বাজেট পেশের আগে। মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সোনোয়াল (বাঁ দিকে) ও অর্থমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মা। মঙ্গলবার অসম বিধানসভায়। —নিজস্ব চিত্র
প্রত্যাশার চাপ ছিল আকাশছোঁয়া। পরিবর্তনের স্বপ্ন দেখিয়ে, অসমে কংগ্রেসের দেড় দশকের শাসনকাল শেষ করে ক্ষমতা দখল করেছিল বিজেপি-অগপ-বিপিএফ জোট। সে দিকে তাকিয়ে নতুন সরকারের প্রথম বাজেটে পরিবর্তনের প্রতিশ্রুতি পূরণ করাই ছিল অর্থমন্ত্রী হিমন্তবিশ্ব শর্মা ও মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সোনোয়ালের বড় চ্যালেঞ্জ।
আজ ২০১৬-১৭ সালের জন্য ২ হাজার ৮৮০ কোটি ৯১ লক্ষ টাকার ঘাটতি বাজেট পেশ করল সরকার। ঘোষণা করল— ৩০ হাজার কোটি টাকা খরচে রাজ্যের সব গ্রামের উন্নয়নে শুরু হবে ‘মুখ্যমন্ত্রী সমগ্র গ্রামোন্নয়ন যোজনা’। শিলচরে তৈরি হবে সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতাল। চারটি নতুন মেডিক্যাল কলেজ তৈরি হবে রাজ্যে। পাশাপাশি রাজস্ব জোগাড় করতে শুরু হবে ‘রিস্টার্ট অসম’ প্রকল্প।
বাজেট পেশের পর মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সোনোয়াল বলেন, ‘‘স্বচ্ছ, জনদরদী সরকার গড়াই আমাদের লক্ষ্য। বাজেট ছিল তারই প্রতিফলন। ঋণগ্রস্ত রাজ্যকে দ্রুত নিজের পায়ে দাঁড় করানো এবং উন্নয়নের দিকে নিয়ে যাওয়াই আমাদের উদ্দেশ্য।’’
আগেই হিমন্ত ইঙ্গিত দিয়েছিলেন, বাজেট হবে জনমুখী। সম্প্রতি ১২৩টি নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যে মূল্যবৃদ্ধি কর বাড়ানো নিয়ে সমালোচনার মুখে পড়েছিল রাজ্য সরকার। কিন্তু অর্থমন্ত্রী আশ্বাস দিয়েছিলেন, জিনিসের দাম তেমন বাড়বে না। কথাও রাখলেন তিনি। বাজেটের আগে আম-আদমির মতামত জানতে চেয়েছিলেন হিমন্ত। পেয়েছিলেন ৮০০টি চিঠি। এ দিন তিনি জানান, তার মধ্যে অনেক পরামর্শ বাজেটে ঢোকানো হয়েছে।
এ দিন বৃহদারণ্যক উপনিষদের বাণী দিয়ে বাজেট বক্তৃতা শুরু করেন হিমন্ত। মুখ্যমন্ত্রীর কর্মনিষ্ঠা বন্দনায় সাহায্য নেন রবীন্দ্রনাথের। কখনও ছিল অটলবিহারী বাজপেয়ীর কবিতা। বাজেট বক্তৃতা জুড়ে ছিল অসম বদলের কথা এবং জনমুখী নীতির কথা।
বিরোধী শিবির কিন্তু বাজেট নিয়ে সর্বা সরকারের সমালোচনায় মুখর হয়েছে। বিরোধী দলনেতা দেবব্রত শইকিয়া ও উপ-দলনেতা রকিবুল হুসেন বলেন— ‘‘পরিবর্তনের আশায় থাকা অসমবাসীকে হতাশ করল বাজেট। কয়েকটি প্রকল্প নাম বদলে চালানো হয়েছে। চরের উন্নতি নিয়ে বাজেটে প্রকল্প নেই। এই সরকার কর চাপিয়ে পরিকল্পিত ভাবে মূল্যবৃদ্ধির চেষ্টা করছে।’’ কংগ্রেস বিধায়ক কমলাক্ষ দে পুরকায়স্থ বলেছেন, ‘‘পরিবর্তনের আশায় থাকা বরাক হতাশ হল। বরাককে ১ হাজার কোটি টাকার প্যাকেজ দিত কংগ্রেস। আরও বেশি টাকার প্রতিশ্রুতি দিয়ে ক্ষমতায় এসেছিল বিজেপি। কিন্তু বাস্তবে তারা কিছুই দিল না।’’ ইউডিএফ-ও এই বাজেটকে সংখ্যালঘু বিরোধী বলে চিহ্নিত করেছে।
বিধানসভার বাজেট বক্তৃতায় অর্থমন্ত্রী জানান, মোট ৭৮ হাজার ২৫৩ কোটি টাকার বাজেটের মধ্যে ৩৮ শতাংশ পরিকল্পিত খরচ। পরিকল্পনা বহির্ভূত খরচ ধরা হয়েছে ৬২ শতাংশ। হিমন্ত আগেই জানিয়েছিলেন, পরিকল্পনা বহির্ভূত ব্যয় ধীরে তুলে দেওয়া হবে। এ দিন তিনি জানান, ২০১৮ সাল থেকে উঠিয়ে দেওয়া হবে ওই খাতের বরাদ্দ। তিনি জানান, বর্তমানে রাজ্যে অভ্যন্তরীণ ঋণ রয়েছে ১০ হাজার ৪২৩ কোটি টাকা। মোট বাজেট বরাদ্দের ২০ শতাংশ শিক্ষা, ক্রীড়া ও সংস্কৃতি খাতের জন্য বরাদ্দ রাখা হয়েছে। ১০ শতাংশ রাখা হয়েছে কৃষি, গ্রামোন্নয়নে। স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণে বরাদ্দ হয়েছে ৫ শতাংশ।
অর্থমন্ত্রী জানান, বর্তমান নীতি ও উন্নয়ন হারের নিরিখে কৃষি থেকে আয় দ্বিগুণ হতে ৮০ বছর লাগার কথা। কিন্তু গ্রাম ও কৃষির উন্নয়নে ‘মুখ্যমন্ত্রী সমগ্র গ্রামোন্নয়ন যোজনা’ শুরু করা হচ্ছে। যার লক্ষ্য হবে জৈব কৃষি, মৎস্য চাষ, পশুপালন, জমির সঠিক ব্যবহার, সড়ক ও ব্রডব্যান্ড পরিকাঠামোর উন্নয়ন। পাশাপাশি বাজারের সঙ্গে যোগাযোগ, ই-গ্রাম প্রকল্প, যোগ এবং ক্রীড়াকে একত্রে মিলিয়ে ২০২১-২২ অর্থবর্ষের মধ্যে গ্রামের রোজগার দ্বিগুণ করা। ওই প্রকল্পে রাজ্যের ২৫ হাজার ৪২৫টি গ্রামের প্রতিটির জন্য খরচ করা হবে এক কোটি ২০ লক্ষ টাকা। পাঁচ বছরের প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে ৩০ হাজার কোটি টাকা।
কোথা থেকে আসবে এই টাকা?
হিমন্ত জানান, ৯০ শতাংশ আসবে সরকারের রাজস্ব থেকে। ১০ শতাংশ মানুষের কাছ থেকে। কেন্দ্রের কাছ থেকেও প্রকল্পভিত্তিক সাহায্য চাওয়া হবে। বিভিন্ন কেন্দ্রীয় প্রকল্পের সঙ্গে রাজ্য গ্রামোন্নয়ন প্রকল্পের সুচারু মেলবন্ধন করা হবে।
মন্ত্রী বলেন, ‘‘সরকারে এসেই মুখ্যমন্ত্রী স্পষ্ট করে দেন, আমরা দুর্নীতিকে প্রশ্রয় দেব না। সেই পথে হেঁটে দুর্নীতিমুক্ত রাজ্য গড়বে অর্থ দফতর। আমাদের লক্ষ্য হবে, নিজেও টাকা মারব না, অন্যকে মারতেও দেব না।’’ সেই লক্ষ্যেই রাজ্য বাজেটে ঘোষণা করা হয়, কোনও ব্যক্তি যদি নির্দষ্ট তথ্যপ্রমাণ, মোবাইল বা অন্য যন্ত্রের রেকর্ডিং থেকে ঘুষ নেওয়া বা ঘুষ চাওয়া সরকারি কর্মীকে ধরিয়ে দিতে পারেন, তবে তিনি ২৫ হাজার টাকা পুরস্কার পাবেন। কর ফাঁকি রুখতে গড়া হবে ‘ট্যাক্স সার্ভেল্যান্স উইং’। কর ফাঁকি দেওয়া পরিবহণকারী বা ডিলারদের ৭ থেকে ১৪ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ডের প্রস্তাবও বাজেটে আনা হয়। অর্থমন্ত্রী জানান, সব সরকারি দফতরে ১০ লক্ষ বা তার বেশি টাকার জিনিস কেনা হলে তা ‘ই-প্রকিওরমেন্ট’ পদ্ধতিতে কেনা হবে। রাজ্যে আরও ২৫টি উপ-কোষাগার তৈরি হবে। সব কোষাগার ও উপ কোষাগারে বসানো হবে সিসিটিভি ক্যামেরা। বিধানসভায় আনা হবে ‘অসম পাবলিক এক্সপেনডিচার অ্যাক্ট’। রোড পারমিট, ডেলিভারি নোট অনলাইনে দেওয়া হবে। নেওয়া হবে নতুন আবগারি নীতি।
বাজেটে জানানো হয়, আইন-শৃঙ্খলা ব্যবস্থার উন্নয়নে এই অর্থবর্ষেই নতুন ৪ হাজার পুলিশকর্মী নিয়োগ করা হবে। শিলচর, গুয়াহাটি-সহ রাজ্যের ৯৯টি শহরে বসবে ট্রাফিক সিগন্যাল ব্যবস্থা। ৬৩টি থানায় তৈরি হবে মহিলা সেল। সব কারাগারে বন্দিদের শেখানো হবে যোগব্যয়াম। তা ছাড়া অসম আন্দোলনে শহিদদের স্মৃতিতে তৈরি হবে উদ্যান, সব শহিদের পরিবার পাবে ৫ লক্ষ টাকা করে। মন্ত্রী জানান, নাগরিকপঞ্জি নবীকরণে রাজ্য সরকার আরও ২৪৯ কোটি ৩২ লক্ষ টাকা দেবে।
হিমন্ত জানিয়ে দেন, আগে এইচএসএলসি পরীক্ষায় প্রথম বিভাগে পাশ করলেই ‘আনন্দরাম বরুয়া পুরস্কার’ মিলত, এবার থেকে স্টার পেলে তবেই ওই পুরস্কার মিলবে। এক লক্ষের কম বার্ষিকআয় থাকা পরিবারের ছেলেমেয়েদের একাদশ শ্রেণি থেকে ভর্তির ফি বা টিউশন ফি লাগবে না। বরপেটা, বিহপুরিয়া, হোজাইয়ের তিনটি কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে উন্নীত করা হবে। করিমগঞ্জ, গোলাঘাট ও ধেমাজি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে পঠনপাঠন পুরোদমে শুরু করা হবে। গৌহাটি বিশ্ববিদ্যালয়ে গড়া হবে ‘সাউথ এশিয়ান স্টাডি সেন্টার’। তিন বছরে শ্রীমন্ত শঙ্করদেব বিশ্ববিদ্যালয় গড়তে ১০ কোটি টাকা দেওয়া হবে। দু’দফায় চাকরি পাবেন ১৭ হাজার টেট শিক্ষক। প্রতিবন্ধী ছাত্রছাত্রীদের মাসে ৩ হাজার টাকার বৃত্তি দেওয়ার প্রস্তাবও রয়েছে বাজেটে।
অর্থমন্ত্রী জানান, গুয়াহাটি মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ২০০ শয্যার ক্যানসার চিকিৎসা কেন্দ্র তৈরি করার পাশাপাশি শিলচর, তেজপুর, যোরহাট, বরপেটা মেডিক্যাল কলেজে ক্যানসার চিকিৎসা শাখা তৈরি করা হবে। গুয়াহাটি মেডিক্যাল কলেজের উন্নীতকরণে করা হবে আরও বহু পদক্ষেপ। নতুন মেডিক্যাল কলেজ হবে নগাঁও, ধুবুরি, উত্তর লখিমপুর ও ডিফুতে। সরকারি চিকিৎসকদের অবসরের বয়স বাড়িয়ে ৬৫ করা হল। রহায় তৈরি হবে ‘অল ইন্ডিয়া ইনস্টিটিউট অফ আয়ুর্বেদ’। শদিয়া, মাজুলি, গুয়াহাটি, ধুবুরি, দক্ষিণ শালমারা চিকিৎসা পরিকাঠামোযুক্ত ‘মৃত্যুঞ্জয় নৌকা অ্যাম্বুলেন্স পরিষেবা’ চালু করা হবে। কাছাড়ের হিন্দুস্তান পেপার মিলকে তিন বছর বাঁশ কেনার জন্য কোনও কর দিতে হবে না। শুয়ালকুচির রেশম শিল্প পুনরুজ্জীবনে ব্যয় হবে ৫০ লক্ষ টাকা। শিলচর, গুয়াহাটি-সহ বিভিন্ন জেলায় তৈরি হবে কর্মরত মহিলাদের আবাস। শিলচর, গুয়াহাটি-সহ ১০টি শহরে ৩০ কোটি টাকা ব্যয়ে তৈরি হবে ১০টি ড্রাইভিং স্কুল। সব বন্ধ সিনেমা হল খুলতে উদ্যোগ নেবে সরকার। প্রকল্পের নাম দেওয়া হয়েছে ভূপেন হাজরিকার নামে। সব সত্রকে উন্নয়নের জন্য দেওয়া হবে ৫০ লক্ষ টাকা।
হিমন্ত ঘোষণা করেছেন, শিলচর জেলা গ্রন্থাগার প্রেক্ষাগৃহ উন্নত করা হবে। শিলচর-সহ ৬টি শহরে তৈরি হবে তারাঘর। শিলচর-সহ ৯টি শহরে প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার কাজ রূপায়ণ করা হবে। আইনশিক্ষার জন্য গুয়াহাটিতে তৈরি হবে জাতীয় আইন বিশ্ববিদ্যালয় ও জুডিসিয়াল অকাদেমি।
হিমন্ত জানান, রাজ্য সরকারি কর্মীদের সঞ্চয় বাড়াতে বেসিক বেতনের ৬ শতাংশ কেটে নিয়ে তার উপরে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক নির্ধারিত হারে সুদ দেওয়া হবে। স্থানীয় মদ উৎপাদন ও বিপননে উৎসাহ দেওয়া হবে। দূষণ সৃষ্টিকারী শিল্পে চাপানো হবে অতিরিক্ত সেস। টেন্ডারে বাধ্যতামূলক হচ্ছে ১০০ টাকার স্ট্যাম্প পেপার। রাজ্যের সড়ক তৈরি ও মেরামতির জন্য পূর্ত দফতরকে ৬০০ কোটি টাকা দেওয়া হচ্ছে। আগামী তিন বছরে সড়ক মেরামতিতে দেওয়া হবে ২ হাজার কোটি টাকা। ছোট চা চাষীদের উৎসাহ দিতে বিঘাপ্রতি তিন হাজার টাকার ভাতা দেওয়া হবে। বিনিয়োগ টানতে গুয়াহাটিতে তৈরি হবে বিশ্বমানের গ্লোবাল বিজনেস সেন্টার।
উত্তর-পূর্ব বাণিজ্য সংগঠন ফাইনারের মতে এই বাজেট বিকাশমুখী। ব্যবসায়ী সংগঠনের প্রায় সব দাবি সরকার মেনে নিয়েছে। কর ব্যবস্থাকে অনেক যুক্তিসঙ্গত করে ঢেলে সাজানো হয়েছে। এক খিড়কি নীতি ও ই-গভর্নেন্সের মতো নীতি স্বচ্ছ লেনদেন ও ব্যবসায় সাহায্য করবে। নিখল অসম স্বর্ণশিল্পী সমিতি জানায়, স্থানীয় স্বর্ণশিল্পীদের স্বার্থরক্ষায় তাঁদের প্রস্তাবগুলি সরকার মেনে নেওয়ায় তাঁরা খুশি।আয় থাকা পরিবারের ছেলেমেয়েদের একাদশ শ্রেণি থেকে ভর্তির ফি বা টিউশন ফি লাগবে না। বরপেটা, বিহপুরিয়া, হোজাইয়ের তিনটি কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে উন্নীত করা হবে। করিমগঞ্জ, গোলাঘাট ও ধেমাজি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে পঠনপাঠন পুরোদমে শুরু করা হবে। গৌহাটি বিশ্ববিদ্যালয়ে গড়া হবে ‘সাউথ এশিয়ান স্টাডি সেন্টার’। তিন বছরে শ্রীমন্ত শঙ্করদেব বিশ্ববিদ্যালয় গড়তে ১০ কোটি টাকা দেওয়া হবে। দু’দফায় চাকরি পাবেন ১৭ হাজার টেট শিক্ষক। প্রতিবন্ধী ছাত্রছাত্রীদের মাসে ৩ হাজার টাকার বৃত্তি দেওয়ার প্রস্তাবও রয়েছে বাজেটে।
অর্থমন্ত্রী জানান, গুয়াহাটি মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ২০০ শয্যার ক্যানসার চিকিৎসা কেন্দ্র তৈরি করার পাশাপাশি শিলচর, তেজপুর, যোরহাট, বরপেটা মেডিক্যাল কলেজে ক্যানসার চিকিৎসা শাখা তৈরি করা হবে। গুয়াহাটি মেডিক্যাল কলেজের উন্নীতকরণে করা হবে আরও বহু পদক্ষেপ। নতুন মেডিক্যাল কলেজ হবে নগাঁও, ধুবুরি, উত্তর লখিমপুর ও ডিফুতে। সরকারি চিকিৎসকদের অবসরের বয়স বাড়িয়ে ৬৫ করা হল। রহায় তৈরি হবে ‘অল ইন্ডিয়া ইনস্টিটিউট অফ আয়ুর্বেদ’। শদিয়া, মাজুলি, গুয়াহাটি, ধুবুরি, দক্ষিণ শালমারা চিকিৎসা পরিকাঠামোযুক্ত ‘মৃত্যুঞ্জয় নৌকা অ্যাম্বুলেন্স পরিষেবা’ চালু করা হবে। কাছাড়ের হিন্দুস্তান পেপার মিলকে তিন বছর বাঁশ কেনার জন্য কোনও কর দিতে হবে না। শুয়ালকুচির রেশম শিল্প পুনরুজ্জীবনে ব্যয় হবে ৫০ লক্ষ টাকা। শিলচর, গুয়াহাটি-সহ বিভিন্ন জেলায় তৈরি হবে কর্মরত মহিলাদের আবাস। শিলচর, গুয়াহাটি-সহ ১০টি শহরে ৩০ কোটি টাকা ব্যয়ে তৈরি হবে ১০টি ড্রাইভিং স্কুল। সব বন্ধ সিনেমা হল খুলতে উদ্যোগ নেবে সরকার। প্রকল্পের নাম দেওয়া হয়েছে ভূপেন হাজরিকার নামে। সব সত্রকে উন্নয়নের জন্য দেওয়া হবে ৫০ লক্ষ টাকা।
হিমন্ত ঘোষণা করেছেন, শিলচর জেলা গ্রন্থাগার প্রেক্ষাগৃহ উন্নত করা হবে। শিলচর-সহ ৬টি শহরে তৈরি হবে তারাঘর। শিলচর-সহ ৯টি শহরে প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার কাজ রূপায়ণ করা হবে। আইনশিক্ষার জন্য গুয়াহাটিতে তৈরি হবে জাতীয় আইন বিশ্ববিদ্যালয় ও জুডিসিয়াল অকাদেমি।
হিমন্ত জানান, রাজ্য সরকারি কর্মীদের সঞ্চয় বাড়াতে বেসিক বেতনের ৬ শতাংশ কেটে নিয়ে তার উপরে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক নির্ধারিত হারে সুদ দেওয়া হবে। স্থানীয় মদ উৎপাদন ও বিপননে উৎসাহ দেওয়া হবে। দূষণ সৃষ্টিকারী শিল্পে চাপানো হবে অতিরিক্ত সেস। টেন্ডারে বাধ্যতামূলক হচ্ছে ১০০ টাকার স্ট্যাম্প পেপার। রাজ্যের সড়ক তৈরি ও মেরামতির জন্য পূর্ত দফতরকে ৬০০ কোটি টাকা দেওয়া হচ্ছে। আগামী তিন বছরে সড়ক মেরামতিতে দেওয়া হবে ২ হাজার কোটি টাকা। ছোট চা চাষীদের উৎসাহ দিতে বিঘাপ্রতি তিন হাজার টাকার ভাতা দেওয়া হবে। বিনিয়োগ টানতে গুয়াহাটিতে তৈরি হবে বিশ্বমানের গ্লোবাল বিজনেস সেন্টার।
উত্তর-পূর্ব বাণিজ্য সংগঠন ফাইনারের মতে এই বাজেট বিকাশমুখী। ব্যবসায়ী সংগঠনের প্রায় সব দাবি সরকার মেনে নিয়েছে। কর ব্যবস্থাকে অনেক যুক্তিসঙ্গত করে ঢেলে সাজানো হয়েছে। এক খিড়কি নীতি ও ই-গভর্নেন্সের মতো নীতি স্বচ্ছ লেনদেন ও ব্যবসায় সাহায্য করবে। নিখল অসম স্বর্ণশিল্পী সমিতি জানায়, স্থানীয় স্বর্ণশিল্পীদের স্বার্থরক্ষায় তাঁদের প্রস্তাবগুলি সরকার মেনে নেওয়ায় তাঁরা খুশি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy