ছবি: পিটিআই।
দেশ জুড়ে কৃষক এবং দলিতদের অসন্তোষের এমনিতেই বেশ চাপে বিজেপি। এই অবস্থায় লোকসভা ভোটের আগে দলিত মন জিততে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী লালকেল্লা থেকে স্বাধীনতা দিবসের বক্তৃতায় কিছু ঘোষণা করতে পারেন বলে রাজনৈতিক মহলে জোর চর্চা চলছে। তার মধ্যেই বিজেপির চাপ বাড়িয়ে আগামী ৯ অগস্ট ‘ভারত বনধ’-এর ডাক দিল দলিত বিভিন্ন সংগঠনের যুক্তমঞ্চ— সর্বভারতীয় অম্বেডকর মহাসভা।
মহাসভার চেয়ারম্যান অশোক ভারতী এক সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন, তাঁদের এই মঞ্চে রয়েছে ন্যাশনাল কনফেডারেশন অব দলিত অ্যান্ড আদিবাসী, সিপিএমের সারা ভারত কিষানসভা, ওয়ান র্যাঙ্ক ওয়ান পেনশন’-এর দাবিতে আন্দোলনকারী সংগঠন-সহ অনেকে। অশোকের কথায়, ‘‘আমাদের এই আন্দোলনের সঙ্গে কোনও রাজনৈতিক দলের সম্পর্ক নেই। তবে মায়াবতীর বহুজন সমাজ পার্টি এই বন্ধকে সমর্থন করছেন।’’ সারা ভারত কিষাণসভার নেতা হান্নান মোল্লা বলেন, ‘‘আমি সিপিএমের সদস্য। তবে কোনও রাজনৈতিক দল নয়, এ ক্ষেত্রে আমি কৃষক সংগঠনের প্রতিনিধিত্ব করছি।’’
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের একাংশের ব্যাখ্যা, মোদী সরকার এবং বিজেপি নেতারা যখন দলিত এবং কৃষকদের মন জিততে বিভিন্ন ঘোষণা করছেন, দলিতদের বাড়ি গিয়ে খাচ্ছেন, তখন এই বন্ধের ডাক বুঝিয়ে দিচ্ছে, দলিত বা কৃষকদের অসন্তোষ মোটেই কমেনি। বিশেষত প্রধানমন্ত্রীর ১৫ অগস্টের বক্তৃতার আগে এই বন্ধের ডাক দলিত-কৃষক বিদ্রোহেরই বার্তা দিচ্ছে।
মোদী সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকে বিভিন্ন ঘটনায় ক্ষুব্ধ দলিত এবং কৃষকেরা। কৃষক আত্মহত্যা, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ভি কে সিংহের তরফে ফরিদাবাদে দুই দলিত বালককে পুড়িয়ে মারার ঘটনাকে ‘গাড়ি চাপা পড়ে কুকুরের মৃত্যু’র সঙ্গে তুলনা, বিভিন্ন বিজেপি শাসিত রাজ্যে দলিতদের উপর অত্যাচার বা হত্যা, হায়দরাবাদে রোহিত ভেমুলার আত্মহত্যা-সহ নানা ঘটনায় তাঁদের ক্ষোভ বেড়েছে। তফসিলিদের উপর অত্যাচার প্রতিরোধ আইনের কিছু ধারা লঘু করার প্রতিবাদে গত ২ এপ্রিল দেশ জুড়ে বন্ধ ডেকেছিল বেশ কয়েকটি দলিত সংগঠন। দেশ জুড়ে তার প্রভাবও পড়েছিল যথেষ্ট। আবার মার্চে মহারাষ্ট্রে সিপিএমের কৃষকসভার ডাকে ‘লং মার্চ’ও বিপুল সাড়া ফেলেছিল। ফলে আবার দলিত-কৃষক সংগঠনের একাংশের ভারত বন্ধের ডাক মোদী সরকারের উদ্বেগ বাড়াতে পারে।
পরিস্থিতি বুঝে দলিত নেতা তথা প্রাক্তন সাংসদ রাম শাকালকে রাজ্যসভায় মনোনীত করে মোদী সরকার বার্তা দিতে চাইছে। যদিও অশোক বলেন, ‘‘বিজেপি এখন যা-ই করুক, দেশের ২৫ শতাংশ দলিত, ৪৫ শতাংশ ওবিসি এবং ১৭ শতাংশ মুসলিম এই বন্ধের শরিক হবেন।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy