শুক্রবার শেষকৃত্য জেনারেল রাওয়তের। ফাইল ছবি।
হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয়েছে ভারতের প্রথম সেনা সর্বাধিনায়ক জেনারেল বিপিন রাওয়তের। একই সঙ্গে মৃত্যু হয়েছে তাঁর স্ত্রী মধুলিকা-সহ ১৩ জনের। ওয়েলিংটনের সেনা হাসপাতালে আশঙ্কাজনক অবস্থায় চিকিৎসা চলছে গ্রুপ ক্যাপ্টেন বরুণ সিংহের। সরকারি সূত্রের খবর, শুক্রবার দিল্লিতে সস্ত্রীক রাওয়তের শেষকৃত্য সম্পন্ন হবে।
২০২০ সালের ১ জানুয়ারি ভারতের প্রথম চিফ অব ডিফেন্স স্টাফ (সিডিএস) হিসেবে দায়িত্ব নেন জেনারেল রাওয়ত। কিন্তু কী ভাবে তিনি হয়ে উঠলেন এই পদের নির্বিকল্প পছন্দ? কী সেই ঘটনা যার পর তাঁর উপর ভরসা বাড়ে প্রধানমন্ত্রীর?
সেনার কার্যকলাপ সম্পর্কে ওয়াকিবহাল মহল বলছে, প্রকৃতপক্ষে ‘সার্জিক্যাল স্ট্রাইক’ হয়েছিল তাঁর হাত ধরেই। তবে দেশের উত্তর-পশ্চিম সীমান্তে নয়, দেশের উত্তর-পূর্ব সীমান্তে। ২০১৫ সালের জুন মাস। তখন ডিমাপুর কর্পসের কমান্ডারের দায়িত্ব সামলাচ্ছেন জেনারেল বিপিন রাওয়ত। এ দিকে ন্যাশনাল সোশ্যালিস্ট কাউন্সিল অব নাগাল্যান্ড (খাপলাং) গোষ্ঠীর তত্ত্বাবধানে নাগাল্যান্ড জুড়ে জঙ্গি কার্যকলাপ ক্রমেই নতুন করে মাথাচাড়া দিচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে পাল্টা হামলার ছক কষেন জেনারেল রাওয়ত। নিশানা করা হয়, ভারত-মায়ানমার সীমান্তের ওপারে এনএসসিএন (কে) শিবিরগুলিকে। সেই অনুযায়ী রাতের অন্ধকারে জঙ্গিদের বুকে কাঁপন ধরানো অভিযান চালায় সেনা।
এই ঘটনার পরই জেনারেল রাওয়ত নজরে পড়েন প্রধানমন্ত্রী মোদীর। এর আগেও পাকিস্তানের বিরুদ্ধে উরি সেক্টরে তাঁর বীরত্বের কাহিনি এখনও লোকমুখে ঘোরে। ২০১৭ সালের জুনে সিকিম-ভুটান-তিব্বত সীমান্তে চিনা আগ্রাসনের মুখে ভারতীয় সেনার পাল্টা আগ্রাসনই ছিল মুখের উপর জবাবের নামান্তর। ভারতীয় সেনার চাপে ঝামফেরি রিজে সড়ক নির্মাণের পরিকল্পনা রদ করতে হয় পিএলএ-কে। বিশেষজ্ঞরা বলেন, চিন যদি ঝামফেরি রিজে সড়ক নির্মাণ শেষ করে ফেলত, তা হলে ‘চিকেনস নেক’ নামে পরিচিত শিলিগুড়ি করিডোরে সমস্যা বাড়ত ভারতের। কিন্তু জেনারেল রাওয়তের নেতৃত্বে চিনকে মাঝপথেই ফেরত পাঠায় ভারতীয় সেনা। জেনারেলে স্মৃতিচারণা করতে গিয়ে তাঁর একদা সহকর্মী বলছিলেন, ‘‘যখনই জেনারেল কোনও চিন্তায় মগ্ন হতেন তখন বলতেন, যখন সংশয়ে থাকবে এক মনে প্রার্থনা করবে। সঠিক পথের হদিশ পেয়ে যাবে।’’
তবে শুধু বীরত্বের সঙ্গে নেতৃত্ব দেওয়াই নয়, অন্য আরও একটি বিষয়ে মনে রাখা হবে জেনারেল রাওয়তকে। ভারতীয় সেনার আধিকারিকরা গলফ খেলেন। দীর্ঘ দিন ধরেই এমনই দস্তুর। কিন্তু জেনারেল রাওয়ত মনে করতেন, তাঁর অধস্তনরা যে খেলার সুযোগ পান না বা পেলেও ইতস্তত করেন, সেই খেলা তাঁকে মানায় না। অসাধারণ গলফার জেনারেল রাওয়ত এক দিনের সিদ্ধান্তে গলফ খেলা ছাড়েন। মিষ্টি খেতে অত্যন্ত ভালবাসতেন। কিন্তু সামরিক শৃঙ্খলা যাঁর রক্তে তিনি অনিয়ম করবেনই বা কী করে। নিজে বিশেষ না খেলেও মিষ্টি খাওয়ানোয় জেনারেল রাওয়তের জুড়ি মেলা ছিল ভার।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy