প্রতিবাদ: মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিককে সরানোর দাবিতে আইজলের রাস্তায় বিক্ষোভ। মঙ্গলবার। নিজস্ব চিত্র
রাজ্যের স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনগুলিকে মাথায় তোলাই কি তবে মিজোরামে কংগ্রেসের কাল হল? যৌথ মঞ্চের বাধায় আজ মুখ্যমন্ত্রী লালথানহাওলাও মনোনয়নপত্র জমা দিতে পারলেন না। মনোনয়ন জমা দিতে পারেননি কোনও দলই। ১০ নভেম্বরের মধ্যে মনোনয়ন জমা না পড়লে রাষ্ট্রপতি শাসনের দিকে যেতে পারে রাজ্য। সে ক্ষেত্রে বিজেপির পক্ষে কংগ্রেসের পালের হাওয়া কেড়ে সহজ হয়ে যাবে।
মিজোরামের মুখ্য নির্বাচনী অফিসার এস বি শশাঙ্ককের অভিযোগের ভিত্তিতে রাজ্যের স্বরাষ্ট্রসচিব লালনুনমাওইয়া চাউনগোকে সরায় নির্বাচন কমিশন। রিয়াং শরণার্থীদের নাম ভোটার তালিকায় তোলা নিয়েই দ্বন্দ্বের শুরু। ভূমিপুত্র চাউনগোকে সরানোয় ক্ষিপ্ত মিজোরামের সব সংগঠন যৌথমঞ্চ গড়ে ৫ নভেম্বরের মধ্যে শশাঙ্ককে রাজ্য ছাড়ার হুমকি দিয়েছিল। তারা রিয়াং শরাণার্থীদের ভোটাধিকারেরও বিপক্ষে।
বিজেপির আগ্রাসন রুখতে তথা শশাঙ্ককে রাজ্য ছাড়া করতে এই যৌথ মঞ্চকে সমর্থন জানান মুখ্যমন্ত্রী লালথানহাওলা এবং রাজ্য সরকার। শশাঙ্ককে সরাতে প্রধানমন্ত্রী ও কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে চিঠিও পাঠান তিনি। কিন্তু নির্বাচন কমিশন শশাঙ্ককে সরাতে নারাজ। চাপের মুখে সরতে নারাজ শশাঙ্কও। যৌথ মঞ্চ জানিয়েছে, তিনি ইস্তফা না দিলে রাজ্যে ভোট করতেই দেবে না তারা। কোনও প্রার্থীকে মনোনয়ন জমা দিতে দেওয়া হবে না।
আজ সেরচিপে মুখ্যমন্ত্রীকে মনোনয়ন জমা দিতে দেওয়া হয়নি। রাজভবন, শশাঙ্কের দফতরের সামনে চলছে অবস্থান বিক্ষোভ। বন্ধ স্কুল, দোকানপাট, এমনকী বহু অফিসও। আইজল ও মামিত-সহ পাঁচটি জেলা সদরে বেরোয় প্রতিবাদ মিছিল। মামিত জেলায় অফিস বন্ধ রেখে সরকারি কর্মীরাও মিছিল করেন। কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানদের তোলায় নিষেধাজ্ঞা জারি করে যৌথ মঞ্চ গাড়ি মালিকদের সতর্ক করেছে। আজ অসম থেকে কেন্দ্রীয় বাহিনী আনার জন্য যে ট্রাকগুলি রওনা হয় সেগুলিকে কোলাশিব ও কাওনপুই সীমানায় আটকে দেয় জনতা। ৭৬টি ট্রাক ফিরে যেতে বাধ্য হয়। কোলাশিব ডিসির দফতরে নিরাপত্তা বাহিনী এবং সমর্থকদের সংঘর্ষে অন্তত ১০ জন আহত হয়েছে। পরিস্থিতি সামলাতে নির্বাচন কমিশন তিন সদস্যের প্রতিনিধি দলকে রাজ্যে পাঠাচ্ছে।
কংগ্রেসের দাবি ছিল, শশাঙ্ক রাজ্যে অস্থিরতা ছড়িয়ে, কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করিয়ে বিজেপির পক্ষে ভোট করানোর সুযোগ খুঁজছেন। কিন্তু এখন পরিস্থিতি যে দিকে যাচ্ছে, তাতে মনোনয়নপত্র জমা না পড়লে রাজ্যে রাষ্ট্রপতি শাসন জারি হতে পারে। সে ক্ষেত্রে, বিজেপির মিজোরাম দখল অসম্ভব নয়। রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল বিশ্বজিৎ দেব বলেন, “মনোনয়ন জমা না পড়লে সাংবিধানিক সংকট দেখা দেবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy