ঝাড়খণ্ড বিধানসভার পাটিগণিত। গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
এক সপ্তাহ পেরিয়ে গেলেও মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত সোরেনের ভাগ্য খামবন্দি হয়ে রয়েছে রাঁচীর রাজভবনে। বহাল রয়েছে শাসক জোটে ভাঙনের আশঙ্কাও। এই পরিস্থিতিতে বৃহস্পতিবার ছত্তীসগঢ় থেকে রাঁচিতে ফিরে শাসকজোটের বিধায়কেরা রাজ্যপাল রমেশ ব্যাসের কাছে গিয়ে সংখ্যাগরিষ্ঠতার ‘প্রমাণ’ দিতে পারেন বলে সূত্রের খবর।
ওই সূত্র জানাচ্ছে, হেমন্ত শিবিরের তরফে বিধানসভায় আস্থাপ্রস্তাব আনার জন্য রাজ্যপালের অনুমতিও চাওয়া হতে পারে। অর্থাৎ যে কৌশলে বৃহস্পতিবার দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরীবাল বাজিমাত করেছেন, তা অনুসরণ করতে পারে ঝাড়খণ্ডের বিজেপি বিরোধী শিবির।
খনি লিজ দেওয়া মামলায় নিজের পদের অপব্যবহার করার অভিযোগে মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত সোরেনের বিধায়ক পদ খারিজের দাবিতে নির্বাচন কমিশনের দ্বারস্থ হয়েছিল বিজেপি। সূত্রের মতে, বিষয়টিতে সব পক্ষের বক্তব্য শোনার পরে গত বৃহস্পতিবার নিজেদের সুপারিশ ঝাড়খণ্ডের রাজ্যপালের কাছে মুখবন্ধ খামে পাঠিয়ে দিয়েছে কমিশন। বিজেপির দাবি, সুপারিশে হেমন্তের বিধায়কপদ খারিজের কথা বলা হয়েছে। এই দাবি সত্যি হলে, মুখ্যমন্ত্রিত্বে ইস্তফা দিতে হবে জেএমএম প্রধান হেমন্তকে।
বিজেপি কী ভাবে কমিশনের সুপারিশ আগে থেকে ‘জেনে গেল’ তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে শাসকজোট। পাশাপাশি, পদ্ম-শিবিরের বিরুদ্ধে বিধায়ক ভাঙানোর চেষ্টার অভিযোগও তোলা হয়েছে। সম্প্রতি হাওড়া থেকে অসম ফেরত তিন ঝাড়খণ্ডের বিধায়ক বিপুল অঙ্কের টাকা-সহ গ্রেফতার হওয়ার পরে সেই অভিযোগের সারবত্তা প্রমাণিত হয়েছে বলেই রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের একাংশের মত। এই পরিস্থিতিতে কংগ্রেস শাসিত ছত্তীসগঢ়ের রায়পুরে পাঠানো হয় ঝাড়খণ্ডের শাসক জোটের বিধায়কদের।
শাসক শিবিরের অভিযোগ, বিজেপির ইশারাতেই বিষয়টি ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে। কারণ, সময়কে কাজে লাগিয়ে শাসক জোটের বিধায়ক ‘কেনার’ প্রাণপণ চেষ্টা চালাচ্ছে বিজেপি। জেএমএম নেতৃত্বের বক্তব্য, সাত দিন হয়ে যাওয়ার পরেও কমিশনের চিঠি রাজ্যপাল প্রকাশ না করার ঘটনা কার্যত অভূতপূর্ব। রাজ্যপাল কেন এবং কার নির্দেশে ওই চিঠি প্রকাশ্যে আনেননি তা জানানোর দাবি তুলেছেন জেএমএম নেতৃত্ব।
খামবন্দি চিঠিতে কমিশন হেমন্ত সম্পর্কে কী সুপারিশ করেছে, তা এখন ঝাড়খণ্ডের রাজনীতিতে মূল আলোচ্য বিষয়। হেমন্তের বিরুদ্ধে জনপ্রতিনিধি আইন ভাঙা ও লাভজনক পদের মামলায় বিধায়ক পদ খারিজের সঙ্গেই তিনি যাতে আগামী ছ’বছর নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে না পারেন সেই দাবিও তুলেছে বিজেপি। কিন্তু বিজেপির একটি সূত্র জানাচ্ছে, কমিশন কেবল হেমন্তের বিধায়ক পদ খারিজেরই সুপারিশ করে রাজ্যপালকে চিঠি দিয়েছে। হেমন্ত শিবিরের দাবি, অঙ্ক না মেলায় তাই এখন রাজ্যপালকে চিঠি প্রকাশ করতে বাধা দিচ্ছে বিজেপি।
৮১ সদস্যের ঝাড়খণ্ড বিধানসভায় শাসক সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রমাণের জাদু সংখ্যা ৪৬। জেএমএমের নেতৃত্বাধীন মহাজোটের বিধায়ক সংখ্যা ৫২। অন্য দিকে, বিরোধী দলনেতা বাবুলাল মরান্ডীর পাশে রয়েছে ২৮ বিধায়কের সমর্থন। এ ছাড়া রয়েছেন দুই নির্দল।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy