Advertisement
০৬ নভেম্বর ২০২৪

মহিলাদের জন্য এ বার অন্য শবরীমালার ডাক

এক শবরীমালা ঘিরে বিতর্ক বিস্তর। লোকসভা ভোটের আগে কেরলে হিন্দু ভাবাবেগের হাওয়া তুলতে আসরে নেমেছেন স্বয়ং অমিত শাহ। নেওয়া হয়েছে রথযাত্রার পরিকল্পনা। তারই মধ্যে মহিলা ভক্তদের জন্য পৃথক মন্দিরের প্রস্তাবে তৈরি হল নয়া চাঞ্চল্য!

শবরীমালা মন্দির চত্বর। ছবি- পিটিআই।

শবরীমালা মন্দির চত্বর। ছবি- পিটিআই।

সন্দীপন চক্রবর্তী
শেষ আপডেট: ০২ নভেম্বর ২০১৮ ০৩:১১
Share: Save:

এক শবরীমালা ঘিরে বিতর্ক বিস্তর। লোকসভা ভোটের আগে কেরলে হিন্দু ভাবাবেগের হাওয়া তুলতে আসরে নেমেছেন স্বয়ং অমিত শাহ। নেওয়া হয়েছে রথযাত্রার পরিকল্পনা। তারই মধ্যে মহিলা ভক্তদের জন্য পৃথক মন্দিরের প্রস্তাবে তৈরি হল নয়া চাঞ্চল্য!

প্রমীলা ভক্তদের কথা মাথায় রেখে শবরীমালার মূল মন্দিরের কাছেই রন্নি এলাকায় প্রভু আয়াপ্পার নতুন মন্দির গড়ে তোলার প্রস্তাব দিয়েছেন বিজেপির রাজ্যসভা সাংসদ সুরেশ গোপী। কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের কাছে চিঠি পাঠিয়ে তাঁর আর্জি, নতুন মন্দিরের জন্য জমির ব্যবস্থা করা হোক। তাতে বিতর্ক এবং সমস্যা, দুইয়েরই সমাধান হবে। কেরলের বাম সরকার অবশ্য এমন মন্দির নির্মাণের নকশায় ঢুকতে নারাজ। এমনকি, শবরীমালা মন্দিরের পরিচালক ত্রাবাঙ্কোর দেবস্বম বোর্ডও (টিডিবি) এই প্রস্তাবকে সরাসরি স্বাগত জানাতে তৈরি নয়!

শবরীমালায় প্রার্থনা করতে পুরুষ ও মহিলা ভক্তদের মধ্যে কোনও বিভাজন করা চলবে না বলে রায় দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। কিন্তু মহিলা ভক্তদের মন্দিরে প্রবেশ আটকাতে গত মাসেই প্রবল তাণ্ডব চলেছে। যার জেরে রাজ্য পুলিশ গ্রেফতার করেছে সাড়ে তিন হাজার ‘ভক্ত’কে। মহিলাদের জন্য শবরীমালার দরজা খুলে দেওয়ার রায় পর্যালোচনার আবেদন সর্বোচ্চ আদালতের বিবেচনাধীন। তার শুনানি হওয়ার কথা ১৩ নভেম্বর। এই বিতর্কের মাঝেই অভিনেতা তথা রাজনীতিক গোপীর প্রস্তাব, মহিলা ভক্তদের জন্য আলাদা একটা মন্দির গড়া হোক। তাঁর যুক্তি, ‘‘শবরীমালার রীতিনীতি, প্রথাকে যেমন সম্মান জানাতে হবে, তেমনই মহিলা ভক্তদের ভাবাবেগও মাথায় রাখা উচিত। তাঁরাও তো আয়াপ্পার কাছে প্রার্থনা করতে চান। তাই আলাদা মন্দির করলে সকলের জন্যই ভাল হয়।’’ সাংসদের আরও বক্তব্য, সরকারি তরফে জমির বন্দোবস্ত না হলে সাধারণ ভক্তদের কাছেই সাহায্য চাইতে হবে।

কেরলের দেবস্বম মন্ত্রী পি সুরেন্দ্রন অবশ্য এর মধ্যে সরকারি হস্তক্ষেপের কারণ দেখছেন না। তাঁর সাফ কথা, ‘‘সুপ্রিম কোর্টের রায় কার্যকর করার দায়িত্ব রাজ্য সরকারের। কিন্তু কেউ কোথাও আর কোনও মন্দির গড়বে কি না, তার মধ্যে সরকার কেন ঢুকতে যাবে?’’ আবার টিডিবি-র সভাপতি তথা প্রাক্তন বিধায়ক এ পদ্মকুমারের মতে, ‘‘শবরীমালার ঐতিহ্য, সংস্কার খুব গুরুত্বপূর্ণ এবং স্পর্শকাতর। সেখানে হঠাৎ করে কোনও কিছু করে ফেলা সম্ভব নয়।’’

টি়ডিবি কর্তৃপক্ষের যুক্তি, আয়াপ্পা ব্রহ্মচর্যে বিশ্বাসী দেবতা। সেই কারণেই তাঁর মন্দিরে ঋতুযোগ্য মহিলাদের প্রবেশাধিকার ছিল না। এখন মহিলারা যদি আলাদা মন্দিরে সেই আয়াপ্পার কাছেই প্রার্থনা করতে যান, তা হলে মূল সংস্কারে তো একই রকম বাধা থাকছে!

দল হিসেবে বিজেপি অবশ্য শবরামীলা বিতর্ক থেকে রাজনৈতিক ফায়দা তুলতেই তৎপর। মন্দির আবার খোলা থাকার কথা ৫ ও ৬ নভেম্বর। আর বিজেপি ৮ তারিখ থেকে ৬ দিনের রথযাত্রার ডাক দিয়েছে, যা হবে কাসারগো়ড় থেকে শবরীমালা পর্যন্ত। রথযাত্রায় এক দিন থাকতে পারেন শাহও। যা নিয়ে যথেষ্টই উদ্বেগে রাজ্যের বাম সরকার।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE