কালামের অন্ত্যেষ্টিতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর মুখোমুখি কংগ্রেসের সহ-সভাপতি রাহুল গাঁধী। বৃহস্পতিবার রামেশ্বরমে। ছবি: পিটিআই।
সম্পূর্ণ রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় শেষকৃত্য সম্পন্ন হল প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি এ পি জে আব্দুল কালামের।
বুধবারই দক্ষিণ তামিলনাড়ুর রামেশ্বরমে কালামের জন্মস্থলে পৌঁছয় তাঁর কফিনবন্দি দেহ। বৃহস্পতিবার তাঁর বাড়ি এবং পারিবারিক মসজিদে বিশেষ প্রার্থনার পরে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত কফিনে বন্দি কালামের দেহ নিয়ে যাওয়া হয় দেড় একর পরিখা-আবদ্ধ অন্ত্যেষ্টি ক্রিয়াস্থলে। কালামের শেষযাত্রায় সামিল হন শ’য়ে শ’য়ে সাধারণ মানুষ। ২০০২ থেকে ২০০৭ সাল পর্যন্ত ভারতের রাষ্ট্রপতি কালামের অন্ত্যেষ্টির জন্য আজ এক দিনের ছুটি ঘোষণা করে তামিলনাড়ু সরকার। গোটা রাজ্যেই বন্ধ ছিল স্কুল-কলেজ, দোকানপাট, অফিস। কালামের শেষকৃত্যে সামিল হতে গত কাল রাত থেকেই দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে মানুষ রামেশ্বরমে পৌঁছেছেন। ভিড় নিয়ন্ত্রণে বাড়ানো হয় রামেশ্বরমের রাস্তা এবং অন্ত্যেষ্টিস্থলের নিরাপত্তাও। ঘরের ছেলের শেষযাত্রায় শহর জুড়ে বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা করেন পুর কর্তৃপক্ষও।
‘মানুষের রাষ্ট্রপতি’কে শ্রদ্ধা জানাতে আজ বিশেষ হেলিকপ্টারে মণ্ডপম পৌঁছন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। সেখান থেকে বুলেটপ্রুফ গাড়িতে যান রামেশ্বরম। সেখানে উপস্থিত ছিলেন কংগ্রেসের সহ-সভাপতি রাহুল গাঁধী, তামিলনাড়ুর রাজ্যপাল কে রোসাইয়া, কেন্দ্রীয় প্রতিরক্ষামন্ত্রী মনোহর পর্রীকর, মন্ত্রী বেঙ্কাইয়া নাইডু। কালামের আত্মীয়দের পাশাপাশি চোখের জলে দেশের ‘মিসাইল ম্যান’কে বিদায়জানাতে সাধারণ মানুষের ভিড় উপচে পড়ে অন্ত্যেষ্টি স্থলেও। শারীরিক অসুস্থতার কারণে আসতে না পারলেও শোকবার্তা পাঠিয়েছেন তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী জয়ললিতা। তবে রাজ্য সরকারের তরফে উপস্থিত ছিলেন পনীরসেলভম-সহ স্থানীয় নেতারা।
তাবড় নেতা-মন্ত্রীদের উপস্থিতি এবং সাধারণ মানুষের ভিড় সামাল দিতে দিনভর রামেশ্বরমের উপর নজরদারি চালিয়েছে নৌসেনা, মেরিন পুলিশ এবং উপকূল প্রতিরক্ষা বাহিনীর বিশেষ দল।
জাতীয় পতাকায় মোড়া কালামের দেহে মালা দিয়ে আজ কিছু ক্ষণ নীরবতা পালন করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। কালামের দাদা ৯৯ বছরের মহম্মদ মুথু মিরান লিব্বাই মারাইকেরের সঙ্গে তিনি কথাও বলেন খানিক ক্ষণ। প্রাক্তন রাষ্ট্রপতির কফিনে মালা দেন রাহুল গাঁধী, গুলাম নবি আজাদ, সিদ্দারামাইয়া উমেন চান্ডি, চন্দ্রবাবু নাইডু, ভি এস অচ্যুতানন্দন প্রমুখ। ভারতীয় সেনার তিন বাহিনীর এই প্রাক্তন প্রধানকে শ্রদ্ধাঞ্জলি জানিয়েছেন বায়ু, স্থল ও নৌসেনার প্রধানেরাও। গান স্যালুট এবং ‘ভারত মাতার জয়’ স্লোগানের মধ্যে সম্পন্ন হয় শেষকৃত্য।
গত সোমবার শিলংয়ের আইআইএম-এ বাসযোগ্য পৃথিবী নিয়ে বক্তৃতা দেওয়ার সময় হৃদ্রোগে আক্রান্ত হন কালাম। সে দিনই মৃত্যু হয় শিলংয়ে। আজ, তাঁর অন্ত্যেষ্টি দিনে কালামকে শ্রদ্ধাঞ্জলি জানিয়েছেন গুগ্ল কর্তৃপক্ষও। ‘মানুষের রাষ্ট্রপতি’র স্মরণে গুগ্লের সার্চ-ইঞ্জিনের নীচেই দেখা যাচ্ছে একটি কালো রিবন। লেখা, ‘‘এ পি জে আব্দুল কালামের স্মৃতিতে’’।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy