আচমকা জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া ও শিবরাজ সিংহ চৌহানের রুদ্ধদ্বার বৈঠক ঘিরে রাজনৈতিক জল্পনা। —ফাইল চিত্র
মাস দু’য়েক আগেও বিধানসভা নির্বাচনে দু’জন ছিলেন যুযুধান দুই শিবিরের প্রধান মুখ। জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া এবং শিবরাজ সিংহ চৌহান। যুযুধান দুই শিবিরের শীর্ষ নেতাই রুদ্ধদ্বার বৈঠক করলেন প্রায় এক ঘণ্টা। লোকসভা ভোটের মুখে শনিবার রাতে ভোপালে শিবরাজ সিংহ চৌহানের বাড়িতে এই বৈঠক ঘিরেই এখন মধ্যপ্রদেশের রাজনীতিতে তুমুল গুঞ্জন। দু’জনেই সৌজন্য সাক্ষাৎকার বলে দাবি করেও জানিয়েছেন, ‘সদর্থক আলোচনা হয়েছে’। বিধানসভা ভোটে হারের পর বিজেপিতে কার্যত ‘গুরুত্বহীন’ করে দেওয়া শিবরাজের সঙ্গে প্রভাবশালী কংগ্রেস সাংসদ জ্যোতিরাদিত্যর এই বৈঠক কি মধ্যপ্রদেশে নয়া কোনও রাজনৈতিক পরিবর্তনের পটভূমিকা?
শনিবার সন্ধ্যা সোয়া ছ’টা নাগাদ ব্যক্তিগত কাজে গ্বালিয়র থেকে ভোপালে যান জ্যোতিরাদিত্য। সেখান থেকে আচমকাই শিবরাজকে মেসেজ করে দেখা করার ইচ্ছা প্রকাশ করেন। কিছুক্ষণ আগেই দিল্লি থেকে ফেরা শিবরাজও সাক্ষাতের অনুমতি দেন। রাত ন’টা নাগাদ জ্যোতিরাদিত্য তাঁর বাড়িতে পৌঁছতেই শুরু হয় দু’জনের রুদ্ধদ্বার বৈঠক। কিন্তু চাউর হতে সময় লাগেনি। প্রায় এক ঘণ্টার বৈঠক শেষ হতেই সাংবাদিকরা শিবরাজের বাড়ির বাইরে ভিড় জমান। রাত দশটা নাগাদ বৈঠক শেষে জ্যোতিরাদিত্য বলেন, ‘‘এটা ছিল সৌজন্য সাক্ষাৎ। বিভিন্ন বিষয়ে আমাদের মধ্যে কথা হয়েছে।’’
অথচ কিছুদিন আগেও বিধানসভা ভোটের প্রচারে এই শিবরাজের নেতৃত্বেই বিজেপি স্লোগান তুলেছিল, ‘মহারাজা মাফ করো’। সাংবাদিকদের প্রশ্নে উঠে আসে সেই প্রসঙ্গও। উত্তরে জ্যোতিরাদিত্য বলেন, ‘‘একটা তিক্ততা নিয়ে সারা জীবন বসে থাকব, এতে আমি বিশ্বাসী নই। বরং ‘রাত গ্যয়ি বাত গ্যয়ি’-তে বিশ্বাসী। ভোটের সময় সংঘাত ছিল। কিন্তু ফল ঘোষণার পর সেসব মিটে গিয়েছে। সবাইকে একসঙ্গে নিয়ে চলতে পছন্দ করি আমি।’’
আরও পড়ুন: ইভিএম কারচুপির কৌশল ‘ফাঁস’ হতেই গোপীনাথ মুন্ডের মৃত্যুর তদন্ত দাবি করলেন ভাইপো
আরও পড়ুন: ব্রিগেড ভরবে না, আশঙ্কাতেই মোদীর সভা বাতিল করল বিজেপি
পাঁচ রাজ্যের বিধানসভা ভোট শেষ হয়েছে মাস দেড়েক আগেই। বিজেপি সরকারকে হারিয়ে মধ্যপ্রদেশে ক্ষমতায় এসেছে কংগ্রেস। ভোটের পর কংগ্রেস শিবির থেকে মুখ্যমন্ত্রিত্বের দাবিদার ছিলেন জ্যোতিরাদিত্য। যদিও তাঁর সম্মতিতেই শেষ পর্যন্ত মুখ্যমন্ত্রী হন বর্ষীয়ান কমল নাথ। অন্য দিকে বিধানসভা ভোটে হারের পর শিবরাজকে বিরোধী দলনেতার পদও দেওয়া হয়নি। অপেক্ষাকৃত কম গুরুত্বপূর্ণ দলের জাতীয় সাধারণ সম্পাদক পদ দেওয়া হয়েছে। যা তিন বারের মুখ্যমন্ত্রীর পক্ষে অবমাননাকর বলে মনে করেন শিবরাজের অনুগামীরা। সে দিক থেকে দেখলে লোকসভা ভোটের আগে জ্যোতিরাদিত্য শিবরাজের এই বৈঠক যথেষ্ঠ তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা।
(ভারতের রাজনীতি, ভারতের অর্থনীতি- সব গুরুত্বপূর্ণ খবর জানতে আমাদের দেশ বিভাগে ক্লিক করুন।)
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy