Advertisement
০৩ নভেম্বর ২০২৪
নিষেধাজ্ঞা ছত্তীসগঢ়েও

মাছ মারাটা হিংসা নয়, বলল মহারাষ্ট্র

জল থেকে তুললেই মরে যায়, তাই মাছ ধরাটা ঠিক প্রাণিহত্যা নয় বলে বম্বে হাইকোর্টে জানাল মহারাষ্ট্র সরকার। মাংসে আপত্তি থাকলে মাছে নয় কেন-সে কথা জানতে চেয়েছিল হাইকোর্ট।

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ১২ সেপ্টেম্বর ২০১৫ ০৩:৫৫
Share: Save:

জল থেকে তুললেই মরে যায়, তাই মাছ ধরাটা ঠিক প্রাণিহত্যা নয় বলে বম্বে হাইকোর্টে জানাল মহারাষ্ট্র সরকার। মাংসে আপত্তি থাকলে মাছে নয় কেন-সে কথা জানতে চেয়েছিল হাইকোর্ট। তারই জবাবে এ কথা বলেছেন অ্যাডভোকেট জেনারেল অনিল সিংহ। জৈনদের উৎসব উপলক্ষে মাংস বিক্রির উপরে চার দিনের নিষেধাজ্ঞা নিয়ে শুনানিতে আজ এই প্রসঙ্গ এসেছে। এর পরেও বহু প্রশ্ন রয়েছে। যেমন ডিমেও আপত্তি করেনি রাজ্য। সে কথাও জানতে চেয়েছিল আদালত। জুতসই জবাব আসেনি। তবে মুম্বইয়ের আদালতে সওয়াল-জবাব যা-ই হোক, তাতে মাংস বিক্রি বন্ধে নিষেধাজ্ঞা বন্ধ হয়নি। বরং মহারাষ্ট্র, রাজস্থান, গুজরাতের পরে আজ সে পথে হেঁটেছে ছত্তীসগঢ় ও পঞ্জাব। ঘটনাচক্রে সে দু’টি রাজ্যেও ক্ষমতায় বিজেপি।

জৈনদের উৎসব উপলক্ষে মুম্বইয়ে মাংস বিক্রি ও প্রাণীহত্যা বন্ধ করা সম্ভব নয় বলে গত কালই মন্তব্য করেছিল বম্বে হাইকোর্ট। আজও শুনানির সময়ে বিচারপতি অনুপ মোহতা ও বিচারপতি আমজাদ সৈয়দের বেঞ্চ জানায়, মুম্বইয়ের প্রগতিশীল বলে পরিচিতি আছে। কে কী খাবেন তা তাঁর ব্যক্তিগত বিষয়। যে সব সম্প্রদায়ের মানুষ আমিষ বেশি খান তাঁদের কথাও ভাবতে হবে।

এর পরেই বেঞ্চ প্রশ্ন তোলে, মাংস বিক্রি ও প্রাণীহত্যা বন্ধ করলেও মাছ, সামুদ্রিক প্রাণী ও ডিম বিক্রি চালু রাখা হচ্ছে কেন? মাছ মারলে কি হিংসা হয় না? জবাবে এজি অনিল সিংহ বলেন, ‘‘মাছ আর মাংসে তফাত আছে। কারণ, মাছ জল থেকে তুললেই মরে যায়। মাছ ঠিক মারতে হয় না।’’

ন’দিনের জৈন উৎসবের সময়ে কেবল কয়েক দিন মাংস বিক্রি বন্ধ করে রাখার অর্থ কী, তাও জানতে চান বিচারপতিরা। তাঁদের কথায়, ‘‘এক দিন কি ধর্মীয় আবেগ কম থাকে, আবার পরের দিন বাড়ে? মিরা ভায়ান্ডার পুরসভা এলাকায় আট দিন নিষেধাজ্ঞা রয়েছে, আবার মুম্বইয়ে রয়েছে চার দিন। কি যুক্তিতে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হল?’’

মহারাষ্ট্রে চার দিনের মধ্যে ১০ ও ১৭ সেপ্টেম্বরের নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল রাজ্য সরকার। ১৩ ও ১৮ সেপ্টেম্বর মাংস বিক্রি বন্ধ করেছিল বৃহন্মুম্বই পুরসভা। শুনানি চলাকালীনই তাদের নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় পুরসভা। সেই সিদ্ধান্তের কথা বেঞ্চকে জানিয়ে দেন পুরসভার আইনজীবী এন ভি ওয়ালাওয়ালকর। ফলে, এখন নিষেধাজ্ঞা বজায় রইল কেবল ১৭ সেপ্টেম্বরের জন্য। ১৪ সেপ্টেম্বর ফে‌র এই মামলার শুনানি ।

আজ জৈন উৎসবের সময়ে নিষেধাজ্ঞা জারি হয়েছে গোটা ছত্তীসগঢ় ও পঞ্জাবের একাংশে। ছত্তীসগঢ় সরকার জানিয়েছে, ২০১১ সাল থেকে জৈন উৎসব ও গণেশ চতুর্থীর সময়ে মাছ মাংস বিক্রি বন্ধ রাখা হয়। এ বারও তাই ১৭ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত মাংসের দোকান ও কসাইখানা বন্ধ রাখতে সব পুরসভাকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। অকালি-বিজেপি জোটের হাতে থাকা পঞ্জাবের লুধিয়ানাতেও জৈন উৎসব উপলক্ষে ১৭ সেপ্টেম্বর আমিষ বিক্রির উপরে নিষেধাজ্ঞা জারি হয়েছে।

মাংস-বিতর্ক নিয়ে রাজনীতিও চলছে পুরোদমে। গত কাল বিষয়টি নিয়ে বিজেপির বিরোধিতায় নেমেছিল তাদেরই জোটশরিক শিবসেনা এবং বিরোধী কংগ্রেস, এমএনএসের মতো দলগুলি। আজ বিষয়টিকে ব্যক্তির মৌলিক অধিকার হস্তক্ষেপ বলে দাবি করেছে বামপন্থী দলগুলি।

বিতর্কে আজ উত্তপ্ত ছিল কাশ্মীর উপত্যকাও। গত কাল গোমাংস বিক্রি ও গরু-মোষ হত্যা-বিরোধী আইন কড়া ভাবে কার্যকর করার নির্দেশ দেয় জম্মু-কাশ্মীর হাইকোর্ট। তা নিয়ে প্রশ্ন রাজ্যের নানা শিবিরে। আজ ওই নির্দেশের বিরুদ্ধে পথে নেমেছিল বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠনগুলি। বিভিন্ন এলাকায় পুলিশের সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের সংঘর্ষও হয়। বিচ্ছিন্নতাবাদী নেতাদের গৃহবন্দি করেছে মুফতি-সরকার। শ্রীনগরের কিছু অংশে কার্ফুও জারি হতে পারে।

অন্য বিষয়গুলি:

Meat ban Maha govt violent fish
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE