কে ডি সিংহের ২৩৮ কোটি টাকার সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করল ইডি। —ফাইল চিত্র
নীরব মোদী, বিজয় মাল্যদের মতো টাকা পাচার করে বিদেশে পালাতে পারেন কানওয়ারদীপ সিংহ ওরফে কে ডি সিংহ? চিট ফান্ড কাণ্ডে এমনই বিস্ফোরক অভিযোগ পেয়ে এবার এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের (ইডি) নজরে তৃণমূলের এই রাজ্যসভার সাংসদ। কেডি সিংহর ২৩৮ কোটি টাকার সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করেছে ইডি। তার মধ্যে রয়েছে রিসর্ট, শো-রুম। ফ্রিজ করা হয়েছে একাধিক ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট।
আর্থিক লেনদেন সংক্রান্ত নজরদার সংস্থা ‘সিকিওরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ বোর্ড অব ইন্ডিয়া’ (সেবি) সম্প্রতি কে ডি সিংহের বিরুদ্ধে একটি অভিযোগ দায়ের করে। তাতে বলা হয়, অ্যালকেমিস্ট গ্রুপের কর্ণধার তথা তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ কে ডি সিংহ প্রায় ১০ কোটি মার্কিন ডলার বিদেশে ‘সাইফনিং’ বা পাচারের চেষ্টা করছেন। ভারতীয় মুদ্রায় যার মূল্য প্রায় ৭০০ কোটি টাকা। সেবির ওই অভিযোগপত্রে আরও বলা হয়, কেডি সিংহ দেশ ছেড়ে পালানোর ছক কষছেন। ইতিমধ্যেই সাইপ্রাসের মতো কর ফাঁকির স্বর্গরাজ্যে টাকা পাচার করেছেন। প্রায় এক কোটি টাকা পাঠিয়ে সাইপ্রাসে একটি নতুন সংস্থাও খুলে ফেলেছেন কেডি সিংহ।
কে ডি সিংহের বিরুদ্ধে চিট ফান্ড কেলেঙ্কারির অভিযোগের তদন্ত করছিল ইডি। সেবির এই অভিযোগ পেয়েই আরও সক্রিয় হয় কেন্দ্রীয় এই আর্থিক দুর্নীতি সংক্রান্ত তদন্তকারী সংস্থা। তদন্তে নেমে হিমাচল প্রদেশের শিমলার কুরফিতে কেডি সিংহের একটি রিসর্ট ‘সিল’ করে দিয়েছে ইডি। চণ্ডিগড়ের একটি শো-রুম-সহ হরিয়ানাতেও একাধিক সম্পত্তি নিজেদের হেফাজতে নেওয়া হয়েছে বলে ইডি সূত্রের খবর। এর পাশাপাশি সাংসদের একাধিক ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টও ‘ফ্রিজ’ করে দেওয়া হয়েছে, যাতে ওই সব অ্যাকাউন্ট থেকে আর কোনও লেনদেন করা না পারেন তিনি।
আরও পডু়ন: ‘হিন্দু মেয়েদের ছুঁলে হাত কেটে নেব’, কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর বিতর্কিত মন্তব্য ঘিরে টুইট-যুদ্ধ
আরও পড়ুন: সন্তান না হওয়ায় একঘরে করেছিল সমাজ, ‘প্রতিশোধ’ নিয়ে পদ্মশ্রী পেলেন থিম্মাক্কা
২০১০ সালে প্রথম ঝাড়খণ্ড মু্ক্তি মোর্চার হয়ে ঝাড়খণ্ড থেকে রাজ্যসভার সাংসদ হন পঞ্জাবের ফতেগড় সাহিবের বাসিন্দা শিল্পপতি কে ডি সিংহ। কিন্তু কয়েক মাস পরেই দল পাল্টে যোগ দেন তৃণমূলে। রাজ্যসভায় জেএমএস-এর তিনিই একমাত্র সাংসদ হওয়ায় অবশ্য দলত্যাগ আইনে পড়েননি। পরে তৃণমূলের টিকিটে বাংলা থেকে রাজ্যসভায় ফের নির্বাচিত হন তিনি। তিনি সাংসদ হওয়ার আগে ২০০৯ সালে আয়কর হানায় তাঁর ২২ কোটির হিসাব বহির্ভূত সম্পত্তির হদিশ মিলেছিল। এর পর ২০১৩ সালে তাঁর সংস্থা আলকেমিস্ট গ্রুপের নাম জড়ায় বেআইনি অর্থলগ্নি কেলেঙ্কারির সঙ্গে। অভিযোগ ওঠে, বাজার থেকে তাঁর সংস্থা বেআইনি ভাবে প্রায় ১০০০ কোটি টাকা তুলেছিল। এ ছাড়াও নারদ স্টিং অপারেশনের জন্য ম্যাথু স্যামুয়েলকে ৮০ লক্ষ টাকা দেওয়ার অভিযোগ ওঠে কেডি সিংহর বিরুদ্ধে। বর্তমানে তিনি খাতায়-কলমে তৃণমূল সাংসদ ঠিকই। কিন্তু বেশ কয়েক বছর ধরেই তৃণমূল কোনও সম্পর্ক রাখে না কে ডি সিংহের সঙ্গে। বিজেপির সঙ্গে তাঁর ঘনিষ্ঠতা বৃদ্ধির ইঙ্গিত পাওয়ার পর থেকেই এই সাংসদের সঙ্গে তৃণমূল সব সম্পর্ক ছিন্ন করেছে।
ভারতের রাজনীতি, ভারতের অর্থনীতি- সব গুরুত্বপূর্ণ খবর জানতে আমাদের দেশ বিভাগে ক্লিক করুন।)
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy