সোনা নিয়ে সোহাগে চিনকে টেক্কা দিয়েছে ভারত। কিন্তু দুশ্চিন্তায় পড়েছে নরেন্দ্র মোদীর সরকার। সোনা আমদানি কী ভাবে কমানো যায়, তার রাস্তা খুঁজতে শলা-পরামর্শ শুরু হয়েছে।
দুর্গাপুজো, ধনতেরাস, আসন্ন বিয়ের মরসুম সব মিলিয়ে সোনার চাহিদা ফের তুঙ্গে। সোনা কেনায় চিন বরাবরই প্রথম স্থানে। ভারত দ্বিতীয়। কিন্তু ওয়ার্ল্ড গোল্ড কাউন্সিলের হিসেব বলছে, জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর, এই তিন মাসে সোনা কেনায় চিনকে পিছনে ফেলে দিয়েছে ভারত। যার ফলে সেপ্টেম্বরে বাণিজ্য ঘাটতি ১৮ মাসের সর্বোচ্চ অঙ্কে পৌঁছেছে। জুলাই-সেপ্টেম্বরে ভারতের বাজারে সোনার চাহিদা গিয়ে ঠেকেছে ২২৫.১ টনে। চিনের মানুষ সোনা কিনেছেন ১৮২.৭ টন। ভারতে চাহিদা সামাল দিতে এই তিন মাসে ২০৪ টন সোনা আমদানি করতে হয়েছে। গত বছর এই তিন মাসে আমদানি হয় ৯১ টন।
সোনা কেনায় ভারত বিশ্বে প্রথম হলেও এই খবরে মোটেই খুশি নন অরুণ জেটলি। কারণ, যত সোনা আমদানি হবে, তত বেশি ডলার গুনতে হবে ভারতকে। বিদেশি মুদ্রার আয়-ব্যয়ের ঘাটতি বেড়ে যাবে। যা অর্থনীতির জন্য খুশির খবর নয়।
সোনার চাহিদা যে ফের ঊর্ধ্বমুখী, পুজোর মরসুমের আগেই টের পান অর্থমন্ত্রী জেটলি। কিন্তু উৎসবের আনন্দে জল ঢেলে দিতে চাননি। বলেছিলেন, “উৎসব-মরসুম শেষ হয়ে যাক। তার পরে ভাবব।”
এ বার সত্যিই সোনা নিয়ে ভাবতে হচ্ছে অর্থমন্ত্রীকে। আজ বিকেলে জেটলির নির্দেশে নতুন অর্থসচিব রাজীব মেহরিশি রিজার্ভ ব্যাঙ্ক, রাজস্ব দফতর, ও বাণিজ্য মন্ত্রকের কর্তাদের সঙ্গে বসেন। কিন্তু রফাসূত্র মেলেনি। অর্থ মন্ত্রক সূত্রের খবর, কাল বা পরশু ফের বৈঠক বসবে। কী ভাবে সোনা আমদানিতে রাশ টানা যায়, তা খতিয়ে দেখা হবে। সেপ্টেম্বরে সোনা আমদানিতে ৩৭৫ কোটি ডলার ব্যয় হওয়ায় বিদেশি মুদ্রার আয়-ব্যয়ের ঘাটতি ১৪২০ কোটি ডলারে পৌঁছেছে। যা ১৮ মাসে সর্বোচ্চ।
কী ভাবে বিদেশি মুদ্রার ঘাটতি নিয়ন্ত্রণ করতে চাইছে কেন্দ্র? সোনা আমদানিতে যে ‘৮০:২০ নীতি’ আছে, তা আরও কড়া হতে পারে। গত বছরের জুলাইয়ে তৈরি ওই নীতি অনুযায়ী, যারা সোনা আমদানি করছে, তাদের সেই সোনার ২০% থেকে অলঙ্কার বা অন্য সামগ্রী তৈরি করে তা ফের রফতানি করতে হবে। মন্ত্রকের কর্তারা মনে করছেন, গয়না ব্যবসায়ীদের চাপে মে-তে নীতি শিথিল করা হয়। সরকারি নথিভুক্ত সংস্থাগুলিকে সোনা আমদানির অনুমোদন দেওয়া হয়।
ভারতে সোনার চাহিদা কমলে আন্তর্জাতিক বাজারেও সোনার দামে হেরফের হয়। এর আগে আমদানি শুল্ক ১০% পর্যন্ত বাড়িয়ে সোনা আমদানিতে রাশ টানতে চেয়েছিল কেন্দ্র। ফের শুল্ক বাড়ানো হবে কি না, তা-ও খতিয়ে দেখছেন অর্থ মন্ত্রকের কর্তারা। নির্দিষ্ট ব্যাঙ্ক ছাড়া বেসরকারি সংস্থাগুলির সোনা আমদানির উপর বাধানিষেধ আরোপ করা হতে পারে। সংশ্লিষ্ট মহলের একাংশের মত হল, উৎসবের মরসুম কেটে যাওয়ার পরে আরও দু’এক মাস অপেক্ষা করে দেখা হোক সোনার চাহিদা একই হারে বাড়ছে কি না। উৎসব ও বিয়ের মরসুম কেটে যাওয়ার পরে সোনার চাহিদা বাজারের নিয়মেই কমে যেতে পারে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy