ছবি: অশোক গহৌলতের টুইটার অ্যাকাউন্টের সৌজন্যে এবং ফাইল চিত্র।
এক দিকে থেকে মা। অন্য দিক থেকে ছেলে। কংগ্রেস প্লেনারি অধিবেশেন থেকে বিজেপি-র রাজনীতিকে দুই দিক থেকে নিশানা করলেন সনিয়া এবং রাহুল গাঁধী। সনিয়া আঙুল তুললেন দুর্নীতি বা কালো টাকা দমনের নামে মোদী সরকারের ‘ড্রামাবাজি’র দিকে। আর রাহুল নিশানা করলেন বিদ্বেষের রাজনীতিকে।
শনিবার থেকে দিল্লির ইন্দিরা গাঁধী ইন্ডোর স্টেডিয়ামে শুরু হয়েছে কংগ্রেসের প্লেনারি অধিবেশন। দলের সভাপতি পদে বসার পর এই প্রথমবার পূর্ণাঙ্গ অধিবেশনে বলতে গিয়ে হাতে গোনা চার মিনিট সময় নিয়েছেন রাহুল। আগাগোড়া নিশানায় নরেন্দ্র মোদী, তাঁর দল এবং সরকার। রাহুল বলেন, ‘‘কংগ্রেস এবং বিজেপির মধ্যে আকাশ-পাতাল পার্থক্য। ওরা বিদ্বেষে বিশ্বাস করে। আমাদের হাতিয়ার ভালবাসা। কংগ্রেস যে কাজ করে, তা শুধুমাত্র দেশের জন্যেই করে।’’
কয়েক মাস আগে দলীয় সভাপতির চেয়ার রাহুলের হাতে তুলে দেওয়া সনিয়াও আজ ছিলেন বেশ আক্রমণাত্মক। মোদী সরকারের দিকে আঙুল তুলে তিনি বলেন, “আমরা প্রমাণ-সহ সরকারের কুকীর্তি, দুর্নীতি, প্রতারণার ঘটনা সামনে এনেছি। মানুষ এখন বুঝে গিয়েছেন যে, ২০১৪ সালে দেওয়া ‘সবকা সাথ সবকা বিকাশ’ এবং ‘না খাব, না খেতে দেব’র মতো সব প্রতিশ্রুতি ছিল স্রেফ নাটক (ড্রামেবাজি) এবং ভোট পেয়ে ক্ষমতায় আসার কৌশল।”
আরও পড়ুন: অসন্তুষ্ট সব শরিকই, চন্দ্রগ্রহণে ছায়া পদ্মে
বিজেপি-র বিরুদ্ধে রাহুল, সনিয়ার এই তোপ দাগার পাশাপাশি, আরও একটা তাত্পর্যপূর্ণ প্রস্তাব নিয়েছে কংগ্রেস। ইভিএম বাতিল করে পেপার ব্যালট ফিরিয়ে আনা হোক, নির্বাচন কমিশনের কাছে এই দাবি জানাবে তারা।
দু’দিনের প্লেনারি অধিবেশনে যোগ দিতে, দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে এসেছেন কংগ্রেসের প্রায় ১২ হাজার নেতা-নেত্রী। রাহুল যখন বক্তব্য রাখছেন, সেই সময় হাজির ছিলেন ইউপিএ-র চেয়ারপার্সন সনিয়া গাঁধী, প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহ, প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী পি চিদম্বরম কিংবা গুলাম নবি আজাদের মতো নেতারা। রাহুল বলেন, ‘‘প্লেনারি অধিবেশনের উদ্দেশ্য একটাই। আলোচনার মাধ্যমে কংগ্রসকে আরও শক্তিশালী করে তোলা।’’
শুক্রবার বৈঠকে বসেছিল কংগ্রেসের স্টিয়ারিং কমিটি। চলতি প্লেনারি অধিবেশনে কংগ্রেসের নতুন ওয়ার্কিং কমিটি গঠন করা হবে। কংগ্রেসের একাংশ বলছে, ২০১৯-এর লোকসভা ভোটের রণকৌশল নিয়ে যেমন এই অধিবেশনে আলোচনা হবে, ঠিক সে রকমই কোন কোন দলের সঙ্গে জোট হতে পারে, তার ইঙ্গিত এই অধিবেশন থেকেই মিলতে পারে।
রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের একাংশের বক্তব্য, গুজরাত ভোটে বিজেপিকে হারাতে না পারলেও, অন্তত ভাল ধাক্কা দিতে পারায় কংগ্রেস এখন অনেক চনমনে। রাজস্থানের বিভিন্ন ভোটেও সাফল্য মিলেছে। এ রকম অবস্থায় আত্মবিশ্বাসের সুর শোনা গিয়েছে রাহুল গাঁধীর গলায়। মোদী সরকারের শাসন নিয়ে তাঁর বক্তব্য, ‘‘দেশে বিদ্বেষ ছড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে। মানুষ নিজেদের মধ্যে হানাহানি করছে। দেশ এখন ক্লান্ত। মানুষ একটা নতুন পথের সন্ধান করছে। কংগ্রেস সেই পথের সন্ধান দেবে।’’
কংগ্রেস জানিয়েছে, প্নেনারি অধিবেশনে দলীয় কর্মীদের মতামত গুরুত্ব দিয়ে শোনা হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy