পা ধুইয়ে দলিত প্রেমের রাজনীতি না-করে প্রধানমন্ত্রী কেন সাফাই কাজে উন্নত যন্ত্রের ব্যবস্থা করছেন না? প্রশ্ন ইলাহাবাদ পুরসভার সাফাইকর্মী বীণার। —ফাইল চিত্র।
অর্ধকুম্ভে স্নান সেরে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী পাঁচ দলিত সাফাইকর্মীর পা ধুইয়ে দিচ্ছেন— এই ছবি আজ অর্থহীন বীণার কাছে। ইলাহাবাদ পুরসভার এই সাফাইকর্মীর দুই ভাই সম্প্রতি একটি চেম্বার সাফাই করতে নেমে মারা গিয়েছেন। বীণা জানাচ্ছেন, ‘‘ওরা ওই অন্ধকূপে নামতে চায়নি। ভিতরে বিষাক্ত গ্যাস নেই, কে বলতে পারে। ঠিকাদার এসে বলল, কূপে না-নামলে লাথি মেরে বার করে দেবে। কাজে নেবে না আর!’’
দেশের নানা জায়গার সাফাইকর্মীরা সম্প্রতি জড়ো হয়েছিলেন দিল্লিতে। উন্নত জীবনযাপন ও আধুনিক সাফাই যন্ত্রের পাশাপাশি মানবোচিত ব্যবহারের দাবিও করেন তাঁরা। সেখানে হাজির হয়েছিলেন বীণাও। তাঁর প্রশ্ন— পা ধুইয়ে দলিত প্রেমের রাজনীতি না-করে প্রধানমন্ত্রী কেন সাফাই কাজে উন্নত যন্ত্রের ব্যবস্থা করছেন না? সাফাইকর্মীদের বস্তিতে জল ও আলোর ব্যবস্থা করছেন না? বীণা বলছেন, বহু মানুষের বাড়িতে তিনি কাজ করতে যান। যান বিজেপি নেতাদের বাড়িতেও। সাফাইকর্মীদের জন্য আলাদা কাপে চা আসে। ছোঁয়াছুঁয়ির বাছবিচারও যথেষ্ট। তাঁর প্রশ্ন, সাফাইকর্মীরা কি মানুষ নন?
উত্তর ভারত জুড়ে সাফাইকর্মীদের বাল্মীকি সমাজ বলে চিহ্নিত করা হয়। রাজ বাল্মীকি বলেন, সাফাইকর্মী হিসেবে বাল্মীকিদের সংরক্ষণ সরকার তুলে দিক। কারণ এই সংরক্ষণের উদ্দেশ্য সাফাই কাজের মধ্যেই তাঁদের আটকে রাখা। তাঁর অভিযোগ, উচ্চ বর্ণের লোকেরা তাঁদের মানুষ বলেই মনে করেন না। স্বাধীনতার এত বছর পরেও বাল্মীকিরা অস্পৃশ্য। অন্য জীবিকায় গেলেও লাভ হয় না। রামনাথ জানালেন, সামান্য লেখাপড়া শিখে তিনি একটি কাপড়ের দোকান খুলেছিলেন। কিন্তু বাল্মীকি বলে কেউ তাঁর দোকান থেকে কেনাকাটা করত না। বাধ্য হয়ে ফের সাফাই কাজেই ফিরতে হয়েছে তাঁকে।
বীণা, রামনাথ, রাজেদের দাবি— পা ধুইয়ে দেওয়ার নাটক না-করে প্রধানমন্ত্রী বরং অস্পৃশ্যতা দূর করার ব্যবস্থা করুন। অস্পৃশ্যতা আইনি অপরাধ। সেই আইন প্রয়োগ করুক সরকার। সাফাইকর্মীদের মানুষের মর্যাদা দিক।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy