মনোনয়ন জমা দিচ্ছেন নরেন্দ্র মোদী। ছবি: সংগৃহীত।
শতাব্দী প্রাচীন মন্দিরনগরীতে আড়াই ঘণ্টা ধরে সাত কিলোমিটারের তারকাখচিত মেগা রোড শো যে বারাণসীতে বিজেপির চেহারা বদলে দিয়েছে তা টের পাওয়া গেল আজকেও। সকালেই কালভৈরব মন্দিরের জনসভায় কর্মী সমর্থকদের সমস্ত রেকর্ড ভেঙে বিজেপিকে ভোট দেওয়ার আহ্বান জানালেন এই কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী নরেন্দ্র মোদী। বললেন, ‘‘সারা দেশে প্রথম বারের জন্য বইছে প্রতিষ্ঠানপন্থী হাওয়া।’’
যে মেজাজে গতকাল রোড শো শেষ করেছিলেন, আজ সেই মেজাজেই বারাণসীতে দিনটা শুরু করলেন নরেন্দ্র মোদী। সাত সকালেই তিনি হাজির হয়ে যান আশি ঘাটে। সেখান থেকেই তিনি রওনা দেন কালভৈরব মন্দিরের দিকে। সেখানে একটি জনসভা করে আজ দুপুরেই বারাণসী কেন্দ্র থেকে বিজেপি প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন জমা দেন নরেন্দ্র মোদী।
মোদীর মনোনয়নকে তারকাখচিত করে তুলতে বারাণসী শহরে এখন ভিভিআইপিদের ভিড়। বিজেপির শীর্ষকর্তারা তো বটেই, সকালেই বারাণসীতে পৌঁছে যান এনডিএ শরিক দলগুলির শীর্ষনেতারাও। সকালেই তাঁদের সঙ্গে বৈঠক করেন বিজেপি সভাপতি অমিত শাহ। সেই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন জনতা দল (ইউনাইটেড) নেতা এবং বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশকুমার, উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ, লোক জনশক্তি পার্টির নেতা রামবিলাস পাসওয়ান এবং শিবসেনার উদ্ধব ঠাকরে-সহ আরও অনেকে।
মনোনয়ন জমা দেওয়ার আগে শরিক ও বিজেপি নেতাদের সঙ্গে নরেন্দ্র মোদী। ছবি: সংগৃহীত।
আরও পড়ুন: বারাণসীতে লড়ছেন না প্রিয়ঙ্কা
এর পর কালভৈরব মন্দিরের জনসভায় সমস্ত রেকর্ড ছাপিয়ে বিজেপিকে ভোট দেওয়ার আহ্বান দেন নরেন্দ্র মোদী। বিজেপি কর্মীদের উদ্বুদ্ধ করতে তিনি বলেন, ‘‘এক জন বিজেপি কর্মী বাড়ির বাইরে গেলে মাকে বলেন, ‘আমি বিজেপির সেবা করতে যাচ্ছি। আমি বেঁচে না ফিরলে আমার ভাই যেন কাল থেকে বিজেপির সেবা করে।’ এটা সত্যি গল্প।’’
একই সঙ্গে তিনি বলেন,‘‘কোনও ভোটের আগে সারা দেশে প্রথম বারের জন্য বইছে প্রতিষ্ঠানপন্থী হাওয়া। কাশ্মীর থেকে কন্যাকুমারী, সারা দেশে এখন উৎসবের পরিবেশ।’’ পাশাপাশি বিজেপি কর্মীদের কী করা উচিত, তাও মনে করিয়ে দিয়ে তিনি বলেন, ‘‘কী করে খরচ কমাতে হয়, তা শিখুন। প্রত্যেক পার্টিকর্মী দশটি পরিবারের দায়িত্ব নিন। রোজ তাঁদের বাড়ি যান। তাঁদের সঙ্গে জলখাবার খান। তাঁরাই আপনাকে চা দেবেন। ওখানেই খবরের কাগজ পড়ে নিন। কোনও খরচ ছাড়াই এই ভাবে দলের জন্য কাজ করুন।’’
মনোনয়ন জমা দিতে যাওয়ার পথে নরেন্দ্র মোদী। ছবি: রয়টার্স
একই সঙ্গে দলের বিরুদ্ধে যে প্রচার চলছে, তাতে কান না দিতে কর্মীদের পরামর্শ দেন মোদী। টেলিভিশনের বিতর্কে প্রভাবিত না হয়ে শুধু নমো অ্যাপে দলের কর্মকাণ্ড দেখার কথা বলেন তিনি। দলীয় কর্মীদের পথ ঠিক করে দেওয়ার পাশাপাশি গাঁধী পরিবারকেও নাম না করে একহাত নেন মোদী। তিনি বলেন, ‘‘প্রধানমন্ত্রীর পদ কোনও মজা নয়। এটা ভাইপো, ভাইঝি, ছেলে, মেয়ে বা কোনও পরিবারের জন্য নয়। এটা দেশের ১৩০ কোটি নাগরিকের জন্য।’’
আরও পড়ুন: মোদী-উৎসবে মেতে উঠল বারাণসী, প্রশ্নেরা থাকল নীরব
একই সুরে কথা বলেন বিজেপির অন্যনেতারাও। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংহ বলেন, ‘‘এই নির্বাচনে তিন-চতুর্থাংশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়ে ক্ষমতায় ফিরবে শাসক এনডিএ।’’ বিদেশমন্ত্রী সুষমা স্বরাজও বলেন, ‘‘বারাণসীর ভোটাররা ভাগ্যবান, কারণ তাঁরা দেশের প্রধানমন্ত্রীকে ভোট দিয়ে সংসদে পাঠাচ্ছেন। সেখানে দেশের অন্যান্য কেন্দ্রের ভোটাররা শুধুমাত্র এক জন সাংসদকে জিতিয়ে সংসদে পাঠাবেন।’’
কালভৈরব মন্দিরের জনসভা সেরেই জেলা কালেক্টরেটের অফিসে যান মোদী। সেখানেই বিজেপি ও শরিক দলের শীর্ষনেতাদের উপস্থিতিতে মনোনয়ন জমা দেন তিনি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy