দুপুর তিনটে। কয়েক পশলা বৃষ্টির পরে সবে রোদ উঠেছে। সংসদ চত্বরে হাসিমুখে বিজেপির এক সাংসদ বলে উঠলেন, ‘‘জয় শ্রী রাম.. সঙ্কটের মেঘ কেটে গিয়েছে। লিখে নিন, লখনউ এ বার আমাদের।’’
শনিবারই উত্তরপ্রদেশ-সহ পাঁচ রাজ্যের ভোটের ফলাফল। কিন্তু তার আগে আজ বাজেট অধিবেশনের দ্বিতীয় দফার প্রথম দিনেই জয়োল্লাস শুরু করে দিয়েছে বিজেপি শিবির। মোদী সরকারের এক শীর্ষ মন্ত্রী তো বলেই বসলেন, ‘‘লোকসভার ভোটের ফলেই বোঝা গিয়েছিল লখনউ আমাদের দিকেই ঝুঁকে রয়েছে। এ বার পঞ্জাবে হার যেমন নিশ্চিত, উত্তরপ্রদেশের জয়ও ততটাই।’’
দুপুর থেকেই বিভিন্ন রাজ্যের সাট্টার বাজারের হিসেব দিব্য ঘুরছে বিজেপি নেতাদের মোবাইলে। সাট্টা বাজারে যে দলের জয়ের সম্ভাবনা যত বেশি, তাদের দামও তত কম হয়। সেই নিরিখেই রাজধানী দিল্লির সাট্টা বাজার বলছে, উত্তরপ্রদেশের ৪০৩ টি আসনের মধ্যে বিজেপি ২৫০-২৯০টি আসন পাচ্ছে। অখিলেশ-রাহুল জোট ৬০-৭০ আর মায়াবতী পাচ্ছে ৬৫-৬৮টি আসন। গুজরাতের সাট্টা বাজারে বিজেপি ২২০-২২৫, সপা-কংগ্রেস ১০০-১০৩, বিএসপি ৬০-৬২। মধ্যপ্রদেশের বাজার বিজেপিকে দিচ্ছে ২৭০-২৮০, সপা-কংগ্রেসকে ৫০-৬০, বিএসপি ৬০-৯০। আর দেশের আর্থিক রাজধানী মুম্বই বিজেপিকে ২৫০-৩০০, সপা-কংগ্রেসকে ৮০-৯০, মায়াবতীকে ৩০-৬৭ টি আসন দিচ্ছে।
আজ বিকেলে বিভিন্ন চ্যানেলে প্রকাশিত হয়েছে বুথ ফেরত সমীক্ষার ফল। সেখানেও উত্তরপ্রদেশের সব থেকে বড় দল হিসেবে এগিয়ে বিজেপি। তবে সাট্টা বাজারে যেমন মিলেছে সংখ্যাগরিষ্ঠতা, বুথ ফেরত সমীক্ষায় ততটা সাফল্য দেখা যায়নি। বেশির ভাগ সমীক্ষাতেই বিজেপি উত্তরপ্রদেশের সব থেকে বড় দল। কিন্তু সরকার গড়ার প্রয়োজনীয় সংখ্যার থেকে কিছুটা পিছিয়ে। যদিও বিজেপি শিবিরের উচ্ছ্বাস কমেনি। দলের এক শীর্ষ নেতা দাবি করেন, ‘‘লোকসভা ভোটের সময় উত্তরপ্রদেশে ৮০টি আসনের মধ্যে ৭৩টিই আমরা আসন পাব, কোনও বুথ ফেরত সমীক্ষা তা দেখাতে পারেনি। সবাই কম আসন দিয়েছিল বিজেপিকে। দেখবেন, এ বারও নিজের জোরেই লখনউয়ে সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাব আমরা।’’
বুথ ফেরত সমীক্ষার ফল যেমন সব সময় মেলে না, সাট্টা বাজারের হিসেবও ভুল প্রমাণিত হয়েছে বারবার। তবে জয়ের ইঙ্গিত মিলতেই মুখ্যমন্ত্রীর নাম নিয়ে বিজেপিতে জল্পনা শুরু হয়েছে। রাজনাথ সিংহ থেকে উমা ভারতী, রাজ্য সভাপতি কেশব প্রসাদ মৌর্য থেকে যোগী আদিত্যনাথ, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী মনোজ সিন্হা কিংবা লখনউয়ের মেয়র দীনেশ শর্মা— সব নাম নিয়েই আলোচনা তুঙ্গে।
সংসদের শুরুর দিনে আজ সব দলের নেতাদের মধ্যেই আজ একটাই আলোচনা— ভোটের ফল! বিজেপির এক সাংসদ বলেন, ‘‘নেতাদের শরীরের ভাষা পড়লেই উত্তরপ্রদেশের ছবিটা পড়তে পারবেন। দেখুন মুলায়ম সিংহ যাদব সংসদে এলেও কতটা হতাশ তিনি। সেই দলের নেতা রবিদাস মেহরোত্রা তো বলেই দিয়েছেন, রাহুল গাঁধীর সঙ্গে জোট করে অখিলেশ ভুল করেছেন।’’ বিজেপির নেতাটির দাবি, অনেক জায়গায় কংগ্রেস অখিলেশকে হারানোর চেষ্টা করেছে। না হলে অখিলেশ একাই জিততে পারতেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy