Advertisement
০৪ নভেম্বর ২০২৪

দিল্লি কি এ বারেও দূর অস্ত্ বিজেপির

দিল্লিতে লোকসভা আসন ৭টি। বিধানসভায় ৭০টি। ২০১৪-র লোকসভা ভোটে বিজেপি দিল্লির সব ক’টি আসনে জিতলেও বিধানসভায় জুটেছিল মাত্র ৩টি আসন।

নরেন্দ্র মোদী-অমিত শাহ। ফাইল চিত্র।

নরেন্দ্র মোদী-অমিত শাহ। ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৭ জানুয়ারি ২০২০ ০২:১১
Share: Save:

দিল্লিতে ভোট ৮ ফেব্রুয়ারি। সমীক্ষা বলছে ১১ তারিখ ফল বেরোলে, হাসি ফুটবে সম্ভবত অরবিন্দ কেজরীবালের মুখেই। সমীক্ষা মেলে না সব সময়, কিন্তু রাজনীতির লোকজন ও দিল্লিবাসীও খুব একটা অবিশ্বাস করছেন না সমীক্ষার এই ফল। কেজরীবালও ভোটের দিন ঘোষণার পরই সাফ বলেছেন, ‘‘পাঁচ বছর কাজ করে থাকলে ভোট দিন আমাদের। আর কাজ না-করে থাকলে ভোট দেবেন না।’’ ‘‘দেশের আর কোনও মুখ্যমন্ত্রী সম্ভবত এমন কথা বলেননি,’’ সে কথাও উল্লেখ করেছেন আত্মবিশ্বাসী দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী।

দিল্লিতে লোকসভা আসন ৭টি। বিধানসভায় ৭০টি। ২০১৪-র লোকসভা ভোটে বিজেপি দিল্লির সব ক’টি আসনে জিতলেও বিধানসভায় জুটেছিল মাত্র ৩টি আসন। বাকি ৬৭টিতেই জেতে আপ। ২০১৯-এও লোকসভা ভোটেও দিল্লির সব ক’টি আসনে জিতেছে বিজেপি। কেন্দ্রে ক্ষমতায় ফিরেছেন নরেন্দ্র মোদী। প্রশ্ন উঠেছে, এ বারে বিধানভা ভোটেও কি ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি হতে চলেছে!

কেন্দ্রে ক্ষমতায় থাকলেও নাকের ডগায় কেজরীর শাসন বিজেপির কাছে বরাবরই প্রবল অস্বস্তির। তার উপরে গত এক বছরে ঝাড়খণ্ড-সহ পাঁচ রাজ্যে সরকার খুইয়েছে বিজেপি। এনআরসি এবং সিএএ নিয়ে বিতর্কের মধ্যেই বছরের শুরুতেই দিল্লি দখল করে দেশব্যাপী সমর্থকদের চাঙ্গা করতে মরিয়া নরেন্দ্র মোদী, অমিত শাহেরা। ক্ষমতা দখলের লড়াইয়ে এ বারও বেশ কিছুটা পিছন থেকে শুরু করছে কংগ্রেস। এই ভোট তাদের কাছে কার্যত রাজধানীতে নতুন করে প্রাসঙ্গিকতা ফিরে পাওয়ার লড়াই।

আগামী ২২ ফেব্রুয়ারি শেষ হচ্ছে দিল্লি বিধানসভার মেয়াদ। ১৫ ফেব্রুয়ারি থেকে সিবিএসই-র দশম শ্রেণির পরীক্ষা। তার আগে ভোট পর্ব মিটিয়ে ফেলতে মুখ্য নির্বাচন কমিশনার সুনীল আরোরা আজ জানান, ৭০ আসনে ভোট হবে এক দিনে। ৮ ফেব্রুয়ারি। গণনা ১১ ফেব্রুয়ারি। এর পরপরই এবিপি নিউজ এবং সি ভোটারের জনমত সমীক্ষা সম্প্রচার করা হয়। জানানো হয়, আসন কমবে আপের। তবে ৫৯টি আসনে জিতে কেজরীই ফিরতে চলেছেন। বিজেপি ও কংগ্রেস পেতে পারে যথাক্রমে ৮টি ও ৩টি আসন। ভোটের দিনক্ষণ ঘোষণার পরে সমীক্ষার ফল জানিয়ে চ্যানেলটি নির্বাচনী বিধি ভেঙেছে বলে কমিশনের কাছে অভিযোগ করেছেন নয়াদিল্লি কেন্দ্রের বিজেপি সাংসদ মীনাক্ষী লেখি।

শাহরা মুখে মোদীর ভরসায় দিল্লি দখলের কথা বললেও এ নিয়ে প্রবল সংশয় রয়েছে। ঝাড়খণ্ডে জয় নিশ্চিত ধরে নিয়েও ধাক্কা খেতে হয়েছে। এ বার তো প্রতিপক্ষ কেজরীবাল। তাঁর সমান মাপের কোনও নেতা পাচ্ছে না বিজেপি। বিজেপি নেতারাই মানছেন ধারে-ভারে অনেকটাই পিছিয়ে দলের দিল্লি সভাপতি মনোজ তিওয়ারি।

কেজরী এ দিন দাবি করেছেন, কে কোন দলের সে কথা না ভেবে নিরন্তর কাজ করেছে তাঁর সরকার। এ বার তাঁরা ঘরে ঘরে যাবেন। সন্দেহ নেই তাঁদের প্রচারের মুল অস্ত্র হবে শিক্ষা-স্বাস্থ্যে আমূল সংস্কার। সরকারি স্কুলের মানোন্নয়ন, মহল্লা ক্লিনিক চালু করা, বিদ্যুতের বিলে ২০০ ইউনিট পর্যন্ত ছাড়, বাসে মহিলাদের বিনা ভাড়ায় যাতায়াতের বন্দোবস্তের মতো প্রসঙ্গ। উল্টো দিকে মোদী সরকার দিল্লির কলোনিগুলিকে বৈধতা দেওয়ার ঘোষণা করলেও কাজ এগোয়নি। এনআরসি, সিএএ আর জাতীয় জনসংখ্যা পঞ্জি (এনপিআর) প্রশ্নে মেরুকরণই মূল ভরসা বিজেপি। তাতেই অন্তত ৩০টি আসন আশা করছে তারা। হিন্দু ভোট না-হারাতে নাগরিকত্ব প্রশ্নে নীরব থাকারই কৌশল নিয়েছেন কেজরীবাল।

অন্য বিষয়গুলি:

Delhi Assembly Election 2020 Delhi Elections 2020
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE