বর্তমান যদি পারেন, প্রাক্তনেরই বা অসুবিধা কি! সংসদীয় রাজনীতিতে দলের সাধারণ সম্পাদকের দাপট দেখে এ বার প্রাক্তনকেও সেই পথে পাঠাতে চাইছে সিপিএমের একাংশ।
পশ্চিমবঙ্গ থেকে রাজ্যসভায় সীতারাম ইয়েচুরির মেয়াদ শেষ হচ্ছে জুলাইয়ে। ইতিমধ্যেই সংসদে রাহুল গাঁধী ডেকে তাঁর সঙ্গে কথা বলেছেন, জনপথে ডেকে পাঠিয়েছেন সনিয়া। বিজেপি-র বিরুদ্ধে সংসদে জোরদার লড়াইয়ের স্বার্থে বাংলা থেকে তাদের প্রাপ্য একমাত্র আসন শুধু ইয়েচুরিকেই ছেড়ে দিতে রাজি কংগ্রেসের শীর্ষ নেতৃত্ব। কিন্তু সিপিএমের শীর্ষ স্তরের একাংশ শুধু ইয়েচুরিকে আটকাতেই চায় না, প্রকাশ কারাটকে রাজ্যসভায় নিয়ে যেতে চায়! দলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের একাংশ ও কেরল শিবিরের পরিকল্পনা সফল হলে আগামী বছর পিনারাই বিজয়নের রাজ্য থেকে রাজ্যসভার প্রার্থী হিসাবে মনোনয়নের ফর্ম ভরতে দেখা যেতে পারে কারাটকে!
সিপিএমের কেরল শিবিরের অঙ্ক বলছে, ইয়েচুরির রাজ্যসভায় দু’বারের মেয়াদ পূর্ণ হয়ে যাচ্ছে। তার উপরে তিনি সাধারণ সম্পাদক। তাই তাঁর এখন সংগঠনেই মনোযোগ দেওয়া উচিত। ইয়েচুরি না থাকলে রাজ্যসভায় তপন সেনের মতো কেউ না কেউ একটা বছর কাজ সামলে দেবেন। কেরল থেকে রাজ্যসভায় সি পি নারায়ণনের মেয়াদ ফুরোবে আগামী বছর। কিন্তু এলডিএফ রাজ্যে ক্ষমতায় থাকার সুবাদে দু’টি আসন পাবে সিপিএম। একটিতে স্থানীয় কাউকে রেখে অন্য আসনটি ছেড়ে দেওয়া যেতে পারে কারাটের জন্য। এর আগে দক্ষিণী ওই রাজ্য থেকে চেষ্টা করেও বৃন্দা কারাট রাজ্যসভার প্রার্থী হতে পারেননি। কিন্তু কেরলের ভূমিপুত্র কারাটের জন্য বিজয়ন, কোডিয়ারি বালকৃষ্ণনদের আপত্তি নেই। ইয়েচুরি না থাকলে সে ক্ষেত্রে আগামী বছর সংসদে ঢুকে রাজ্যসভার দলনেতার দায়িত্ব পেয়ে যেতে পারবেন প্রাক্তন সাধারণ সম্পাদক।
এমন অঙ্ক যে কষা হচ্ছে, টের পেয়েছেন ইয়েচুরিও। দলের ঘনিষ্ঠ মহলে তিনি বলেছেন, কারাটেরও সংসদীয় রাজনীতিতে আসা উচিত। আজকের রাজনীতিতে সংসদ যে কত গুরুত্বপূর্ণ, সেই বার্তা তা হলে স্পষ্ট হয়ে যাবে। তাত্ত্বিক অবস্থানের অচলায়তন থেকে বেরিয়ে দলটাও আরও বাস্তবমুখী হবে! দলের কেন্দ্রীয় কমিটির এক সদস্য বলছেন, ‘‘সীতারাম-প্রকাশ দু’জনেই সংসদে— সিপিএমের জন্য এটা খুব ভাল ব্যাপার হবে। কিন্তু সীতারাম যদি আবার রাজ্যসভায় চলে যান এ বার, তা হলে আর প্রকাশ যেতে চাইবেন বলে মনে হয় না।’’
আপাতত পরিস্থিতি অবশ্য ইয়েচুরির জন্য আগের চেয়ে বেশি অনুকূল। কংগ্রেসের মন বুঝে নেওয়ার পরে আলিমুদ্দিন ইয়েচুরিকে ফের প্রার্থী চেয়ে রাজ্য কমিটির তরফে প্রস্তাব পাঠাতে পারে এ কে জি ভবনে। উপরাষ্ট্রপতি হামিদ আনসারির সঙ্গে আর্মেনিয়া ও পোল্যান্ড সফরে যাবেন বলে ইয়েচুরি নিজে অবশ্য ২৬-২৭ এপ্রিল কলকাতায় রাজ্য কমিটির বৈঠকে থাকছেন না।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy