Advertisement
০৬ নভেম্বর ২০২৪

মোদীর ঝুলি থেকে বেরলো ‘নতুন ভারত’-এর স্বপ্ন

মোদী-মোদী! জয় শ্রীরাম! পুষ্পবৃষ্টি। দোলের রং। তুমুল উন্মাদনা। চলছে উত্তরপ্রদেশ জয়ের উৎসব।ফিকে হওয়া এই মোদী-জাদুকেই ফিরিয়ে আনতে তৎপর ছিলেন বহু দিন। দিল্লির অশোক রোডের মোড় থেকে দলের দফতরে হেঁটে অভিবাদন কুড়োলেন নরেন্দ্র মোদী।

দিল্লিতে দলের সদর দফতরে নরেন্দ্র মোদী। রবিবার। ছবি: পিটিআই

দিল্লিতে দলের সদর দফতরে নরেন্দ্র মোদী। রবিবার। ছবি: পিটিআই

দিগন্ত বন্দ্যোপাধ্যায়
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৩ মার্চ ২০১৭ ০৩:৩০
Share: Save:

মোদী-মোদী! জয় শ্রীরাম! পুষ্পবৃষ্টি। দোলের রং। তুমুল উন্মাদনা। চলছে উত্তরপ্রদেশ জয়ের উৎসব।

ফিকে হওয়া এই মোদী-জাদুকেই ফিরিয়ে আনতে তৎপর ছিলেন বহু দিন। দিল্লির অশোক রোডের মোড় থেকে দলের দফতরে হেঁটে অভিবাদন কুড়োলেন নরেন্দ্র মোদী। যে দিল্লিতে আর কয়েক মাসের মধ্যেই পুরসভার ভোট। দলের দফতরে এসে লোকসভা ভোটের ভেঁপুও বাজিয়ে দিলেন প্রধানমন্ত্রী। ‘অচ্ছে দিন’-এর স্লোগানকে পিছনে ফেলে ঝুলি থেকে বের করলেন এক ‘নতুন ভারত’-এর স্বপ্ন। জানালেন, এটাই বিজেপির স্বর্ণযুগ। উত্তরপ্রদেশের ফলকে সামনে রেখে নিজের ভাবমূর্তিতেও নতুন করে শান দেওয়ার চেষ্টা করলেন।

২০২২ সালে স্বাধীনতার ৭৫ বর্ষপূর্তির মধ্যে ‘নতুন ভারত’-এর স্বপ্ন বাস্তবায়িত করতে চান প্রধানমন্ত্রী। তাঁর বলার ভঙ্গি দেখে মনে হয়েছে, ২০১৯ সালে লোকসভা ভোটে বিজেপির জয় অবধারিত। তার আগেই তাঁর সেনাপতি বিজেপি সভাপতি অমিত শাহ আরও জোরালো ভাবে ‘ঘোষণা’ করেছেন, ২০১৯ সালে আরও বেশি আসন নিয়ে বিজেপি সরকার গড়বে। উত্তরপ্রদেশের ‘জয়ের নায়ক’ নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বেই।

জয়ের দুই কারিগর।ছবি:পিটিআই

দলের এই স্বপ্ন বাস্তবায়িত করতে মোদী আজ দেশবাসীর কাছে ফেরি করলেন নতুন ভারতের স্বপ্ন। আর তার মাধ্যমেই আঘাত দেওয়ার চেষ্টা করলেন কংগ্রেসের দর্শনকে। মোদীর মতে, উত্তরপ্রদেশের এই বিপুল ভোটই বলে দিয়েছে, গরিবরা কোনও খয়রাতি চান না। তাঁরা সুযোগ চান। পরিশ্রম নিজেরাই করে নেন।

‘গরিব কল্যাণ’-এর এই উদ্যোগে মধ্যবিত্তরা যাতে বঞ্চিত বোধ না করেন, সে জন্য তাঁদেরও সুকৌশলে পাশে চেষ্টা করেছেন প্রধানমন্ত্রী। নিয়মপালন থেকে করের বোঝা যে মধ্যবিত্তের উপরেই সবচেয়ে বেশি, তা কবুল করেছেন তিনি। জানিয়েছেন, এক বার গরিবদের শক্তি বাড়িয়ে তাঁদের উন্নয়নের যাত্রা শুরু হলেই মধ্যবিত্তের বোঝা শেষ হবে। কিন্তু সেটি কতদিনে হবে, তার কোনও হদিস দিতে পারেননি মোদী।

গত লোকসভা ভোটের আগে থেকেই কংগ্রেসের অর্থনৈতিক দর্শনকে এভাবেই মোকাবিলা করে আসছেন মোদী। অমর্ত্য সেন ও জগদীশ ভগবতীর অর্থনৈতিক দর্শনের বিতর্ক তখন থেকেই। মোদী মনে করেন, ভর্তুকি দিয়ে, খয়রাতি করে সামাজিক উন্নয়ন কংগ্রেসের ভাবনা, অমর্ত্য সেনদের পথ। আর তাঁদের ক্ষমতায়ন করে নিজের পায়ে দাঁড় করানো ভগবতীদের পথ। আর উত্তরপ্রদেশে যে ভাবে উচ্চবর্ণ থেকে পিছিয়ে পড়া গরিবের ভোটও মোদী নিজের বাক্সে পুরেছেন, তার ভিত্তিতে সেটাই আজ আরও বলিষ্ঠ ভাবে বলেছেন প্রধানমন্ত্রী। তাঁর মতে, এই ভোটের ফল আসলে সেই নতুন ভারতের বীজ।

আরও পড়ুন: এই ঐতিহাসিক ভোটে নয়া ভারতের জন্ম হয়েছে: নরেন্দ্র মোদী

আর এর সঙ্গেই টেনে আনলেন তিন বছর আগের প্রসঙ্গ। লোকসভা নির্বাচনের আগে দলের ইস্তাহার প্রকাশের সময় বলেছিলেন, ‘অসৎ উদ্দেশ্য’ নিয়ে কিছু করবেন না।
সেই সময়ে গুজরাত দাঙ্গার সঙ্গে এই কথা জুড়ে বিরোধীরা প্রচার করেছিলেন। আজ মোদী বলেন, ‘‘তখন আমার কথার অন্য অর্থ করা হয়েছিল। তবুও সাহস আছে বলেই ফের বলছি, অসৎ উদ্দেশ্য নিয়ে কোনও কাজ করব না।’’

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE