দুই রাজপরিবারের মধ্যে যুদ্ধটা ফিরে এল রাজস্থানে ভোটের ময়দানে।
রাজস্থানের ঝালরাপাটন কেন্দ্রে মুখ্যমন্ত্রী বসুন্ধরা রাজের বিরুদ্ধে বাজপেয়ী মন্ত্রিসভার সদস্য যশোবন্ত সিংহের ছেলে মানবেন্দ্র সিংহকে দাঁড় করানোর কথা আজ ঘোষণা করল কংগ্রেস।
১৭৯০ সালে গ্বালিয়রের রাজা মহাদজী সিন্ধিয়া আক্রমণ করেন মারওয়াড় (বারমের যার অংশ)। সেই যুদ্ধে নিজেদের গড়েই হেরে যান রাজপুতরা। প্রায় সওয়া দু’শো বছর পরে ফের যুদ্ধ দুই রাজপরিবারের। তবে এ বারে ছবি কিছুটা ভিন্ন। গ্বালিয়র রাজপরিবারের কন্যা বসুন্ধরার দীর্ঘদিনের গড় ঝালরাপাটন কেন্দ্রে গিয়ে তাঁর বিরুদ্ধে যুদ্ধে নামছেন বারমেরের জশোল রাজপরিবারের ছেলে মানবেন্দ্র।
‘কমল কা ফুল, হামারি ভুল’ স্লোগান দিয়ে সদ্য কংগ্রেসে যোগ দিয়েছেন বিজেপির প্রাক্তন নেতা তথা বিধায়ক মানবেন্দ্র। তাঁর সঙ্গে বসুন্ধরার লড়াই শুধু রাজকীয় নয়, বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে অত্যন্ত কৌশলগত চাল বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞেরা।
মানবেন্দ্র এবং তাঁর বাবা (বর্তমানে অসুস্থ এবং শয্যাশায়ী) প্রাক্তন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী যশোবন্তের সঙ্গে বসুন্ধরার বিবাদ গত দেড় দশক ধরে সর্বজনবিদিত। গত লোকসভা নির্বাচনে বারমের থেকে দাঁড়াতে চেয়েছিলেন যশোবন্ত। বিজেপি সূত্রে খবর, বসুন্ধরার ইচ্ছেকে প্রাধান্য দিয়ে তাঁকে সেই আসন দেওয়া হয়নি। নির্দল প্রার্থী হিসেবে দাঁড়িয়ে বিজেপি প্রার্থীর কাছে হেরে যান যশোবন্ত। সংঘাত বাড়তে থাকে। যার জেরে অক্টোবর মাসে কংগ্রেস যোগ দেন মানবেন্দ্র। আজ তিনি বলেন, ‘‘আমি বলেছিলাম যে, বিধানসভা ভোটে লড়ব না। কিন্তু রাহুল গাঁধী আমাকে চেয়েছেন বসুন্ধরাজির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে। আমার উপর ভরসা রাখার জন্য আমি তাঁর কাছে কৃতজ্ঞ। এখন আর পিছনে তাকানোর কোনও অবকাশ নেই। আমার সমর্থকেরা এই লড়াইয়ের সংবাদে উত্তেজিত।’’ অন্য দিকে বসুন্ধরার কথায় কিছুটা তাচ্ছিল্য, ‘‘উনি টিকিট চেয়েছিলেন বলে কংগ্রেস দিয়েছে। ঝালরাপাটন থেকে দাঁড় করানোর মতো কেউ নেইও কংগ্রেসের কাছে। তাই মানবেন্দ্র সিংহকে দিয়ে দিয়েছে।’’
রাজনৈতিক শিবিরের মতে, রাজপুত ভোট ব্যাঙ্কে ভাঙন ধরিয়ে তার সুফল পাওয়ার জন্যই এই চাল দিয়েছে কংগ্রেস। মোট জনসংখ্যার ৭ শতাংশ হলেও রাজস্থানের রাজনৈতিক মানচিত্রে রাজপুতদের প্রভাব বিস্তর। বিশেষজ্ঞদের মতে, ২০০টি বিধানসভা আসনের মধ্যে অন্তত ৫০টিতে রাজপুতদের প্রত্যক্ষ প্রভাব রয়েছে। বিজেপির রাজপুত ভোটব্যাঙ্কের মধ্যে যশোবন্ত সিংহ পরিবারের প্রভাব এখনও যথেষ্ট। ‘স্বাভিমানের’ আওয়াজ তুলে বিজেপি ছাড়ার সময় মানবেন্দ্র রাজপুত আবেগ এবং আত্মসম্মানের বিষয়টিকে টেনেছেন। অনেকেই বলছেন, পাঁচ বছর ক্ষমতায় থাকার পরে বিভিন্ন ক্ষেত্রে কোণঠাসা (এমনকি নিজের দলেও) বসুন্ধরাকে আরও চাপে ফেলতেই এই তাস খেললেন রাহুল গাঁধী।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy