Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
coronavirus

দৈনিক সংক্রমণ বেড়ে প্রায় পৌনে ৩ লাখ, দেড় কোটি ছাড়াল দেশে মোট আক্রান্তের সংখ্যা

গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে নতুন করে কোভিডে আক্রান্ত হয়েছেন ২ লক্ষ ৭৩ হাজার ৮১০ জন। যা রবিবারের থেকে প্রায় ১২ হাজার বেশি।

দেশের কোভিড পরিসংখ্যান।

দেশের কোভিড পরিসংখ্যান। গ্রাফিক- শৌভিক দেবনাথ।

নিজস্ব প্রতিবেদন
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৯ এপ্রিল ২০২১ ১০:০২
Share: Save:

করোনাভাইরাসের দ্বিতীয় ঢেউ ইতিমধ্যেই উল্টে পাল্টে দিয়েছে যাবতীয় হিসেব নিকেশ। দেশে দৈনিক আক্রান্ত আড়াই লক্ষ ছাড়িয়ে বেড়েই চলেছে। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে নতুন করে কোভিডে আক্রান্ত হয়েছেন ২ লক্ষ ৭৩ হাজার ৮১০ জন। যা রবিবারের থেকে প্রায় ১২ হাজার বেশি। এক দিনে দেশে আক্রান্তের নিরিখেও এই সংখ্যা এখনও অবধি সর্বোচ্চ। সংক্রমণের সঙ্গে কোভিডের দ্বিতীয় ঢেউয়ে বেড়েছে দৈনিক মৃত্যুর সংখ্যাও। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে মৃত্যু হয়েছে ১ হাজার ৬১৯ জনের। এক দিনে মৃত্যুর নিরিখে গোটা করোনা পর্বে যা সর্বোচ্চ।

গত ৫ দিন ধরে দু’লক্ষাধিক নতুন সংক্রমণের জেরে দেশে মোট আক্রান্তের সংখ্যা দেড় কোটি ছাড়িয়ে গেল। এ ব্যাপারে বিশ্বে আমেরিকার ঠিক পরই রয়েছে ভারত। মোট মৃত্যুও দেশে ১ লক্ষ ৭৮ হাজার ছাড়িয়েছে। এই সংক্রমণ বৃদ্ধির জেরে দেশে বাড়ছে সক্রিয় রোগীর সংখ্যা। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে সক্রিয় রোগী বেড়েছে ১ লক্ষ ২৮ হাজার ১৩ জন। এই মুহূর্তে দেশে মোট সক্রিয় রোগীর সংখ্যা দাড়িয়েছে ১৯ লক্ষ ২৯ হাজার ৩২৯ জন। এত সংখ্যক সক্রিয় রোগী এর আগে হয়নি দেশে। রোগী বৃদ্ধির জেরে হাসপাতাল, নার্সিংহোমগুলিতে শয্যা প্রায় আর খালি নেই। একই শয্যায় দু’জন রোগী শুয়ে থাকার দৃশ্য দেখা গিয়েছে বেশ কয়েকটি রাজ্যে। এমনকি অক্সিজেন না পেয়ে কোভিড রোগীর মৃত্যুর খবর আসছে। দৈনিক মৃত্যু এই পর্যায়ে চলে যাওয়ায় হাসপাতালে মর্গের বাইরে, শ্মশানে এবং কবরস্থানে দেহের সারি পড়ে থাকছে। সব মিলিয়ে যে পরিস্থিতির তৈরি হয়েছে দেশে তা দেখা যায়নি করোনার প্রথম পর্বেও।

করোনার এই দ্বিতীয় ঢেউয়ের জেরে দেশের বেশ কয়েকটি রাজ্যের পরিস্থিতি ইতিমধ্যেই লাগামছাড়া হয়েছে। বাকি রাজ্যগুলির পরিস্থিতিও সেই দিকেই এগোচ্ছে। গত বছরের মতো এ বারেও দৈনিক আক্রান্ত এবং মৃত্যু সবথেকে বেশি মহারাষ্ট্রে। গত ২৪ ঘণ্টায় সাড়ে ৬৮ হাজারের বেশি লোক নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন সে রাজ্যে। মারা গিয়েছেন ৫১৯ জন। এর পর রয়েছে উত্তরপ্রদেশ। সেখানে দৈনিক আক্রান্ত সোমবার সাড়ে ৩০ হাজার ছাড়িয়েছে। রাজধানী দিল্লিতে তা ২৫ হাজারের বেশি। কর্নাটক এবং কেরলে তা ১৯ হাজার এবং ১৮ হাজারের বেশি। ছত্তীসগঢ়ে অবশ্য গত কয়েক দিনের থেকে সংক্রমণ একটু কমে সাড়ে ১২ হাজারের নীচে রয়েছে। মধ্যপ্রদেশে দৈনিক আক্রান্ত সোমবার ১২ হাজার ছাড়িয়েছে। তামিলনাড়ু, গুজরাত এবং রাজস্থানেও দৈনিক আক্রান্ত ১০ হাজার ছাড়িয়েছে।

পশ্চিমবঙ্গ এবং বিহারে গত ক’দিনে দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যা লাফিয়ে লাফিয়ে বেড়েছে। বিহারে গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন আক্রান্ত সাড়ে ৮ হাজার ছাড়িয়েছে। পশ্চিমবঙ্গে তা সাড়ে ৮ হাজারের একটু কম। হরিয়ানাতেও দৈনিক আক্রান্ত ৭ হাজার ছাড়িয়েছে। অন্ধ্রপ্রদেশে সাড়ে ৬ হাজার। পঞ্জাবে তা প্রায় ৫ হাজার। তেলঙ্গানা এবং ঝাড়খণ্ডে ৪ হাজার। ওড়িশাতে দৈনিক আক্রান্ত বেড়ে সাড়ে ৩ হাজার পার করেছে। উত্তরাখণ্ডে তা আড়াই হাজার। জম্মু ও কাশ্মীরে দেড় হাজার। গোয়া, পুদুচেরী, হিমাচল প্রদেশে গত ক’দিনে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়লেও তা ১ হাজারের নীচেই রয়েছে।

সংক্রমণের এই বাড়বাড়ন্ত রুখতে আরও এক বার লকডাউনের কড়াকড়ি ফিরিয়ে আনতে চাইছে রাজ্যগুলি। মহারাষ্ট্রে ১ মে অবধি জারি হয়েছে ‘করোনা কার্ফু’। মধ্যপ্রদেশ এবং উত্তরপ্রদেশে রাত্রিকালীন কার্ফুর পাশাপাশি সপ্তাহান্তে হচ্ছে সম্পূর্ণ লকডাউন। রাজস্থানেও সোমবার থেকে শুরু হচ্ছে ১৫ দিনের লকডাউন। তামিলনাড়ুতে মঙ্গলবার থেকে শুরু হবে রাত্রিকালীন কার্ফু এবং রবিবার লকডাউন। বিহার, কর্নাটকের মতো রাজ্যেও রাত্রিকালীন কার্ফু জারি হয়েছে। পাশাপাশি মাস্ক পরা নিয়ে জনগণের উদাসীনতা ঠেকাতে কঠোর হচ্ছে স্থানীয় প্রশাসনগুলি। এ সবের মধ্যে দেশে চলছে টিকাকরণ। ৪৫ বছরের বেশি বয়সীরা নিজেদের পরিচয়পত্র দেখিয়ে টিকা নিচ্ছেন। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে টিকা নিয়েছেন ১২ লক্ষ ২৯ হাজার ৯৭৬ জন। এ নিয়ে দেশে মোট ১২ কোটি ৩৮ লক্ষ ৫২ হাজার ৫৬৬ কোভিড টিকার ডোজ দেওয়া হয়েছে।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy