শনিবারের সকাল। দিল্লির পাঁচ নম্বর কৃষ্ণ মেনন মার্গে প্রধান বিচারপতি দীপক মিশ্রের বাসভবন। বাংলোর সামনে অপেক্ষায় থাকা সংবাদমাধ্যমের ক্যামেরায় ধরা পড়ল, প্রধানমন্ত্রীর দফতরের প্রিন্সিপ্যাল সচিব নৃপেন্দ্র মিশ্রের গাড়ি বেরিয়ে যাচ্ছে বাংলো থেকে।
সুপ্রিম কোর্টের শীর্ষ বিচারপতিদের অন্তর্দ্বন্দ্ব নিয়ে নীরব থাকার কৌশল নিয়েছে নরেন্দ্র মোদী সরকার। কারণ বিরোধীরা অভিযোগ তুলেছেন, বিচার বিভাগে মোদী সরকারের অতিরিক্ত হস্তক্ষেপের ফলেই বিচারপতিদের মধ্যে এই ফাটল ধরেছে। প্রধান বিচারপতির নিরপেক্ষতা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন চার প্রবীণতম বিচারপতি।
প্রকাশ্যে নীরব অবস্থান নিলেও মোদী সরকার যে চুপ করে বসে নেই, প্রধান বিচারপতির বাড়িতে নৃপেন্দ্রর উপস্থিতি থেকেই তা স্পষ্ট হয়ে যায়। সংবাদমাধ্যমে এই খবর ছড়িয়ে পড়ার পরে সরকারি সূত্রে জানানো হয়, বাড়িতে গেলেও প্রধান বিচারপতির সঙ্গে নৃপেন্দ্র মিশ্রের বৈঠক হয়নি। প্রশ্ন ওঠে, তা হলে কি প্রধান বিচারপতি প্রধানমন্ত্রীর প্রিন্সিপ্যাল সচিবের সঙ্গে দেখা করতে অস্বীকার করলেন?
নৃপেন্দ্র মিশ্র অবশ্য বলেছেন, তিনি প্রধান বিচারপতিকে নববর্ষের শুভেচ্ছা জানাতে গিয়েছিলেন। কিন্তু দেখা হয়নি। কারণ ওই সময় প্রধান বিচারপতি পুজোয় ব্যস্ত ছিলেন। তাই তিনি গ্রিটিংস কার্ড রেখে চলে আসেন। বিরোধীরা প্রশ্ন তুলেছেন, হঠাৎ ১৩ জানুয়ারি কেন নতুন বছরের শুভেচ্ছা জানানোর প্রয়োজন হল?
কংগ্রেস দাবি তোলে, প্রধানমন্ত্রী এর জবাব দিন। দলীয় মুখপাত্র রণদীপ সূরজেওয়ালা বলেন, ‘‘প্রধানমন্ত্রীকে জবাব দিতে হবে, কেন তিনি তাঁর বিশেষ দূতকে প্রধান বিচারপতির কাছে পাঠিয়েছিলেন!’’
বিচার বিভাগে হস্তক্ষেপ নিয়ে গত কাল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কেন্দ্রের দিকে আঙুল তুলেছিলেন। আজ এনডিএ শরিক শিবসেনাও একই অভিযোগ তুলেছে। বাজপেয়ী সরকারের অর্থমন্ত্রী, মোদী-বিরোধী বলে পরিচিত যশবন্ত সিন্হারও যুক্তি, ‘‘যদি চার বিচারপতি বলে থাকেন গণতন্ত্র আক্রান্ত, তা হলে সে কথাকে গুরুত্ব দিতে হবে। এ বার বিজেপি নেতা ও কেন্দ্রীয় মন্ত্রীরাও ভয় ঝেড়ে ফেলে মুখ খুলুন।’’
বিচারপতি নিয়োগ নিয়ে সরকারের সঙ্গে বিচার বিভাগের বিবাদ রয়েছে। তখন বিচারপতিদের মধ্যেই ফাটল ধরায় সরকার মজা দেখছিল বলে অভিযোগ। কিন্তু পরিস্থিতি বেলাগাম হলে সরকারের ঘাড়ে দায় এসে পড়তে পারে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy