Advertisement
০২ নভেম্বর ২০২৪
National News

রাজীবের চুক্তির জন্যই অসমে এই সঙ্কট, অমিতের মন্তব্যে তুলকালাম রাজ্যসভায়

অমিত বলেন, ‘‘রাজীব গাঁধী যখন প্রধানমন্ত্রী ছিলেন, তখন অসম থেকে অবৈধ অনুপ্রবেশকারীদের বিতাড়িত করার লক্ষ্যেই অসম চুক্তি করেছিলেন। বরং পর পর দু’টি ইউপিএ সরকার যা করতে পারেনি, গত ৪ বছরে এনডিএ সরকার তা করতে পেরেছে।’’

রাজ্যসভায় অমিত শাহ।- ফাইল চিত্র।

রাজ্যসভায় অমিত শাহ।- ফাইল চিত্র।

সংবাদ সংস্থা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ৩১ জুলাই ২০১৮ ১৪:৫৩
Share: Save:

অসমের নাগরিকপঞ্জি নিয়ে যখন গত দু’দিন ধরে উত্তাল সংসদের দুই কক্ষ, তখন অগ্নিতে ঘৃতাহুতি হল রাজ্যসভায় বিজেপি সভাপতি অমিত শাহের মন্তব্যে।

অসমের নাগরিকপঞ্জি নিয়ে যে বিতর্কের সূত্রপাত হয়েছে, মঙ্গলবার দুপুরে রাজ্যসভায় দেওয়া তাঁর ভাষণে অমিত তার গোটা দায়টাই চাপিয়ে দেন কংগ্রেসের ঘাড়ে। অমিত বলেন, ‘‘রাজীব গাঁধী যখন প্রধানমন্ত্রী ছিলেন, তখন অসম থেকে অবৈধ অনুপ্রবেশকারীদের বিতাড়িত করার লক্ষ্যেই অসম চুক্তি করেছিলেন। বরং পর পর দু’টি ইউপিএ সরকার যা করতে পারেনি, গত ৪ বছরে এনডিএ সরকার তা করতে পেরেছে।’’

অমিত অবশ্য তাঁর বক্তব্য শেষ করতে পারেননি। বিরোধীদের তুমুল হইচইয়ে তাঁর গলা চাপা পড়ে যায়। রাজ্যসভার চেয়ারম্যান বেঙ্কাইয়া নাইডু এর পরেই সারা দিনের জন্য রাজ্যসভার অধিবেশন মুলতুবি ঘোষণা করে দেন। তবে অধিবেশন মুলতুবি ঘোষণা করার আগে অবশ্য বেঙ্কাইয়া বলেন, ‘‘এই স্পর্শকাতর ও গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি নিয়ে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংহ সরকারি বক্তব্য জানাবেন রাজ্যসভায়।’’ সেই আশ্বাসের পরেও বিরোধীদের থামানো যায়নি। বিরোধীদের হইচইয়ে সোমবারও মুলতুবি হয়ে গিয়েছিল রাজ্যসভার অধিবেশন।

বিরোধীদের তুমুল হইচইয়ে সংসদে তাঁর বক্তব্য শেষ করতে পারেননি বলে পরে সাংবাদিক সম্মেলন ডাকেন অমিত শাহ। সেখানে বিজেপি সভাপতি বলেন, ‘‘প্রাথমিক অনুসন্ধানের ভিত্তিতেই অসমের নাগরিকপঞ্জি থেকে ৪০ লক্ষ মানুষের নাম বাদ পড়েছে।’’ অমিতের অভিযোগ, এ ব্যাপারে বিরোধীরা তথ্য বিকৃত করে চলেছেন। বিজেপি সভাপতির কথায়, ‘‘কোনও ভারতীয় নাগরিকের নামই ওই নাগরিকপঞ্জি থেকে বাদ পড়েনি। যাঁরা ভারতীয় নাগরিকত্বের প্রমাণ দিতে পারেননি, শুধু তাঁদেরই নাম বাদ পড়েছে।’’ অমিত অবশ্য এও জানান, এই নাগরিকপঞ্জি চূড়ান্ত নয়। যাঁদের অাপত্তি, অসন্তোষ রয়েছে, তাঁরা তা লিখিত ভাবে জানাতে পারবেন। তার ওপর শুনানি হবে। আর সেই সবের ভিত্তিতে নাগরিকপঞ্জির সংশোধনও হবে।

আরও পড়ুন- খসড়া নাগরিকপঞ্জির ভিত্তিতে কোনও পদক্ষেপ করা যাবে না, জানাল সুপ্রিম কোর্ট

অসমের নাগরিকপঞ্জি থেকে ৪০ লক্ষ মানুষের নাম বাদ পড়ার ঘটনা নিয়ে মঙ্গলবারও উত্তাল হয়ে ওঠে সংসদের দুই কক্ষ। স্লোগান দিতে দিতে রাজ্যসভার চেয়ারম্যানের ‘ওয়েল’-এর কাছে পৌঁছে যান তৃণমূল-সহ বিরোধী সদস্যরা। বিরোধীদের তুমুল হইচইয়ে দুপুর পর্যন্ত মুলতুবি হয়ে যায় রাজ্যসভার অধিবেশন। পরে অধিবেশন শুরু হলেও বিজেপি সভাপতির মন্তব্য আর তার প্রেক্ষিতে বিরোধীদের তুমুল হইচইয়ে এ দিনের জন্য মুলতুবি হয়ে যায় রাজ্যসভার অধিবেশন।

আরও পড়ুন- শঙ্কা বুকে নিয়েই সুযোগ হাতড়াচ্ছেন অসমের ৪০ লক্ষ মানুষ​

আরও পড়ুন- ভারতীয় জনতার বন্ধু শিবসেনা, পার্টির নয়, বিজেপিকে তোপ উদ্ধবের​

নির্ধারিত সূচি বাতিল করে শুধু ওই নাগরিকপঞ্জি নিয়ে আলোচনার জন্য মঙ্গলবার লোকসভায় একটি নোটিস আনে কংগ্রেস ও তৃণমূল। কংগ্রেস এ ব্যাপারে একটি সর্বদলীয় বৈঠক ডেকেছে। কংগ্রেসের বক্তব্য, প্রতিবেশী রাষ্ট্র বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের সম্পর্কের ওপরেও প্রভাব ফেলবে ওই নাগরিকপঞ্জি।

এ দিন রাজ্যসভার অধিবেশন শুরু হতেই অসমের নাগরিকপঞ্জি নিয়ে আলোচনার দাবিতে সরব হন তৃণমূল সাংসদরা। গতকাল যাঁরা বিক্ষোভে সরব হয়েছিলেন, তাঁদের সঙ্গে যোগ দেন বিরোধীদের আরও অনেকে। বিরোধীদের হইচইয়ে কাজ পণ্ড হচ্ছে দেখে দুপুর পর্যন্ত সভার অধিবেশন মুলুতুবি ঘোষণা করেন রাজ্যসভার চেয়ারম্যান বেঙ্কাইয়া নাইডু।

রাজ্যসভায় তৃণমূলের সদস্য সুখেন্দুশেখর রায় বলেন, ‘‘৬ মাস আগে সরকারি তথ্যে প্রায় আড়াই লক্ষ মানুষকে সন্দেহজনক ভোটার বলে চিহ্নিত করা হয়েছিল। সরকারের তরফে বলা হচ্ছে, সুপ্রিম কোর্টের তদারকিতেই এই সব হচ্ছে। কিন্তু তা একেবারেই অসত্য। মানবাধিকারের কথাটাও আমাদের মাথায় রাখতে হবে।’’

কংগ্রেসের তরফে মল্লিকার্জুন খাড়গে বলেন, ‘‘এই নাগরিকপঞ্জির সমস্যাটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। গোটা বিষয়টিকে মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে দেখা উচিত। দেখতে হবে যাতে প্রকৃত ভারতীয় নাগরিকরা অবিচারের শিকার না হন।’’ সরকারের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে তাঁর দল কংগ্রেস আলোচনা করবে বলেও জানান খাড়গে।

সোমবার এক সাংবাদিক সম্মেলনে তৃণমূলের তরফে অভিযোগ করা হয়, ভোটের কথা মাথায় রেখেই মূলত একটি বিশেষ সম্প্রদায়ের মানুষের প্রতি অবিচার করা হয়েছে।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE