Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪
হাই টেনশন লাইন

ক্ষতিপূরণ মেলেনি, জমি মালিকের আত্মহত্যার চেষ্টা

পর্যাপ্ত ক্ষতিপূরণ না পেয়ে বিদ্যুত্ পরিবহণ আটকাতে গায়ে কেরোসিন ঢেলে আত্মঘাতী হতে উদ্যোগী হলেন এক গ্রামবাসী। আর তাতেই শেষ পর্যন্ত পিছু হঠতে বাধ্য হল পাওয়ার গ্রিডের কর্মী-অফিসার থেকে শুরু করে অসম পুলিশ, সিআরপিএফের বিরাট বাহিনী।

নিজস্ব সংবাদদাতা
করিমগঞ্জ শেষ আপডেট: ০৬ জুন ২০১৫ ০৩:০০
Share: Save:

পর্যাপ্ত ক্ষতিপূরণ না পেয়ে বিদ্যুত্ পরিবহণ আটকাতে গায়ে কেরোসিন ঢেলে আত্মঘাতী হতে উদ্যোগী হলেন এক গ্রামবাসী। আর তাতেই শেষ পর্যন্ত পিছু হঠতে বাধ্য হল পাওয়ার গ্রিডের কর্মী-অফিসার থেকে শুরু করে অসম পুলিশ, সিআরপিএফের বিরাট বাহিনী।

করিমগঞ্জ জেলার রাতাবাড়ি থানা এলাকায় বেশ কয়েকমাস থেকেই পাওয়ার গ্রিডের উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন বিদ্যুতবাহী লাইন টানা, টাওয়ার বসানোর কাজ চলছে। সেই টাওয়ার বসানোর জমির জন্য এবং যাদের জমির উপর দিয়ে তার যাচ্ছে সেই সব সংশ্লিষ্ট জমি-মালিকদের ক্ষতিপূরণ দেওয়ার কাজও শুরু করে পাওয়ার গ্রিড কর্পোরেশন। প্রথম পর্যায়ে ক্ষতিপূরণ বণ্টন শুরু হওয়ার পর রাতাবাড়ি এলাকার কিছু মানুষ যে পথ দিয়ে বিদ্যুতের লাইন যাচ্ছে সেখানে নতুন করে বাড়ি তৈরি করতে শুরু করে। লক্ষ্য অধিক ক্ষতিপূরণ আদায়। তা নিয়ে স্থানীয় কিছু মানুষের অভিযোগের ভিত্তিতে পাওয়ার গ্রিডের তরফ থেকে ক্ষতিপূরণের চেক ক্ষতিগ্রস্তদের হাতে তুলে দেওয়ার পরও অনেক ক্ষেত্রে চেকের পেমেন্ট ‘আটকে’ রাখা হয়।

যাদের ক্ষতিপূরণ আটকে দেওয়া হয় তাদের অভিযোগ, গ্রিড কর্তৃপক্ষ টাকা আটকে রাখার কারণ পর্যন্ত দর্শানোর প্রয়োজন মনে করেনি। বিহাইরডালা গ্রামের আলাউদ্দিন নামে জনৈক ব্যক্তির হাতে ১ লক্ষ ৭১ হাজার ৪ শত ২৩ টাকার চেক দিয়েও তার টাকা আটকে দেওয়া হয়। করিমগঞ্জ জেলার রাতাবাড়ি থানা এলাকার বিহাইরডেলা গ্রামের সুরমান আলি, সুফিয়ানউদ্দিন, রিয়াজউদ্দিন, আব্দুল সুফান, আব্দুল শুক্কুর, সুলতানউদ্দিন প্রমুখ ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, তাদের জমির উপর দিয়ে পাওয়ার গ্রিড লাইন টেনে নিলেও পর্যাপ্ত পরিমাণে ক্ষতিপূরণ না দিয়েই লাইন চালু করার চেষ্টা করছে।

আজ সকালে রামকৃষ্ণ নগরের সার্কেল অফিসার এ কে ব্রহ্মের নেতৃত্বে রাতাবাড়ি থানার পুলিশ, সিআরপিএফ বাহিনীকে সঙ্গে নিয়ে লাইন চালু করতে যায় গ্রিড কর্তৃপক্ষ। এলাকার জনগণ জানিয়ে দেয়, সকলে ক্ষতিপূরণ না পেলে লাইন চালু করা যাবে না। কিন্তু তা সত্ত্বেও জোর করে পুলিশি প্রহরায় কাজ করতে আরম্ভ করে গ্রিড কর্মীরা। স্থানীয়দের আপত্তিতেও যখন কাজ থামছে না, তখন জালালউদ্দিন নামে এক ব্যক্তি কেরোসিন ভর্তি জেরিক্যান এনে তা গায়ে ঢালতে চেষ্টা করে।

পুলিশ এবং স্থানীয় মানুষের তত্পরতায় শেষ পর্যন্ত কোনও অঘটন ঘটেনি। তবে এমন পরিস্থিতিতে পিছু হটতে বাধ্য হন গ্রিড-কর্মীরা। পিথু হঠে যায় পুলিশও। জালালউদ্দিনের বক্তব্য, ‘‘গ্রিড কর্তৃপক্ষ ক্ষতিপূরণ দেওয়ার বিষয়ে বার বার প্রতিশ্রুতি দিলেও তা নিয়ে টালবাহানা করছে। এই অবস্থাতে জোর করে লাইন চালু করে দিলে কোনও দিনই আমরা ক্ষতিপূরণ পাব না। সেই কারণেই এই চরম রাস্তা বেছে নিই। তাতে আমার পরিবারটি তো বাঁচবে।!’’

আগামী বছরেই রাজ্যে বিধানসভার ভোট। এই পরিস্থিতিতে কোনও রকম সংঘাতে যেতে রাজি নয় জেলা প্রশাসনও। প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, গ্রিড কর্তাদের তাঁরা এ বিষয়ে সতর্ক করেছেন। প্রয়োজনে ক্ষতিগ্রস্তদের সঙ্গে আলোচনায় বসে জট কাটিয়েই লাইন চালু
করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। প্রয়োজনে প্রশাসনও মধ্যস্থতার ভূমিকা নিতে পারে বলে গ্রিড কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।

অন্য বিষয়গুলি:

karimganj Landowner police ramkrishna nagar
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE