যু ও তাঁদের দাবিদাওয়া নিয়ে মুখ না খুললেও বাগপথের জমিতে দাঁড়িয়ে মোদী আজ তাঁদের ‘অচ্ছে দিন’-এর আশ্বাস দেন। জানান, সরকার নতুন যে প্রকল্প আনছে তাতে ভর্তুকি সরাসরি আখচাষিদের ব্যাঙ্ক খাতায় চলে যাবে। চিনি কারখানার মালিকের কাছে নয়। শুধু কৃষকদরদি ভূমিকাই নয়, দলিত ও অনগ্রসরদের প্রতি কেন্দ্রীয় সরকারের বর্তমান ও ভবিষ্যৎ পদক্ষেপগুলিও বিশদে তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী। সঙ্গে তাঁর অভিযোগ, ওবিসি উন্নয়নের লক্ষ্যে আনা বিলকে কংগ্রেস ধামাচাপা দিতে চাইছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy