ইভিএম ছেড়ে ব্যালটে ফেরার দাবি তুলল কংগ্রেস। সেই সঙ্গে খারিজ করল এক সঙ্গে লোকসভা ও বিধানসভা ভোট করানো নিয়ে নরেন্দ্র মোদীর প্রস্তাব। পাশাপাশি অর্থের জোরে দলবদল রুখতে ছ’বছরের জন্য ভোটে না লড়ার শাস্তির প্রস্তাবও করল তারা।
কংগ্রেসের প্লেনারি অধিবেশনের প্রথম দিনে আজ নির্বাচন সংস্কার নিয়ে এমনই একগুচ্ছ প্রস্তাব করল কংগ্রেস। যা নিয়ে বিজেপির দাবি, নরেন্দ্র মোদীকে হারাতে এমনিতেই কংগ্রেস বিরোধীদের জোট গড়ার ব্যর্থ চেষ্টা করছে। তারপরেও হারের আশঙ্কায় এখন অন্য অনেক বিরোধী দলের মতো আগেভাগেই ইভিএমের বিরোধ করে বসল। এত দিন সপা-বসপাও ইভিএমের বিরোধিতা করেছে। সম্প্রতি গোরক্ষপুর আর ফুলপুরের উপনির্বাচন জয়ের পর সেই অভিযোগ নিয়ে তারা চুপ।
রাজনৈতিক প্রস্তাবে কংগ্রেস জানিয়েছে, ভোটের ফল বদলের জন্য ইভিএমের ‘অপব্যবহার’ হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠছে। ফলে নির্বাচনী প্রক্রিয়া নিয়ে সংশয় দূর করতে ফের ব্যালটের ব্যবহার শুরু করা প্রয়োজন। অনেক বড় গণতান্ত্রিক দেশই এ পথে হেঁটেছে।
প্রায় দু’দশক আগে ভারতে শুরু হয় ইভিএম বা বৈদ্যুতিন ভোটযন্ত্রের ব্যবহার। ২০০৯ সালে বিরোধী আসনে থাকার সময়ে ইভিএমে কারচুপির সম্ভাবনা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন প্রবীণ বিজেপি নেতা লালকৃষ্ণ আডবাণী। পরে নরেন্দ্র মোদী জমানায় বসপা থেকে কংগ্রেস, সব বিরোধী দলই বার বার ইভিএমে কারচুপির অভিযোগে সরব হয়েছে। সম্প্রতি গোরক্ষপুর ও ফুলপুর আসনে খারাপ ইভিএম ব্যবহার করে নির্বাচনী প্রক্রিয়ার গতি কমিয়ে দেওয়ার অভিযোগ করেছিলেন সমাজবাদী পার্টির নেতা অখিলেশ যাদব।
আরও পড়ুন: ফসলের দাম নিয়ে জবাব প্রধানমন্ত্রীর
তবে নির্বাচন কমিশন কোনও ভাবেই কারচুপির সম্ভাবনা মানতে রাজি নয়। ভোটারদের সংশয় কাটাতে ২০১৭ সালে গুজরাত ও হিমাচল প্রদেশে ভোটের সময়ে ইভিএমের সঙ্গে একটি বাড়তি যন্ত্র ব্যবহার শুরু করেছে কমিশন। ‘ভিভিপ্যাট’ নামে ওই যন্ত্র থেকে বেরনো নথি দেখে বোঝা সম্ভব ভোটারের ভোট তাঁর পছন্দের প্রার্থীর ঘরেই গিয়েছে কিনা। গুজরাত ভোটের ভিভিপ্যাট নথির অন্তত ২৫ শতাংশ আলাদা ভাবে গণনার জন্য সুপ্রিম কোর্টে আবেদন জানিয়েছিল কংগ্রেস। কিন্তু শীর্ষ আদালত সেই আর্জি খারিজ করে জানায়, নির্বাচনী প্রক্রিয়ার বড় সংস্কার নিয়ে আর্জি পেশ হলে এই বিষয়টিকে তার অন্তর্ভুক্ত করা যেতে পারে।
এক সঙ্গে লোকসভা ও বিধানসভা ভোট করা নিয়ে মোদী সরকারের প্রস্তাব ‘অবাস্তব’ বলে মনে করে কংগ্রেস। আজ দলের তরফে জানানো হয়েছে, এই প্রস্তাব সংবিধানের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। বিষয়টির প্রভাব সুদূরপ্রসারী। তাই জাতীয় স্তরে ঐকমত্য তৈরি করা প্রয়োজন।
কংগ্রেসের মতে, বিভিন্ন বিধানসভার স্পিকারেরা তাঁদের ক্ষমতার অপব্যবহার করে দলবদলে সাহায্য করেন। এতে স্পিকার পদের মর্যাদা ক্ষুণ্ণ হয়। পাশাপাশি অর্থবলে রাজনৈতিক অস্থিরতা তৈরির সুযোগ পায় কোনও কোনও পক্ষ। তাই দলবদল রুখতে শাস্তি হিসেবে ছ’বছর ভোটে লড়া রোখার জন্য আইন চায় কংগ্রেস।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy