মজলিস জমার আগেই ভেঙ্গে গেল আসর!
তেলঙ্গানা-মহারাষ্ট্রের পর বিহারে ভাল ফল করে পশ্চিমবঙ্গের দিকে নজর ছিল মজলিস-এ-ইত্তেহাদ-মুসলিমিন (এমআইএম)-র নেতা আসাদউদ্দিন ওয়াইসির। গোটা দেশের মুসলিমদের মসিহা হয়ে ওঠার যে স্বপ্ন দেখছিলেন হায়দরাবাদের এই বিতর্কিত নেতা, তাতে একেবারেই জল ঢেলে দিয়েছেন বিহারবাসী।
আসাদউদ্দিন ওয়াইসি যখন বিহারে নির্বাচনে লড়ার কথা ঘোষণা করেছিলেন, তখনই প্রশ্ন উঠেছিল, দক্ষিণের ওই নেতা কেন হঠাৎ এই রাজ্যকে নিয়ে উৎসাহী হচ্ছেন? কেনই বা অন্ধ্র-তেলেঙ্গানা ছেড়ে পূর্ব ভারতে নজর ঘোরাচ্ছেন কট্টর মৌলবাদী হিসেবে পরিচিত ওই নেতা।
ওয়াইসির যুক্তি ছিল, আগামী দিনে গোটা দেশের সংখ্যালঘুদের স্বার্থে তাঁর দল লড়াই করতে চায়। তাই হায়দরাবাদের গণ্ডিতে আটকে না থেকে দেশের অন্যত্র প্রভাব বিস্তারের লক্ষ্যেই বিহার নির্বাচনে লড়ার প্রস্তুতি নিয়েছেন তিনি। বিহারের পর তাঁর লক্ষ্য হল ২৭ শতাংশ মুসলিম অধ্যুষিত রাজ্য পশ্চিমবঙ্গ। ২০১৬ সালে সে রাজ্যের মুসলিমদের সমর্থন নিয়ে ভাল ফল করা হবে তাঁর পরের নিশানা। মহারাষ্ট্রের বিধানসভা নির্বাচনে ওয়াইসি কিছুটা সাফল্য পেলেও, বিহার কিন্তু ফিরিয়ে দিয়েছে এই কট্টরবাদী নেতাকে। যে কিষানগঞ্জকে ঘাঁটি করে পূর্ব ভারতে প্রভাব বাড়ানোর লড়াইয়ে নেমেছিলেন ওয়াইসি, আজ সব থেকে বড় ধাক্কা এসেছে সেখান থেকেই। একই চিত্র আরারিয়া বা পূর্ণিয়ার মতো সীমাঞ্চলের অন্য জেলাগুলিতেও।
অথচ নির্বাচনে মৌলবাদী তাস ব্যবহার করতে পিছপা হননি ওয়াইসি।
বাজি ফাটিয়ে কংগ্রেস সমর্থকদের উল্লাস। নয়াদিল্লিতে। ছবি: পিটিআই।
তার পরেও তিনি কেন ব্যর্থ হলেন, তার একাধিক কারণ রয়েছে। প্রথমত— বিহারে ১৯৮৯ সালে ভাগলপুর দাঙ্গার পর কোনও বড় মাপের দাঙ্গার ঘটনা ঘটেনি। লালুপ্রসাদ বা নীতীশ কুমারের জমানায় বিহারের মুসলিমরা কখনওই সে ভাবে অসুরক্ষিত বোধ করেননি। তা ছাড়া ওয়াইসির মতো নেতাদের ঘাঁটি গাড়তে দেওয়ার অর্থ হল, আগামী দিনে ওই এলাকায় হিন্দু মৌলবাদী শক্তির বাড়বাড়ন্ত— নীতীশ শিবিরের পক্ষ থেকে এমন প্রচারও করা হয় স্থানীয় সংখ্যালঘু সমাজের মধ্যে।
ওয়াইসি নির্বাচনে দাঁড়ানোয় মুসলিম ভোট ভাগ হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়। সীমাঞ্চলের ভোট পর্বে মেরুকরণের উদ্দেশ্যে কোনও প্রচেষ্টাই বাদ রাখেননি বিজেপি নেতৃত্ব। এই পরিস্থিতিতে সংখ্যালঘু ভোট ভাগ হলে সে ক্ষেত্রে বিজেপি প্রার্থী ফায়দা পেয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়। তাই ওয়াইসির হঠাৎ আগমনের পিছনে নরেন্দ্র মোদী-অমিত শাহের হাত রয়েছে বলেও প্রচার করে নীতীশ-লালু জোট। আবার, বিহারের রাজনীতিতে ভূমিপুত্র না হলে সফল হওয়ার উদাহরণ বিশেষ নেই। ওয়াইসির ক্ষেত্রেও সেই সমীকরণ খেটে গিয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy