বন্ধুত্ব তখন গাঢ়। ফাইল চিত্র।
ফের বিজেপি শিবিরে ফিরলেন যোগগুরু রামদেব। রাজনীতির ময়দান থেকে বেশ কিছু দিন দূরত্ব বজায় রাখলেও বুধবার তাঁকে দেখা গেল কেন্দ্রীয় মন্ত্রী এবং বিজেপি নেতা রাজ্যবর্ধন রাঠৌরের সঙ্গে। এ দিন যোগগুরুকে সঙ্গে নিয়েই রাজস্থানের জয়পুর গ্রামীণ লোকসভা কেন্দ্রে মনোনয়ন জমা দিলেন তিনি। শুধু সঙ্গ দেওয়াই নয়, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর হাত শক্ত করতে বিজেপিতে ভোট দেওয়ার পক্ষেও সওয়াল করেন তিনি।
২০১৪ সালে বিজেপির প্রচার ব্রিগেডের এক দম প্রথম সারিতেই ছিলেন রামদেব। দেশের বিভিন্ন প্রান্তে মোদীর হয়ে গলা ফাটাতে দেখা গিয়েছিল তাঁকে। সেই মধুচন্দ্রিমা অবশ্য বেশি দিন স্থায়ী হয়নি। গত বেশ কিছুদিন ধরে বিজেপি শিবিরের সঙ্গে যেন দূরত্ব বেড়েই চলছিল রামদেবের। গত সেপ্টেম্বরেই একটি অনুষ্ঠানে তাঁকে প্রশ্ন করা হয়েছিল— আগামী লোকসভা নির্বাচনে তিনি বিজেপির হয়ে প্রচারে অংশ নেবেন কি না? প্রশ্ন শুনেই ফুঁসে উঠে রামদেব বলেছিলেন, ‘‘কেন করব প্রচার? আমি রাজনীতি থেকে নিজেকে সরিয়ে নিয়েছি। আমি সব দলের সঙ্গে আছি, কোনও একটি নির্দিষ্ট দলের সঙ্গে নেই।’’
অবশ্য এখানেই শেষ নয়। কিছু দিন আগেই তিনি মন্তব্য করে বসেছিলেন, কে ভারতের পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী হবেন, তা নির্দিষ্ট ভাবে বলা খুবই কঠিন। রামদেবের এই মন্তব্যকে একটা ধাক্কা হিসেবেই দেখেছিল মোদী শিবির। কারণ, নরেন্দ্র মোদীর ঘনিষ্ঠ শিবিরের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি হিসাবেই তিনি এতদিন বিবেচিত।
আরও পড়ুন: নোটবন্দির পর চাকরি খুইয়েছেন ৫০ লাখ পুরুষ! নয়া সমীক্ষায় আরও অস্বস্তিতে মোদী সরকার
বিজেপি এবং রামদেবের মধ্যে বাড়তে থাকা দূরত্ব যে কমেছে, তা টের পাওয়া গেল অবশ্য আজকেই। রাজস্থানের জয়পুর লোকসভা কেন্দ্রে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী রাজ্যবর্ধন রাঠৌরের মনোনয়ন পেশের সময় রামদেব তাঁকে সঙ্গ দিলেন আগাগোড়াই। দেশের সুরক্ষা এবং জাতীয়তাবোধ, এই দু’টি বিষয়ের জন্যই দেশবাসীর তাঁর ‘ঘনিষ্ঠ বন্ধু’কে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে জেতানো উচিত বলে মন্তব্য করেন তিনি। তাঁর কথায়, ‘‘আগামী ২০-২৫ বছরের মধ্যে বিশ্বের অন্যতম রাজনৈতিক এবং অর্থনৈতিক শক্তি হয়ে উঠতে হলে মোদীর হাত শক্ত করতে হবে। মোদীর হাতে থাকলে এই দেশ সুরক্ষিত, জওয়ানরা নিরাপদ, মহিলাদের সম্মান সুরক্ষিত এবং চাষিদের জমিও নিরাপদ।’’ একই সঙ্গে মোদীকে ‘ভারতমাতার গর্ব’ বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশি অভিনেতা ফিরদৌসকে ভারত ছাড়ার নির্দেশ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের
মোদীকে সমর্থন করার পাশাপাশি কংগ্রেসকেও এক হাত নেন রামদেব। আর সেই আক্রমণের কেন্দ্রবিন্দু হিসেবে তাঁর নিশানা ছিল রাহুল গাঁধীর ন্যায় প্রকল্প। তিনি বলেন, ‘‘আসল ন্যায় এ বার দেখা যাবে। গ্রামে গ্রামে, বুথে বুথে ভোটাররা রাহুলকে বুঝিয়ে দেবেন আসন ন্যায়বিচার কাকে বলে।’’
২০১৪ লোকসভা নির্বাচন পরবর্তী সময়ে রামদেব শাসক শিবিরের এতটাই ঘনিষ্ঠ হয়ে উঠেছিলেন যে তাঁকে বিজেপি শাসিত হরিয়ানা সরকারের ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর করা হয়েছিল। পাশাপাশি তাকে দেওয়া হয়েছিল পূর্ণমন্ত্রীর সমান পদমর্যাদা, গাড়ি, এসকর্ট কনভয়ও। সময়ের সঙ্গে সেই সম্পর্কে ভাটার টান এলেও ভোটের শুরুতেই বদলে গেল ছবিটা। যদিও রাজস্থান পেরিয়ে অন্যত্রও তিনি প্রচারে নামবেন কি না, সেই ইঙ্গিত আজ পাওয়া যায়নি তাঁর কাছ থেকে।
আরও পড়ুন: দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy